জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
আপনি যেহেতু নিশ্চিত নাপাকি শুধু সেখানেই রয়েছে ছড়িয়ে যায়নি,তাহলে অন্য প্রান্তের ভেজা পানি নাপাক হয়ে যাবেনা।
(০২)
তালাক খুবই জঘন্য একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .
কাসীর ইবন উবায়দ .......... ইবন উমার (রাঃ) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট নিকৃষ্টতম হালাল বস্তু হল তালাক।
(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।)
★★শরিয়তের পরিভাষায় সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়া,বিবাহ সম্পর্ক চলে যাওয়া শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷
যদি তিন তালাকের নিয়ত করে,তাহলে তিন তালাক পতিত হবে।
সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)
হেদায়া গ্রন্থে আছেঃ
وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.
احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية
সারমর্মঃ
কেনায়ার কিছু বাক্য ব্যাতিত অন্যান্য বাক্য গুলোতে এক তালাকের নিয়ত করলে এক তালাক হবে,তিন তালাকের নিয়ত করলে তিন তালাক হবে।
দুই তালাকের নিয়ত করলে এক তালাক পতিত হবে।
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে যে তোমাকে আমি ছেড়ে দিলাম, যা খুশি তাই করো,তুমি মুক্ত, তুমি স্বাধীন, তুমি স্বামী খুজো,বা স্বামী তালাশ করো,তাহলে এটিও কেনায়া তালাক।
কেনায়া তালাক হলো ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা যেটা হয়।
কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয়।
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত বাক্য ২ টি।
এক, অমুক কাজ করলে স্ত্রী চলে যাবে।
এটি অস্পষ্ট, এখানে স্ত্রী/বৈবাহিক সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে উদ্দেশ্য?
তাই হয়ে থাকলে এটি কেনায়া তালাক হবে।এক্ষেত্রে তার নিয়ত কি ছিলো?
একেবারে তালাকের নিয়ত সে করলেও যেহেতু তারা নিয়তে তিন বা তার চেয়ে বেশি তালাকের সংখ্যা ছিলোনা।
তাই উক্ত কাজ করলে এক তালাকই পতিত হবে।
যদি "অমুক কাজ করলে স্ত্রী চলে যাবে"
বলার দ্বারা, এখানে স্ত্রী/বৈবাহিক সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে উদ্দেশ্য না হয়ে থাকে,তাহলে এটি কেনায়া তালাকের বাক্য না হওয়ায় শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।
,
""অমুক কাজ করলে স্ত্রী তালাক হবে" বলার দ্বারা চিরতরে তালাক বা তিন তালাক বুঝিয়ে থাকলেও এক তালাকই পতিত হবে।
,
(০৩)
শর্ত আর বহাল থাকবেনা।
পরবর্তী বিবাহের ক্ষেত্রে সে উক্ত কাজ করতে পারবে।
সমস্যা হবেনা।
,
(০৪)
এই ভাবে দোয়া করার দ্বারা তালাক পতিত হবেনা।
,
(০৫)
এক্ষেত্রে সে যদি ""স্ত্রীর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক বাদ"" এমনটি নিয়ত করে থাকে,তাহলে কেনায়া বাক্য ব্যবহারের ভিত্তিতে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে।
,
এমনটি নিয়ত করে না থাকলে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো সমস্যা হবেনা।
,
(০৬)
হ্যাঁ তালাকের শর্ত পড়বে।
তথা এটি শর্তযুক্ত তালাকের অন্তর্ভুক্ত হবে।
,
(০৭)
হ্যাঁ এটি শায।
হানাফি মাযহাব মতে নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।
,
(০৮)
শুধুমাত্র সম্ভাবনার ভিত্তিতে তাকে কাফের হওয়ার হুকুম দেওয়া যায়না।
তাই তাদের বিবাহ সহীহ।
নতুন করে বিবাহ করতে হবেনা।
কাফের হয়ে যাওয়ার মতো সুনির্দিষ্ট কোনো কাজ/কথা বলে থাকলে বিধান ভিন্ন হবে।
,
(০৯)
তালাক পতিত হবেনা।
,
(১০)
নতুন ভাবে এখানে বিবাহের কোনো দরকার নেই।
তাই নতুন করে বিবাহ করলে সেই নতুন বিবাহের কোনো মূল্য শরীয়তে থাকবেনা।
আগের বিবাহই ধর্তব্য থাকবে।
তাই শুধুমাত্র আগের মোহরানাই শোধ করতে হবে,নতুনটি নয়।
যেহেতু এই বিবাহ শরীয়তে ধর্তব্য নয়,তাই
আগের সেই শর্তযুক্ত তালাক বহাল থাকবে।
শর্ত পাওয়া গেলে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে।
,
এখানে নতুন বিবাহের যেহেতু ধর্তব্য নেই,তাই
মোহরানার প্রশ্নই উঠেনা।
(রুপা ৯০০ টাকা ভড়ি হলে সর্বনিম্ন মোহরানা ২৫০০ টাকার মতো হয়।
সতর্কতামূলক ৩০০০ টাকা সর্বনিম্ন মোহরানা হিসেবে ধরা যাবে।