আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
269 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (18 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।

১. নিচের হাদিসটা একটা সীরাতের বইয়ে দেয়া আছে। দয়া করে এর রেফারেন্সটা একটু দেন। কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না তাই।

★ একজন সাহাবী একবার নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর কাছে এসে বললেন, "হে আল্লাহর রাসূল! আমি যতক্ষণ আপনার সাথে থাকি, ততক্ষণ আমার মন মেজাজ খুব ভালো থাকে।আর যখনই ঘরে ফিরে যাই, তখনই আপনাকে মিস করতে শুরু করি। তারপর আমি পরিবারকে ছেড়ে আবার আপনার কাছে ফিরে আসি। আপনার উপর চোখ পড়তেই আমার অন্তরে প্রশান্তি ফিরে আসে। কিন্তু হঠাৎ আমার মাথায় চিন্তা ভর করল যে একদিন তো আপনি মারা যাবেন আর আমিও মারা যাব আর। তখন আপনি থাকবেন জান্নাতের উঁচু স্তরে নবীদের সাথে। আর আমি যদি যে কোনো মতে জান্নাতে যেতে পারি আমি তো আর আপনার সমকক্ষ হতে পারব না, জান্নাতে গেলেও হয়তো নিচু কোন স্তরে থাকবো। ইয়া রাসুলুল্লাহ! জান্নাত কি করে আমার কাছে জান্নাত হবে যদি সেখানে আপনাকে না পাই?"

সাহাবীর কথা শুনে কিছু সময়ের জন্য নবীজি নির্বাক হয়ে গেলেন। আসমান থেকে জিব্রাইল আলাই সাল্লাম নেমে এলেন। তিনি বললেন, "আপনার উম্মতকে বলে দিন তারা যাকে ভালোবাসে, জান্নাতে তাদের সাথেই থাকবে। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন আল্লাহর কসম হাদিসটি আমাদের সব থেকে প্রিয় কারণ আল্লাহর কসম আমরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম, আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আমহু ও উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর চেয়ে বেশি কাউকে ভালোবাসতাম না।"

২. "জান্নাতের সবচেয়ে নিকটবর্তী আমল হলো সময়মতো সালাত আদায় করা" এই হাদিসটার রেফারেন্স দিয়েন শায়েখ।

৩.   রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী (রা) মোট কয়জন? একজায়গায় বলে ৯ জন, এক জায়গায় বলে ১১ জন। কোনটা সঠিক এবং গ্রহণযোগ্য? কেউ জানতে চাইলে উত্তর কোনটা দিবো?

৪. মাজার মানে কি কবর? আমি জানি এবং বিশ্বাস করি যে, মাজারে সিজদাহ করা, কোনোকিছু চাওয়া ইত্যাদি শির্ক। তবে আমি যদি এই মনোভাব রাখি যে, "মাজার আর কবর একই কথা। এটা শুধু যিয়ারতের স্থান, সিজদাহর স্থান না।"  তাহলে কি আমার গুনাহ হবে? কোনো সমস্যা হবে?

৫. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি মেয়েদেরকে কবর যিয়ারত করতে নিষেধ করেছেন? কিংবা মেয়েরা কবর যিয়ারত করলে অপছন্দ করতেন? তাহলে কি মেয়েদের মাজারে শুধু যিয়ারত করা উচিত হবে? মদিনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজা পাক যিয়ারত করতে পারবে মহিলারা?

★মুফতী ইমদাদুল হক শায়েখের কাছ থেকে জবাব আশা করছি। কারণ তিনি স্পষ্টভাবে সব প্রশ্নের জবাব দেন, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ কবুল করুক।

জাযাকুমুল্লাহ খইর।
closed

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
selected by
 
Best answer

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
(১)
হাদীসের রেফারেন্স খুজছি।পেলেই জানাবো।
হাদিসটি ইমাম তাবারানি রাহ আওসাত গ্রন্থে এবং সাগির গ্রন্থে হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণনা করেন,

হাদীসের আরবী রূপ এই-
عن عائشة رضي الله عنها قالت جاء رجل إلى النبي صلى الله عليه وسلم فقال: (يا رسول الله والله إنك لأحب إلي من نفسي، وإنك أحب إلي من أهلي، وأحب إلي من ولدي، وأني لأكون في البيت فأذكرك فما أصبر حتى آتيك فأنظر إليك، وإذا ذكرت موتي وموتك عرفت أنك إذا دخلت الجنة رفعت مع النبيين، وأني إذا دخلت الجنة خشيت ألا أراك، فلم يرد عليه النبي صلى الله عليه وسلم حتى نزل جبريل عليه السلام بهذه الآية ( ومن يطع الله ورسوله فأولئك مع الذين أنعم الله عليهم من النبيين والصديقين والشهداء والصالحين وحسن أولئك رفيقاً). )

উক্ত হাদীসে যে সাহাবীর আলোচনা এসেছে, উক্ত সাহাবী সম্পর্কে ইমাম কুরতুবি রাহ উনার তাফসীর গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে, উনি হলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ ইবনে আব্দে রাব্বিহিল আনসারি।যিনি স্বপ্নে আযানের পদ্ধতিকে দেখেছিলেন। তবে কেউ কেউ বলেন, সংশ্লিষ্ট সাহাবী হলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ এর আযাদকৃত গোলাম, হযরত সাওবান রাযি। উক্ত হাদিসের সনদ বিশুদ্ধ

(২)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত,
عن عبد الله قال سألت النبي صلى الله عليه وسلم أي العمل أحب إلى الله قال الصلاة على وقتها قال ثم أي قال ثم بر الوالدين قال ثم أي قال الجهاد في سبيل الله قال حدثني بهن ولو استزدته لزادني -(كتاب مواقيت الصلاة)
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞাসা করলাম কোন আ'মল আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বেশী পছন্দনীয়। তিনি জবাবে বললেন, সময়মতো (মুস্তাহাব ওয়াক্তে ) নামায পড়া।(সহীহ বুখারী-৫০৪)

(৩)
বিশুদ্ধ মতানুযায়ী রাসূলুল্লাহ সাঃ এর স্ত্রীদের সংখ্যা ১১ জন।
(৪)
মাযার অর্থ যিয়ারতের স্থান,সাক্ষাতের স্থান। তবে বর্তমানে কোনো ওলী আল্লাহর কবরকেই মাযার বলা হয়ে থাকে, এ হিসেবে যে, সেখানে গিয়ে উক্ত ওলী আল্লাহদের কবরে গিয়ে সাথে সাক্ষাৎ করা হয়।মাযারে বা কবরে যাওয়া মূলত শিরক ছিলনা।তবে আনুষাঙ্গিক কারণে বর্তমানে প্রচলিত মাযার সমূহে যাওয়া কারো জন্যই জায়েয হবে না।কেননা এখানে শিরক হয়। কবরে যাওয়া বা কবর যিয়ারত করা পুরুষের জন্য বিনা দ্বিধায় জায়েয।তবে ফিতনার আশংকার দরুণ নারীদের জন্য কবরে যাওয়া মাকরুহ।

(৫)
https://www.ifatwa.info/5331 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
يَقْتَضِي الْجَوَازَ لِلنِّسَاءِ أَيْضًا لِأَنَّهُ لَمْ يَخُصَّ الرِّجَالَ وَفِي الْأَشْرِبَةِ وَاخْتَلَفَ الْمَشَايِخُ رَحِمَهُمْ اللَّهُ تَعَالَى فِي زِيَارَةِ الْقُبُورِ لِلنِّسَاءِ قَالَ شَمْسُ الْأَئِمَّةِ السَّرَخْسِيُّ - رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى - الْأَصَحُّ أَنَّهُ لَا بَأْسَ بِهَا وَفِي التَّهْذِيبِ يُسْتَحَبُّ زِيَارَةُ الْقُبُورِ
কবর যিয়ারতের বিধানের ব্যপকতার মধ্যে পুরুষ মহিলা সবাই শামিল।কেননা শুধুমাত্র পুরুষের সাথে নির্দিষ্ট হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।মাশায়েখগণ মহিলাদের কবর যিয়ারত নিয়ে মতবেদ করেন।সারাখসী রাহ,মনে করেন,বিশুদ্ধ কথা হল,এতে কোনো সমস্যা নেই।তাহযিব কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,তাদের জন্য কবর যিয়ারত মুস্তাহাব।

কিন্ত যামানার ফিৎনার ধরুণ মহিলাদের জন্য কবর যিয়ারতে না যাওয়াই উত্তম। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-৯/১৯২)বিস্তারিত অালোচনা (কিতাবুল ফাতাওয়া-৩/২২৮)

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/5331

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
মদিনায় মহিলারা কবর যিয়ারত করতে পারবে।তবে ফিতনার আশংকার দরুণ সাধারণ কবরস্থানে গিয়ে কবর যিয়ারত করতে পারবে না।এবং মাাযারেও যেতে পারবে না


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 1,656 views
...