আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
177 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (60 points)

আসসালামু 'আলাইকুম।

ফিক্বহী মাসআলার ক্ষেত্রে একটি সাধারণ মূলনীতি হলো,কাউকে যদি হারাম কাজ করতে বাধ্য করা হয়,যাকে ইক্বরাহ বলে, তখন সেই হারাম কাজ করার জন্য তার কোন গুনাহ হবে না।

প্রশ্ন হলো,এখানে বাধ্য করা বলতে ঠিক কী বোঝানো হয়েছে? ইক্বরাহ বলতে কি শুধু হত্যা বা অঙ্গহানি বোঝায়?

১।গালি দেয়া কি ইক্বরাহ এর অন্তর্ভূক্ত?

২।জখম হয়না এমন পরিমাণ মারধর করা বা শারীরিক শাস্তি দেয়া কি ইক্বরাহ এর অন্তর্ভূক্ত?

৩।মানসিক অত্যাচার বা মানসিক চাপ সৃষ্টি করা কি ইক্বরাহ এর অন্তর্ভূক্ত?

৪।ছোট বা বড় আর্থিক, শারীরিক বা পারিবারিক ক্ষতির "হুমকি" দেয়া কি ইক্বরাহ এর অন্তর্ভূক্ত?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

 لَاۤ اِکۡرَاهَ فِی الدِّیۡنِ ۟ۙ قَدۡ تَّبَیَّنَ الرُّشۡدُ مِنَ الۡغَیِّ ۚ فَمَنۡ یَّکۡفُرۡ بِالطَّاغُوۡتِ وَ یُؤۡمِنۡۢ بِاللّٰهِ فَقَدِ اسۡتَمۡسَکَ بِالۡعُرۡوَۃِ الۡوُثۡقٰی ٭ لَا انۡفِصَامَ لَهَا ؕ وَ اللّٰهُ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ

দ্বীন মানতে কোনো ধরনের জোর জবরদস্তি নেই। সঠিক পথ ভুল পথ থেকে পরিষ্কারভাবে আলাদা হয়ে গেছে। তাই যে তাগুত (মিথ্যা প্রভুদের) অস্বীকার করবে, এবং আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস আনবে, সে অবশ্যই এমন এক মজবুত হাতল ধরবে, যা ভাঙ্গার কোনো আশঙ্কা নেই। আল্লাহ সব শোনেন, সব জানেন। [আল-বাক্বারাহ ২৫৬]

আল্লাহ তায়ালা এখানে কঠিনভাবে বলেছেন لَا إِكْرَاهَ, কোনো ধরনের জোর জবরদস্থি করা যাবে না। এই আয়াতে শব্দটা হচ্ছে إِكْرَاه, যার অর্থ কোনো একটা ব্যাপার কেউ ঘৃণা করে, এবং তাকে সেটাই জোর করে করানো। একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায়, কেন জোর জবস্থি করে ধর্ম মানানো সম্ভব না। ধর্ম মানুষের অন্তরের ব্যাপার। মানুষকে জোর করে কোনো কিছু বিশ্বাস করানো যায় না। কারো সামনে তলোয়ার ধরে বললাম, “তিন দিন সময় দিলাম। এর মধ্যে মুসলিম হয়ে যাও। নাইলে তাহলে সে মনে প্রাণে ইসলামে বিশ্বাস করে, তার যাবতীয় ভুল বিশ্বাস ভেঙ্গে ফেলবে না। সে বড়জোর একজন মুনাফিক হয়ে যাবে। একইসাথে কাউকে গিয়ে হুমকি দিলাম, “যদি কালকে থেকে পাঁচ ওয়াক্ত মসজিদে না দেখি, তাহলে তোমাকে ধরে এই হুমকিতে সে হয়তো মসজিদে যাবে। কিন্তু সেটা আল্লাহর জন্য হবে না, হবে অন্য কোনো উদ্দেশ্যে।

# কেউ কোন হারাম কাজ করতে যদি রাজি না হয় বরং তাকে জোর পূর্বক উক্ত হারাম কাজ করতে বাধ্য করা হয় তাহলে  উক্ত হারাম কাজ করার কারণে তার কোনো গুনাহ হবেনা। কেননা আল্লাহ তা'আলা সামর্থ্যর অধিক দায়িত্ব কাউকে দেননা।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

لاَ يُكَلِّفُ اللّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ

আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না, সে তাই পায় যা সে উপার্জন করে এবং তাই তার উপর বর্তায় যা সে করে।(সূরা বাকারা-১৮৬))

তবে মনে রাখতে হবে ইকরাহ বা জবরদস্তি দুই প্রকার:

১.ইকরাহে তাম বা পূর্ণ জবরদস্তি। যেমন:কোন জালেম বা প্রভাবশালী ব্যক্তি যদি বলে যে, তুমি যদি এই কাজটি না করো তাহলে আমি তোমাকে মেরে ফেলবো, হাত পা কেটে নিব ইত্যাদী। মোট কথা যেখানে প্রাণনাশের বা অঙ্গহানী হয়ে যাওয়ার আশ্ঙ্কা থাকে এবং ঐ ব্যক্তি বাস্তবেও এমন জুলুম করতেও পারে। তাহলে এমন পরিস্তিতিতে মন থেকে উক্ত হারাম কাজের প্রতি ঘৃণা রেখে জান বাঁচানোর তাগিদে তা করতে পারে।

২.ইকরাহে নাকেছ বা অসম্পূর্ণ জবরদস্তি। যেমন: কেউ কাউকে বললো যে, তুমি এই কাজটি না করলে আমি তোমাকে থাপ্পড় মারবো, তোমাকে অপমান করবো ইত্যাদী। মোটকথা এক্ষেত্রে প্রাণনাশের বা অঙ্গহানীর আশংকা থাকে না।সুতরাং এমন পরিস্থিতিতে কেউ যদি কোন হারাম বা নাজায়েয কাজ করে তাহলে উক্ত গুনাহের জন্য তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...