আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
324 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (16 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম, আমার খুব কাছের এক আত্মীয়ের মেয়ে (বয়সঃ ২০ বছর) পারিবারিক কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও লুকিয়ে  গত ৩/৪ মাস যাবত ফেইসবুকে একটা ছেলের সাথে প্রেম করছে। তবে, তাদের নিজেদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সরাসরি কোন সাক্ষাত হয় নি। তার অভিভাবক কঠোর ধর্মীয় বিধিনিষেধ মেনে চলার চেষ্টা করেন। তাদের প্রেমের বিষয়টি জানাজানি হলে ছেলেমেয়ে উভয়ে পারিবারিকভাবে বিয়ে করতে চায়। ছেলের অভিভাবক এতে সম্মতি দিয়েছে। মেয়ের অভিভাবকের ইচ্ছে একটা দ্বীনদার ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে দিবে, ইনশাআল্লাহ। উক্ত ছেলে নিজেকে নানভাবে দ্বীনদার ও ধার্মিক বুঝানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু যে ছেলে হারাম সম্পর্ক বা প্রেম করতে পারে সে কতটুকুইবা দ্বীনদার, তা ভেবে মেয়ের অভিভাবক এগুতে চাচ্ছেনা। প্রেমের মাধ্যমে বিয়ে দিলে হারাম সম্পর্ক কে প্রমোটকারী ও সহায়তাকারী হিসেবে গন্য হওয়া লাগতে পারে ভেবেও মেয়ের অভিভাবক এতে রাজী হতে চাচ্ছে না। ফলে, মেয়ে নানা ধরনের রিয়েকশন দেখাচ্ছে। মেয়ের অভিভাবক এটাও ভাবছে যে, যদি তারা এতে সম্মত না হয়, ফলে ওরা লুকিয়ে প্রেম করতে থাকলে তো সবাই গুনাহগার হতে হবে। বা ওরা পালিয়ে বিয়েও করে ফেলতে পারে। এমতাবস্থায় প্রশ্নটি হলোঃ অভিভাবক এ বিয়েতে সম্মতি দিয়ে পারিবারিকভাবে বিয়ের আয়োজন করলে হারাম সম্পর্কের (প্রেমের) বিয়ে প্রমোটকারী ও পৃষ্ঠপোষকতাকারী হিসেবে কি তারা গুনাহগার হবে? আর তাদের বিয়ে দিলে সুন্নতে নববীর আলোকে দিতে পারবে কিনা? আর এ বিয়ের প্রস্তাব বাতিল করে দিয়ে মেয়েকে পারিবারিকভাবে আটকে রাখলে কি অভিভাবকের কোন গুনাহ হবে? সর্বোপরি, এক্ষেত্রে মেয়ের অভিভাবকের করনীয় কী জানালে খুবই কৃতজ্ঞ থাকবো, ইনশাআল্লাহ।
closed

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by
 
Best answer

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব ,

https://ifatwa.info/9628/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করেছি যে, শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

 তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)! (সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://www.ifatwa.info/4541/

যদিও ছেলে মেয়ের পরিবার কিছুই না জানে বা রাজি না থাকে। কিংবা তারা অনুমতি নাও দিয়ে থাকে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

বিবাহ বহির্ভূত প্রেম ভালোবাসা সম্পূর্ণ হারাম। যার শাস্তি অত্যন্ত ভয়ানক ও কঠোর। ছেলে মেয়ে যদি হারাম সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তাহলে মা বাবার দায়িত্ব হলো দ্রুত তাদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া। উক্ত ছেলে যার সাথে রিলেশন ছিল তার পরিবারের সাথে কথা বলে উভয় পরিবারের সম্মতি ক্রমে বিয়ে হওয়াতে কোন সমস্যা নেই। তাদের কে গুনাহ থেকে বাচানোর জন্যই যেহেতেু এই বিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিধায় তা সম্পূর্ণ জায়েয এবং তারা তাদের পূর্বের হারাম সম্পর্কের উপর অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহ তায়াল নিকট খালেছ দিলে তওবা করবে।

তবে ছেলে যদি চারিত্রিক দিক থেকে অসৎ হয় বা কুফুর মিল না থাকে তাহলে মেয়েকে বুঝিয়ে অন্য জায়গায় বিয়ে দেওয়া উচিত। কিন্তু যদি কোন ফেতনা বা দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা থাকে তাহলে তাদের উভয়ের মাঝে বিয়ে দেওয়াই শ্রেয়।কেননা, ইসলামে ছেলে মেয়ের পছন্দেরও যথেষ্ট অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তাদের পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে না দিলে বর্তমানে অনাকাঙ্খিত ও অপ্রত্যাশিত অনেক ঘটনা ঘটে থাকে যা অত্যন্ত দুংখজনক। বিধায় অবিভাবকের উচিত তাদের পছন্দেরও প্রতিও খেয়াল রাখা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...