بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব ,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا
مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ،
حَدَّثَنِي نَافِعٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
قَالَ " اجْعَلُوا آخِرَ صَلاَتِكُمْ بِاللَّيْلِ وِتْرًا ".
‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘উমার (রাযি.)
হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ বিতরকে তোমাদের রাতের শেষ সালাত করবে। (বুখারী ৯৯৮.মুসলিম ৬/২০, হাঃ ৭৫১ আহমাদ ৪৭১০, ৫৭৯৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৯৪৪)
حَدَّثَنَا
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، قَالَ
حَدَّثَنِي مُسْلِمٌ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُلَّ اللَّيْلِ
أَوْتَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
‘আয়িশাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
রাতের সকল অংশে (অর্থাৎ বিভিন্ন রাতে বিভিন্ন সময়ে) বিতর আদায় করতেন আর (জীবনের) শেষ
দিকে সাহরির সময় তিনি বিতর আদায় করতেন।
(বুখারী ৯৯৬,মুসলিম ৬/১৭, হাঃ
৭৪৫ আহমাদ ২৪২৪৩, ২৪৮১৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৯৪২)
বিতির নামাজের শেষ ওয়াক্ত সুবহে
সাদেকের পূর্ব পর্যন্ত থাকে। সুতরাং কোন ব্যক্তি
যদি সুবহে সাদেকের ঠিক পূর্ব মহূর্তে বেতের নামাজ পড়েই ফজরের প্রথম ওয়াক্তেই ফজরের
নামাজ পড়ে নেই, তাহলে তার নামাজ হয়ে যাবে।
তবে হানাফী মাযহাবে ফজরের নামাজ বিলম্ব করে পড়াই শ্রেয়। সুতরাং ফজরের ওয়াক্তে বিতির
আদায় করলে তা আদায় বলে গন্য হবে না বরং তা ক্বাযা হিসেবেই বিবেচিত হবে।
* তাকবীর হাত উঠানোকে রাফে ইয়াদাইন বলে । নামাযের
তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া বাকি কিছু তাকবীরের মধ্যে রাফে ইয়াদাইন করা, না করা উভয়টিই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো রাফে ইয়াদাইন করেছেন, কখনো করেননি। সাহাবা, তাবেয়ীন ও পরবর্তীদের মধ্যে উভয় পদ্ধতিরই অনুসারী
ছিলেন। এরই সুত্র ধরে শাফেয়ী,
হাম্বলী
মাযহাবে রাফে ইয়াদাইনের পদ্ধতি এসেছে। অপরদিকে হানাফী, মালেকী মাযহাবে রাফে ইয়াদাইন না করার মতটি গ্রহণ
করা হয়েছে। স্ব স্ব স্থানে উভয় মতই শরীয়ত স্বীকৃত। কেননা দুটোরই উৎস সুন্নাহ। তবে
বিভিন্ন আলামতের ভিত্তিতে ইজতিহাদের আলোকে কোনো ফকীহ কোনো একটিকে উত্তম ও অগ্রগণ্য
মনে করেন। আর অন্যটিকে মনে করেন বৈধ ও অনুত্তম। আবার অন্য ফকীহ এর বিপরীত মত পোষণ করেন।
চার মাজহাবের ক্ষেত্রে এই পার্থক্যটুকু শুধু নফল নিয়ে । অর্থ্যাৎ চার মাজহাবই এ বিষয়ে
একমত যে , রফে ইয়াদাইন করা হোক বা না
হোক এতে নামাজের কোনো ক্ষতি হবে না । যেহেতু এটা নফল ।আর আপনি যেহেতু একজন হানাফী বিধায়
আমরা পরামর্শ দিব রফয়ে ইয়াদাঈন না করাই আপনার জন্য শ্রেয়।
কারণ, ফিক্বহে হানাফী মতে তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া বাকি
সময় হাত উঠানো সুন্নাত নয়।একাকী নামাজে হোক বা জামাতের নামাজে হোক ।এ বক্তব্যটি সহীহ
হাদীস এবং সাহাবাদের ফাতওয়া এবং বিজ্ঞ ব্যক্তিদের আমলের সূত্র পরম্পরায় আমাদের পর্যন্ত
পৌঁছেছে, তাই এটি আমাদের নিকট উত্তম।
সেই সাথে নামাযে অতিরিক্ত নড়াচড়া উত্তম নয় হিসেবেও আমরা তাহরীমা ছাড়া অন্য হাত
উঠানোকে সুন্নাত মনে করি না। নিম্নে তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া অন্য সময়ে হাত উঠানো বর্ণিত
নয় মর্মে দলির উপস্থাপন করা হল।
عَنْ
عَلْقَمَةَ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ أَلاَ أُصَلِّى بِكُمْ
صَلاَةَ رَسُولِ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ فَصَلَّى فَلَمْ يَرْفَعْ
يَدَيْهِ إِلاَّ مَرَّة ً( سنن ابى داود، كتاب الصلاة، باب مَنْ لَمْ يَذْكُرِ
الرَّفْعَ عِنْدَ الرُّكُوعِ، رقم الحديث-748
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ
রাঃ বলেন আমি কি তোমাদের কে হুজুর সাঃ এর নামাজ সম্পর্কে অবগতি দেব না? এ কথা বলে তিনি নামাজ পড়ে দেখালেন এবং নামাজে
তাকবীরে তাহরীমার সময় একবার রাফয়ে ইয়াদাইন করলেন। নামাজে আর কোথাও তিনি রফঈ ইয়াদিন
করলেন না। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৭৪৮, সুনানে
তিরমিযী, হাদীস নং-২৫৭, সুনানে দারেমী, হাদীস
নং-১৩০৪, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৬৪৫, সুনানে
বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-২৩৬৩, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস
নং-৩৬৮১}
عَنِ
الْبَرَاءِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ إِذَا افْتَتَحَ
الصَّلاَةَ رَفَعَ يَدَيْهِ إِلَى قَرِيبٍ مِنْ أُذُنَيْهِ ثُمَّ لاَ يَعُودُ سنن ابى داود، كتاب الصلاة، باب مَنْ لَمْ
يَذْكُرِ الرَّفْعَ عِنْدَ الرُّكُوعِ، رقم الحديث-750)
হযরত বারা ইবনে আযিব (রা) বলেন-
রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ) যখন নামাজ আরম্ভ করতেন তখন তার হস্তদ্বয়
কর্ণদ্বয় পর্যন্ত উত্তোলন করতেন । অতঃপর আর তা করতেন না । [ সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৭৫০, মুসনাদে
আবী ইয়ালা, হাদীস নং-১৬৮৯, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৪৫৫ ]
عن ابن
عباس قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ترفع الايدى فى سبعة مواطن، افتتاح الصلاة،
واستقبال البيت و الصفا والمروة والموقفين وعند الحجر، (مصنف ابن ابى شيبة، رقم
الحديث-2465)
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে
বর্ণিত। রাসূল সাঃ বলেছেন-সাতটি জায়গায় হাত তুলতে হবে, ১-নামাযের শুরুতে। ২-কাবা শরীফের সামনে আসলে।
৩-সাফা পাহাড়ে উঠলে। ৪-মারওয়া পাহাড়ে উঠলে। ৫-আরাফায়। ৬-মুযাদালিফায়। ৭-হাজরে
আসওয়াদের সামনে। {মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৪৬৫, আল
মু’জামুল কাবীর, হাদীস নং-১২০৭২, সুনানে বায়হাকী-৫/৭২-৭৩}
عَنْ
جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه
وسلم- فَقَالَ « مَا لِى أَرَاكُمْ رَافِعِى أَيْدِيكُمْ كَأَنَّهَا أَذْنَابُ
خَيْلٍ شُمْسٍ اسْكُنُوا فِى الصَّلاَةِ (صحيح مسلم، كتاب الصلاة، باب الأمر بالسكون فى الصلاة والنهى عن الإشارة
باليد، رقم الحديث-996)
হজরত জাবির ইবনে সামুরাহ রাঃ
বলেন ,নামাজের মুহুর্তে হুজুর সাঃ
আমাদের নিকট আসলেন এবং বললেন,
তোমাদের
কি হল যে তোমাদের কে দেখতে পাচ্ছি তোমরা রাফয়ে ইয়াদাইন করছ বেয়াড়া ঘোড়ার লেজের
ন্যায়? নামাজের মধ্যে শান্ত ধীর হও।
{সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৯৯৬, সুনানে
আবু দাউদ, হাদীস নং-১০০২, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-১৮৭৮, মুসনাদে
আবী আওয়ানা, হাদীস নং-১৫৫২, মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৭৪৮০, মুসনাদে
আহমাদ, হাদীস নং-২০৯৯৮, মুসনাদুর রাবী, হাদীস
নং-৯১২, মুসনাদে তায়ালিসী, হাদীস নং-৭৮৬, তাহাবী
শরীফ, হাদীস নং-২৪২৮}
এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ স. স্থিরতার
সঙ্গে নামায পড়ার আদেশ দিয়েছেন। আর হাদীসের বক্তব্য অনুযায়ীই যেহেতু রফইয়ে ঈয়াদিন
স্থিরতা পরিপন্থী তাই আমাদের কর্তব্য হল, নবী
সাঃ-এর নির্দেশমতো স্থিরতার সঙ্গে নামায পড়া।
قال
أخبرني سالم بن عبد الله عن أبيه قال : رأيت رسول الله صلى الله عليه و سلم إذا
أفتتح الصلاة رفع يديه حذو منكبيه وإذا أراد أن يركع وبعد ما يرفع رأسه من الركوع
فلا يرفع ولا بين السجدتين (مسند الحميدى،
أحاديث عبد الله بن عمر بن الخطاب رضي الله عنه، رقم الحديث-614)
অনুবাদ-হযরত সালেম বিন আব্দুল্লাহ
তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে,
তিনি
বলেন-আমি রাসূল সাঃ কে দেখেখি,
তিনি
যখন নামায শুরু করতেন তখন কাঁধ বরাবর হাত উঠাতেন। আর যখন রুকু করতে চাইতেন এবং রুকু
থেকে উঠতেন, তখন হাত উঠাতেন না। দুই সেজদার
মাঝেও না। {মুসনাদুল হুমায়দী, হাদীস নং-৬১৪}
আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট
করুন: https://www.ifatwa.info/253