بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব ,
https://ifatwa.info/58/ তাক্বদীর শব্দটির অর্থ
নির্ধারণ করা বা অনুমান করা। শরঈ পরিভাষায়
তাক্বদীর হল, আল্লাহ কর্তৃক বান্দার ভবিষ্যত নির্ধারণ করা।
তাকদীর বিষয়ক দুএকটা আয়াত ও হাদীস লক্ষণীয়........
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি-থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-
ﻋَﻦْ
ﻋَﺒْﺪِ اﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ
- ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ -( «ﻛَﺘَﺐَ اﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻘَﺎﺩِﻳﺮَ اﻟْﺨَﻼَﺋِﻖِ ﻗَﺒْﻞَ
ﺃَﻥْ ﻳَﺨْﻠُﻖَ اﻟﺴَّﻤَﺎﻭَاﺕِ ﻭَاﻷَْﺭْﺽَ ﺑِﺨَﻤْﺴِﻴﻦَ ﺃَﻟْﻒَ ﺳَﻨَﺔٍ)ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ.
আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক
মানুষের তাক্বদীর লিপিবদ্ধ করেছেন আসমান-যমীন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে এবং তিনি
যার ভাগ্যে যা লিপিবদ্ধ করেছেন তাই ঘটবে। (ছহীহ মুসলিম, মিশকাত হাদীস নং/৭৯)।
একদিন ছাহাবায়ে কেরাম তাকে কেবল তাক্বদীরের উপর ভরসা করে সকল
আমল ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানালে রাসূল (ছাঃ) বললেন, তোমরা সৎকর্ম করে যাও। কেননা যাকে যেজন্য সৃষ্টি করা হয়েছে,
তার পক্ষে সে কাজ সহজসাধ্য হবে। যারা সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত,
তাদের জন্য সেরূপ আমল এবং যারা দুর্ভাগাদের অন্তর্ভুক্ত তাদের জন্য সেরূপ
আমল সহজ করে দেওয়া হয়েছে। (বুখারী হা/৪৯৪৯)।
তাক্বদীর সম্পূর্ণ গোপনীয় বিষয়।আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং তাক্বদীরের
জ্ঞান তাঁর সৃষ্টিকুল থেকে গোপন রেখেছেন।এজন্য রাসূল (ছাঃ) এ প্রসঙ্গে অহেতুক বিতর্কে
জড়িয়ে পড়তে নিষেধ করেছেন। (তিরমিযী,ইবনে মাজাহ,মিশকাত হা/৯৮)
আল্লাহ তাক্বদীরের মন্দকে পরিবর্তন করে দিতে পারেন।তিনি তাক্বদীরের
ভাল-মন্দকে ইচ্ছা করলে মিটিয়ে দিতে পারেন এবং বহালও রাখতে পারেন(রা‘দ ৩৯)।
রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘মানুষ পাপকর্মের কারণে রূযী থেকে বঞ্চিত হয়।দো‘আর মাধ্যমে তাক্বদীর
পরিবর্তন হয় এবং নেকীর মাধ্যমে বয়স বৃদ্ধি পায় (নাসাঈ, ইবনু মাজাহ,হা/৪৯২৪; মিশকাত হা/৪৯২৫)।
তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি স্বীয় জীবিকায় প্রশস্ততা ও মৃত্যুতে বিলম্ব কামনা করে, সে যেন আত্মীয়-স্বজনের সাথে উত্তম ব্যবহার করে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯১৮)।
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻭَﺃَﻥ
ﻟَّﻴْﺲَ ﻟِﻠْﺈِﻧﺴَﺎﻥِ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﺎ ﺳَﻌَﻰ
বান্দা কেবল সেটাই পায়, যেটার জন্য সে চেষ্টা করে। (সূরা,আন-নাজম ৫৩/৩৯)
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী বোন!
তাকদীর একটি গোপন বিষয় যা আল্লাগ তায়ালা ছাড়া কেউই জানেন না।
শুধু বিয়ে না বরং মানুষ সারা জীবন কি কি করবে সবই আল্লাহ তায়ালা তাকদীরে লিখে রেখেছেন।
বান্দার চেষ্টানুপাতে আল্লাহ তাকে যা দিয়ে থাকেন তাই তার তাকদীরে লিখা থাকে। সুতরাং
আপনি আপনার অবিভাবককে যদি আপনার বিয়ের কথা বলেন এবং তিনি দেখেশুনে কোন একজন দ্বীনদ্বার
ছেলের সাথে বিয়ে দেন তাহলে বুঝতে হবে ঐ ছেলেই আপনার তাকদীরে ছিল। সুতরাং আল্লাহর ফয়সালায়
সন্তুষ্ট থাকাই ঈমানের দাবী। এ নিয়ে কাউকে দোষারোপ করা যাবে না। বুঝতে হবে এটা তাকদীরে
লিখন ছিলো। বিয়ে হওয়াটাও তাকদীরের লিখন না হওয়াটাও তাকদীরের লিখন।তবে মনে রাখা উচিত, উলামায়ে কেরামগণ তাকদীর নিয়ে বেশী আলোচনা করতে
নিষেধ করেছেন।
*অতিদ্রুত উত্তম ও দ্বীনদার স্ত্রী কিংবা স্বামী
পাওয়ার জন্য বেশি বেশি করে মুসা আলাইহিস সালাম কৃত দোয়াটি পড়তে পারেন-
رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ
إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
অর্থ: হে আমার পালনকর্তা,
তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ নাজিল
করবে, আমি তার মুখাপেক্ষী। (সুরা কাসাস-২৪)।
উত্তম জীবনসঙ্গী, নেককার সন্তান-সন্ততির জন্য আল্লাহ তাআলার শিখিয়ে
দেওয়া কোরআনি এই দোয়া গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যাপক অর্থপূর্ণ-
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ
أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ
إِمَامًا
অর্থ: হে আমাদের পালনকর্তা,
আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের
সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদের মুত্তাকীদের জন্যে
আদর্শস্বরূপ কর। (সুরা ফুরকান-৭৪)।
বেশি বেশি তওবা ও ইস্তিগফার করুন। এটা রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম
একটি আমল। জীবনের প্রতিটি নিয়ামত ও প্রশান্তি আপনার রিজিকেরই অন্তর্ভুক্ত। নফল সাদাকা
করুন। বেশি করে সালাতুল হাজত পড়ে আল্লাহর নিকট সাহায্য চান। কারণ এটা দ্রুত বিয়ে ও
দ্বীনদার স্বামী/স্ত্রী পাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ আমল।