আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
258 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (45 points)
আসসালামু আলাইকুম।

১. বলা হয় স্বামীর পছন্দ কে নিজের পছন্দ বানাতে। কিন্তু স্বামীর হয়ত খেলা দেখা পছন্দ,স্ত্রী দেখতে চায়না, স্বামী চায় খেলা দেখার সময় স্ত্রী ও পাশে থাকুক। এমতাবস্থায় স্ত্রীর করণীয় কি? স্বামীর কোন পছন্দ যদি গুণাহের দিকে ধাবিত করে আর স্ত্রী যদি সেগুলো তে স্বামীর পাশে না থাকে,সংগ না দেয় এতে করে স্বামীর সাথে যদি দূরত্ব তৈরি হয় সেক্ষেত্রে কি করণীয়?

২. মহিলারা ঘরের কাজকর্ম ও সন্তান নিয়ে ব্যস্ত থাকায় উপরন্তু জয়েন ফ্যামিলি থাকায সর্বদা পরিপাটি থাকতে পারে না। স্বামীর জন্য কি প্রতিদিন সাজসজ্জা জরুরি?
৩. স্বামী ফরজ ইবাদত ও পর্দা পালনে বাধা দেয় না। তবে নফল ইবাদত ও ইলম অর্জন এর জন্য যদি স্বামী কিঞ্চিৎ নারাজ থাকে তবে কি স্ত্রী এগুলা থেকে বিরত থাকবে?

৪. স্ত্রী সর্বদা স্বামীর কাছাকাছি থাকতে চায়, কিন্তু স্বামী এতে সবসময় খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্য  বোধ করেন না। তিনি মাঝে মাঝে একা থাকা পছন্দ করেন। এক্ষেত্রে স্ত্রী কি স্বামীকে মাঝে মাঝে একা ছেড়ে দিবেন?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
জবাব 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


স্ত্রী তার স্বামীর আনুগত্য করবে যদি সে নাজায়েজ  এবং সাধ্যের অতিরিক্ত কোন কাজের আদেশ না করে। সেই সাথে যথাসাধ্য তার সেবা করবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ أَنَسٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «الْمَرْأَةُ إِذَا صَلَّتْ خَمْسَهَا وَصَامَتْ شَهْرَهَا وَأَحْصَنَتْ فَرْجَهَا وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا فَلْتَدْخُلْ مِنْ أَىِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ»

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মহিলা যদি পাঁচ ওয়াক্ত সলাত আদায় করে, রমাযানের সিয়াম পালন করে, গুপ্তাঙ্গের হিফাযাত করে, স্বামীর একান্ত অনুগত হয়। তার জন্য জান্নাতের যে কোনো দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশের সুযোগ থাকবে।
(মিশকাত ৩২৫৪.হিলইয়াতুল আওলিয়া ৬/৩০৮।)

أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ ابْنِ عَجْلَانَ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّ النِّسَاءِ خَيْرٌ قَالَ الَّتِي تَسُرُّهُ إِذَا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إِذَا أَمَرَ وَلَا تُخَالِفُهُ فِي نَفْسِهَا وَمَالِهَا بِمَا يَكْرَهُ 

কুতায়বা (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করা হলো, কোন মহিলা উত্তম? তিনি বললেনঃ যে মহিলার প্রতি দৃষ্টিপাত স্বামীকে সন্তুষ্ট করে। সে আদেশ করলে তা সম্পন্ন করে, এবং তার বাড়ীর ও তার মালের ব্যাপারে যা অপছন্দ করে, সে তার বিরোধিতা করে।
(সুনানে নাসায়ী ৩২৩৪.মিশকাত ৩২৭২, সহীহাহ ১৮৩৮।)

(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামী যেহেতু নাজায়েজ কাজে স্ত্রীকে আদেশ করেছেন,তাই এই আদেশ মানা যাবেনা।

স্বামীর কোন পছন্দ যদি গুণাহের দিকে ধাবিত করে আর স্ত্রী যদি সেগুলো তে স্বামীর পাশে না থাকে,সঙ্গ না দেয়,এতে করে স্বামীর সাথে যদি দূরত্ব তৈরি হলে স্ত্রীর কোনো গুনাজ হবেনা।
তবে স্ত্রী দূরত্ব তৈরী না হওয়ার লক্ষ্যে তাকে বুঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যাবে।

হাদীস শরীফে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন-

لا طاعة في معصية إنما الطاعة في المعروف

গোনাহের কাজে কারো বশ্যতা স্বীকার করা যাবে না।(শরীয়ত যাদের বিধিনিষেধ মেনে চলার আদেশ দিয়েছে তাদের) আদেশ শুধুমাত্র বৈধ ও নেকীর কাজে মানা যাবে।(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)

অন্য এক হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,
لَا طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ

আল্লাহর অবাধ্যতায় কারো বিধিনিষেধ কে মান্য করা যাবে না।(মুসনাদে আহমাদ-১০৯৮)

(০২)
শরীয়তের বিধান মতে  স্বামীর সামনে সাজসজ্জা ও সৌন্দর্য প্রদর্শন শুধু বৈধই নয় বরং করণীয়। 

হাদিস শরিফে এসেছে,

عَنْ أَبِي أُمَامَةَ-رضي الله عنه- عَنِ النَّبِيِّ –ﷺ-، أَنَّهُ كَانَ يَقُولُ: مَا اسْتَفَادَ الْمُؤْمِنُ بَعْدَ تَقْوَى اللَّهِ خَيْرًا لَهُ مِنْ زَوْجَةٍ صَالِحَةٍ، إِنْ أَمَرَهَا أَطَاعَتْهُ، وَإِنْ نَظَرَ إِلَيْهَا سَرَّتْهُ، وَإِنْ أَقْسَمَ عَلَيْهَا أَبَرَّتْهُ، وَإِنْ غَابَ عَنْهَا نَصَحَتْهُ فِي نَفْسِهَا وَمَالِهِ

আবু উমামা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলতেন,  কোনো মুমিন ব্যক্তি আল্লাহ্ভীতির পর উত্তম যা লাভ করে তা হলো পুণ্যময়ী স্ত্রী। স্বামী তাকে কোন নির্দেশ দিলে সে তা পালন করে; সে তার দিকে তাকালে (তার বাহ্যিক সাজসজ্জা ও চরিত্রের মাধুর্যতা) তাকে আনন্দিত করে এবং সে তাকে শপথ করে কিছু বললে সে তা পূর্ণ করে। আর স্বামীর অনুপস্থিতিতে সে তার সম্ভ্রম ও সম্পদের হেফাযত করে। (সুনান ইবন মাজাহ ১৮৫৭)

★স্বামীর জন্য প্রতিদিন সাজসজ্জা জরুরি নয়।
তবে তবে যথা সম্ভব এর মাঝেও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করবে।
,  

(০৩)
হ্যাঁ, এতে স্ত্রী সেই নফল ইবাদতের ক্ষেত্রে বিরত থাকবে।
তবে বুঝানো অব্যাহত রাখলে আশা করা যায়,তিনি অনুমতি দিবেন,ইনশাআল্লাহ।     

আর ইলম অর্জন দ্বারা এখানে কোন ইলম অর্জন উদ্দেশ্য?
নফল ইলম হলে এই একই বিধান। 

আর ফরজ ইলম হলে তিনি হিকমতের সাথে তাকে বুঝিয়ে ইলম অর্জন অব্যাহত রাখবেন।

(০৪)
হ্যাঁ,  এক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীকে মাঝে মাঝে একা ছেড়ে দিতে পারবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...