আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
162 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম।
(১)আমি যাদের টিউশনি করাই এদের বাবাদের ইনকামে হালাল হারাম মেশানো। তো আমি তাদের থেকে যে বেতন পাই সেটা হালাল টাকা থেকে দিয়েছে নাকি হারাম টাকা থেকে সেটা তো আমি জানতে পারিনা। এখন আমার জন্য কি এই বেতনের টাকা হালাল হবে??
 উল্লেখ্য আমার স্টুডেন্ট এর বাবা উকিল।এখন তাদের দেওয়া খাবার কি খাওয়া যাবে?

(২)আমার  মামা এনজিও কর্মী। এখন তার দেওয়া হাদিয়া, খাবার এসব কি গ্রহণ কর/খাওয়া যাবে?
জাযাকুমুল্লাহু খায়ের

1 Answer

0 votes
by (59,340 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

 আল্লাহ তায়ালা বলেন-

فَكُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ حَلَالًا طَيِّبًا وَاشْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ 

অতএবআল্লাহ তোমাদেরকে যেসব হালাল ও পবিত্র বস্তু দিয়েছেনতা তোমরা আহার কর এবং আল্লাহর অনুগ্রহের জন্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর যদি তোমরা তাঁরই এবাদতকারী হয়ে থাক। (সূরা নাহলআয়াত ১১৪)

 

 তিনি অন্যত্রে বলেন-

وَكُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ حَلَالًا طَيِّبًا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي أَنتُم بِهِ مُؤْمِنُونَ

আল্লাহ তা’য়ালা যেসব বস্তু তোমাদেরকে দিয়েছেনতন্মধ্য থেকে হালাল ও পবিত্র বস্তু খাও এবং আল্লাহকে ভয় করযার প্রতি তোমরা বিশ্বাসী। (সূরা মায়েদাআয়াত ৮৮)

 হাদীস শরীফে এসেছে-

عن أبي حرۃ الرقاشي عن عمہ رضي اللّٰہ عنہ قال: قال رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم: لا یحل مال إمرء مسلم إلا بطیب نفس منہ۔ (مسند أحمد ۵؍۷۲، شعب الإیمان للبیہقي ۲؍۷۶۹، مشکاۃ المصابیح ۲۵۵، مرقاۃ المفاتیح ۳؍۳۵۰)

রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন কাহারো সন্তুষ্টি চিত্ত ব্যাতিরেকে তার সম্পদ ব্যবহার হালাল হতে পারেনা।

নাজায়েজ।   

হারাম খাবার খেলে তার দোয়া, ইবাদত কবুল হয়না।

আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

 

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তাদের পুরো ইনকামই যদি হারাম হয়, সেক্ষেত্রে সেই আত্মীয়দের বাসায় দাওয়াত খাবেন না।

খেয়ে থাকলে সেই পরিমান টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনদের মাঝে সদকাহ করে দিতে হবে।

আর যদি তাদের ইনকাম হালালও থাকে, সেক্ষেত্রে তাদের বাসায় দাওয়াত খাওয়া যাবে। 


 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 


১. হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বেতন হালাল হবে এবং তার বাড়ীতে খাবারও খেতে পারবেন। কারণ, যেহেতু তার পুরো ইনকাম হারাম নয় বরং তার হালাল ইনকামও আছে তাই আপনার বেতন হালাল হবে এবং তার বাড়ীতে খাবারও খাওয়া যাবে।

২. আপনার মামার কাজ যদি সুদী কারবারের সাথে জড়িত হয় এবং তার অন্য কোন হালাল ইনকাম না থাকে তাহলে তার পুরো ইনকাম হারাম হবে। তখন তার বাড়ীতে খাবার গ্রহণ ও তার থেকে হাদিয়া নেওয়া যাবে না। আর যদি তার অন্য কোন হালাল ইনকাম থাকে তাহলে তার বাড়ীতে খাবার গ্রহণ ও তার থেকে হাদিয়া নেওয়া যাবে।

উল্লেখ্য যে, যদি নিশ্চিত ভাবে জানা যায় যে, সে হারাম সম্পদ থেকে হাদিয়া ও খাবার খাওয়াচ্ছে তখন কোন অবস্থায় তার থেকে হাদিয়া নেওয়া ও খাবার খাওয়া যাবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...