আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
265 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (42 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লহ শায়েখ আমি ব্যাক্তিগতভাবে খুবই দুর্বল নফসের অধিকারী৷ আমার বাসায় আমিই একমাত্র দ্বীন পালন করার চেষ্টা করি৷ আমি ৫ওয়াক্ত সলাত আদায়ের চেষ্টা করি,কিন্তু অনেক সময় শয়তানের ওয়াসওয়াসা হোক কিংবা কোনো ব্যস্ততার মধ্যে থেকে আমার সলাত মিস হয়ে যায়৷ পাশাপাশি আমার পরিবার থেকে আমি যেন সলাতে কম সময় দিই সে ব্যাপারে আমাকে বলা হয়।এরকম একটি পরিস্থিতিতে অনলাইন ছাড়া আমি কোনো দ্বীনি সহবত পাচ্ছিনা, অন্যদিকে আমার নফসের দ্বারা গুনাহ হয়েই যাচ্ছে৷ কিছুদিন যাবত আমি সারাদিনে যা যা করি সেটা ১টা ডায়রিতে লিখি এবং ১ জন বোনকে(অনলাইনে) শেয়ার করি,এতে আমার সলাত নিয়মিত হচ্ছে,গুনাহ করতে গিয়ে লজ্জা পাই এবং হারাম কাজসমূহ থেকে বিরত থাকতে পারছি। ডায়রীতে যেহেতু নেক কাজের পাশাপাশি গুনাহের কাজ‌ও তুলে রাখছি, যেটা কিনা বোনটা দেখছে এবং আমাকে শুধরে দিতে সাহায্য করছে।কিন্তু আল্লাহ বলেছেন গুনাহ প্রকাশ না করতে নয়তো ক্ষমা পেতে কালবিলম্ব হবে বরং গুনাহ মানুষের নিকট প্রচার না করে গোপন রাখলে তিনি ক্ষমা করে দিবেন।

১ম প্রশ্ন:
তাহলে আমার গুনাহ গুলো আমি যে বোনটাকে দেখাচ্ছি এটা কি শরীয়ত সম্মত হচ্ছে?

২য় প্রশ্নঃ

যদি উপরোক্ত ক্ষেত্রে হ্যাঁসূচক মতামত
আসে,তাহলে এই কাজটির (অর্থ্যাৎ ডায়েরিতে নিজের প্রতিদিনকার বিষয়সমূহ লিখা এবং নিজেকে গুনাহ হতে বাঁচতে অন্যবোনদেরকে ডায়েরী দেখানো) পরিসর বাড়ানো কি উচিত হবে?(চারজন বোন এভাবে ডায়েরী লিখবে এবং গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য তাগাদা পেতে চারজনের মাঝে শেয়ার করবে)
মানে এই পদ্ধতিটি কি দুইজন ব্যক্তি ছাড়িয়ে চারজন ব্যক্তির মধ্যে নিয়ে এলে এটি কি শরীয়তসম্মত হবে?
৩য় প্রশ্ন:

যদি উপরোক্ত দুটি ক্ষেত্রে মতামত হ্যাঁসূচক আসে,আমার তৃতীয় প্রশ্ন হচ্ছে,রিয়া সম্পর্কিত।এই যে,আমি ডায়েরী লিখে বোনদের মাঝে ডায়েরী লিখে শেয়ার করবো,তাতে নেক আ'মল ও গুনাহের কাজ দু'টিই লিপিবদ্ধ।ডায়েরীর ছবি দেওয়ার সময় মনে হয়,আজকে বুঝি অনেক আ'মল করেছি,এতে রিয়া হচ্ছে বা না হলেও রিয়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
এইক্ষেত্রে আমার এভাবে ডায়েরী প্রকাশ করাটা কি ঠিক হচ্ছে যেহেতু রিয়া হওয়ার প্রবল আশংকা থেকেই যায়?পাশাপাশি মনে হয়,আমি তো বোনটার কথার কারণে বা তার কাঠিন্যতার কারণে নেক আ'মল
করছি এবং গুনাহ হতে বেঁচে থাকছি,এটা কি আদৌ আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার জন্য হচ্ছে কিনা?

1 Answer

0 votes
by (63,560 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তষ্টির জন্যই হওয়া চাই।

রাছূল সাঃ বলেছেন-

مَنْ صَلَّى يُرَائِي فَقَدْ أَشْرَكَ، وَمَنْ صَامَ يُرَائِي فَقَدْ أَشْرَكَ، وَمَنْ تَصَدَّقَ يُرَائِي فَقَدْ أَشْرَكَ.

অর্থ:- যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে নামায পড়ল সে শির্ক করল, যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে রোযা পালন করল সে শির্ক করল, যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে দান-সাদাক্বাহ করল সে শিরক করল। (মুসনাদে আহমাদ)

 

আল্লাহর সন্তুষ্টির সাথে সমান সমান ভিন্ন কোনো নিয়ত থাকলে বা আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতীত ভিন্ন কোনো নিয়ত থাকলে তখন উক্ত ইবাদতকে রিয়া বলা যায়। তবে যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই মূল উদ্দেশ্য থাকে,এবং লোকজন ভাল বলবে,সেই আমলের দুনিয়াবী ফয়দা বিবেচনা করা হয়,তাহলে এমন নিয়ত আল্লাহর সাথে শরীক করা হয় না এবং লোক দেখানোও হয় না।

 

রিয়া বা প্রদর্শনপ্রিয়তা থেকে আত্মরক্ষার জন্য উলামায়ে কেরামগন কয়েকটি প্রচেষ্টার কথা বলেছেন,তা হলো—

১.   ইবাদতের সময় আল্লাহর অস্তিত্বের স্মরণ করা। এটা চিন্তা করা যে আল্লাহ আমার মনের খবর জানেন; আমি কেন করছি, কী করছি সব তিনি দেখছেন। হাদিসে যেমন বর্ণিত হয়েছে

ان تعبد الله كأنك تراه فإن لم تكن تراه فإنه يراك

, ‘তুমি আল্লাহর ইবাদত এমনভাবে কোরো যেন তুমি তাঁকে দেখছ। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে তিনি তোমাকে দেখছেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১)

২.   রিয়ার ভয়াবহতার কথা স্মরণ করা। প্রদর্শন আল্লাহর ক্রোধের কারণ, তা সব সময় মনে রাখা।

৩.   রিয়ামুক্ত আমলের পুরস্কারের কথা স্মরণ করা এবং তা অর্জনের প্রত্যয় গ্রহণ করা।

৪.   আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা যাওয়া, যেন তিনি অনুগ্রহ করে আমলটি কবুল করে নেন.

৫.   রিয়ামুক্ত আমলের তাওফিক চেয়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।

আরো জানুন- https://ifatwa.info/2685/

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

. আপনি যদি ভাই হয়ে থাকেন তাহলে গায়রে মাহরাম কোনো মেয়েকে আপনার আমল বা গুনাহের কথা শেয়ার করা জায়েজ হবে না

. কোনো হক্কানী পীরের কাছে আপনার আমল ও গুনাহের থেকে বিরত থাকার উদ্দেশ্যে হলে গুনাহের কথা শেয়ার করতে পারেন

. চার পাঁচ জনের নিকট নিজের আমলের কথা বলা যাবে যদি তা রিয়া মুক্ত হয় ও তাদেরকে নেক কাজের প্রতি উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে হয় তবে এতো জনের নিকট নিজের গুনাহের কথা বলা ঠিক হবে না বললে তারা এ ব্যাপারে স্বাক্ষী হয়ে যাবে


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (42 points)
আশা করি সম্মানিত মুফতিগন জবাব প্রস্তুত কাজে আছেন৷ ইনশাআল্লাহ সবুর করছি

by (42 points)
শাইখ আমার আহালের আইডি আমার ব্রাউজারে লগ ইন থাকায় ওনার নাম দেখাচ্ছে৷ আমি মেয়ে 
১.শাইখ,আর যদি মেয়ে হয়ে মেয়ের নিকট নিজেকে শুধরানোর স্বার্থে গুনাহ প্রকাশ করে তাহলে কি শেয়ার করা যাবে?

২.যদি হক্কানী কোনো আলেমার(সমস্যা ব্যক্তকারী একজন নারী) সংস্পর্শে যাওয়ার কোনো সুযোগ না থাকে(পরিবার থেকে মাদ্রাসা বা দ্বীনদার কারোর সাথে মিশতে বাধা প্রদান করে), এক্ষেত্রে কি কোনো দ্বীনদার বোনের সংস্পর্শে থেকে নিজেকে শোধরানো যাবে?
by (63,560 points)
+1
১, আপনি প্রথমে নিজে নিজে গুনাহ থেকে বিরত ও শোধরানোর চেষ্টা করবেন৷ এর পরও যদি না হয় তাহলে শোধরানোর নিয়তে কোনো দ্বীনদার মহিলার নিকট বলে পরামর্শ নিতে পারেন৷
২, হ্যাঁ, পারবেন৷ 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...