بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
হজরত ঈসা (আ.) ছিলেন বনি ইসরাঈলের
সর্বশেষ নবী ও কিতাবধারী রাসুল। তাঁর ওপর ইনজিল নামের কিতাব নাজিল হয়েছে। তাঁর পর থেকে
শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর আবির্ভাব পর্যন্ত আর কোনো নবী আগমন করেননি। এই সময়টাকে
‘রাসুল আগমনের বিরতি কাল’ বলা হয়। কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার অব্যবহিত কাল আগে হজরত ঈসা
(আ.) আল্লাহর হুকুমে আবার পৃথিবীতে অবতরণ করবেন এবং মুহাম্মদি শরিয়ত অনুসরণ করবেন।
তিনি ইমাম মাহদির নেতৃত্বে সারা পৃথিবীতে শান্তির রাজ্য কায়েম করবেন। তিনি উম্মতে মুহাম্মদির
সঙ্গে বিশ্বসংস্কারে ব্রতী হবেন। কোরআন ও হাদিসে তাঁর সম্পর্কে সঠিক ও বিস্তৃত আলোচনা
করা হয়েছে।
ঈসা (আ.)-কে ইহুদিরা নবী বলেই
স্বীকার করেনি। অত্যন্ত লজ্জাজনকভাবে তারা তাঁকে জনৈক ইউসুফ মিস্ত্রির জারজ সন্তান
বলে আখ্যায়িত করেছে (নাউজুবিল্লাহ)। অন্যদিকে ঈসা (আ.)-এর ভক্ত ও অনুসারী খ্রিস্টান
সম্প্রদায় তাঁকে ‘আল্লাহর পুত্র’ (সুরা : তাওবা : ৯/৩০) হিসেবে বিশ্বাস করে। তারা ত্রিত্ববাদে
বিশ্বাস করে।
হজরত ঈসা (আ.) সম্পর্কে পবিত্র
কোরআনের মোট ১৫টি সুরায় ৯৮টি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।
ঈসা (আ.)-এর বৈশিষ্ট্যসমূহ
(১) তিনি ছিলেন পিতাবিহীন সৃষ্টি
বিশ্বের একমাত্র নবী (সুরা : আলে ইমরান : ৩/৪৬ প্রভৃতি)।
(২) আল্লাহ স্বয়ং তাঁর নাম রেখেছেন
ঈসা মাসিহ। (সুরা : আলে ইমরান : ৩/৪৫)।
(৩) তিনি শয়তানের অনিষ্টকারিতা
থেকে মুক্ত ছিলেন (সুরা : আলে ইমরান : ৩/৩৬-৩৭)।
(৪) দুনিয়া ও আখিরাতে তিনি ছিলেন
মহাসম্মানের অধিকারী এবং আল্লাহর একান্ত প্রিয়জনদের অন্যতম (সুরা : আলে ইমরান : ৩/৪৫)
(৫) তিনি মাতৃক্রোড়ে থেকেই সারগর্ভ
বক্তব্য দেন। (সুরা : মারিয়াম : ১৯/২৭-৩৩; সুরা : আলে ইমরান : ৩/৪৬)
(৬) তিনি বনি ইসরাঈলের প্রতি
প্রেরিত হয়েছিলেন (সুরা : আলে ইমরান : ৩/৪৯) এবং শেষ নবী ‘আহমাদ’ (সা.)-এর আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী
করেছেন। (সুরা : ছফ : ৬১/৬)
(৭) ঈসা (আ.)-কে বিশেষ অলৌকিক
ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম হলো—(ক) তিনি মাটির তৈরি পাখিতে
ফুঁক দিলেই তা জীবন্ত হয়ে উড়ে যেত। (খ) তিনি জন্মান্ধকে চক্ষুষ্মান ও কুষ্ঠরোগীকে সুস্থ
করতে পারতেন। (গ) তিনি মৃতকে জীবিত করতে পারতেন। (ঘ) তিনি বলে দিতে পারতেন, মানুষ বাড়ি থেকে যা খেয়ে আসে
এবং যা সে ঘরে সঞ্চিত রেখে আসে। (সুরা : আলে ইমরান : ৩/৪৯; সুরা : মায়েদা : ৫/১১০)
(৮) তিনি আল্লাহর কিতাব ইনজিলপ্রাপ্ত
হয়েছিলেন এবং আগের গ্রন্থ তাওরাতের সত্যায়নকারী ছিলেন। তবে তাওরাতে হারামকৃত অনেক বিষয়কে
তিনি আল্লাহর হুকুমে হালাল করেন। (সুরা : আলে ইমরান : ৩/৫০)
(৯) তিনি ইহুদি চক্রান্তের শিকার
হয়ে সরকারি নির্যাতনের সম্মুখীন হন। ফলে আল্লাহ তাঁকে সশরীরে আসমানে উঠিয়ে নেন (সুরা
: আলে ইমরান : ৩/৫২, ৫৪-৫৫; সুরা : নিসা : ৪/১৫৮)।
শত্রুরা তাঁরই মতো আরেকজনকে
সন্দেহের বশে শূলে চড়িয়ে হত্যা করে এবং তারা নিশ্চিতভাবেই ঈসাকে হত্যা করতে পারেনি।
(সুরা : নিসা : ৪/১৫৭)
(১০) তিনিই একমাত্র নবী, যাকে মহান আল্লাহ জীবিত অবস্থায় দুনিয়া