আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
514 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (26 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ্।

১)আপনাদের একটি ফতোয়াতে বলা হয়েছে,শুধু মনি বের হলেই গোসল ফরজ হবে।আবার আরেকটি ফতোয়াতে বলেছেন ঘুম থেকে ওঠার পর ভেজা কিছু দেখলে স্বপ্নের কথা স্মরণ না থাকলে, মযি হিসেবে নিশ্চিত হলে গোসল ফরজ হবে।তাহলে প্রশ্ন হলো মযি বের হলে গোসল ফরজ না হলে,ঘুম থেকে ওঠার পর দেখলে তাতে গোসল ফরজ হবে কেন?

২)আরো একটি ফতোয়াতে দেখলাম মযি সহবাসের পূর্বে কামোত্তেজনা বা এরকম কিছুর ফলে বের হয়।তাহলে কি অবিবাহিতদের মযি বের হয় না?শুধুই বীর্য ও ওদি(মহিলাদের ক্ষেত্রে)?

৩)মহিলাদের মযি যেহেতু সাদা ও স্বচ্ছ হয়,সাদাস্রাবও অনুরূপ হলে সাদাস্রাব থেকে তা আলাদা করবো কিভাবে?সাদাস্রাব তো ঘুমের মধ্যেও বের হয়,তাহলে কিভাবে বুঝবো গোসল ফরজ?

৪)সাদাস্রাব বা মযি বের হলে টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে ওযু করে নামাজ পড়া যাবে?

৫)ওযু রাখার পর ওযু আছে কি নেই ভুলে গেলে করণীয় কি?ওই অবস্থায় ই কি সলাত আদায় করতে পারবো?

৬)ছোটখাটো ম্যাজিক দেখানো কি জায়েজ?বিভিন্ন কাগজ, কয়েন ইত্যাদি দিয়ে যেগুলো করা হয়?

এক্ষেত্রে অপরপক্ষ জানে যে এটি হাতের কারসাজি, ধোঁকা দেয়া হচ্ছে না।এগুলো টিভিতে বা সরাসরি দেখা জায়েজ?

৭)বিভিন্ন শায়েখগণ বলেন ফজরের এক-দেড় ঘণ্টা আগে তাহাজ্জুদের জন্য ঘুম থেকে উঠতে।এখন এই এক ঘন্টা কি শুধু সলাত পড়তে হবে?

৮)তাহাজ্জুদের সময় চোখের পানি ফেলে দুআ করলে যে কবুল হয়,তা কি শুধু নামাজের ভিতরে নাকি বাইরেও?

ভিতরে হলে কি বাংলায় দুআ করা এবং কান্না করা যাবে?সলাতের ভিতর হাদিসে বর্ণিত দুআ করা যাবে?

৯)দাঁড়িয়ে পান করলে শয়তানের প্রস্রাব পান করা হয়,এ কথা কতটুকু সত্য?

১০)মুসলিম মেয়েদের কি হিন্দু মেয়েদের সাথে পর্দা করতে হবে?কতটুকু পর্দা করতে হবে?হোস্টেলে দেখা যায় একই রুমে হিন্দু রুমমেইট ও থাকে,এক্ষেত্রে পর্দা কিভাবে করবো? সবসময় তো হাত, পা, মাথা ঢেকে রাখা পসিবল না।এক্ষেত্রে কি করণীয়?

১১)কাউকে শুভেচ্ছা জানানোর ক্ষেত্রে কি কোনো সুন্নাহ বা পদ্ধতি আছে,যাতে করে নেকি পাওয়া যাবে?

১২)আমার এক বোনকে নিচের পিকচারটি পাঠানোর পর,ও জিজ্ঞেস করেছে যে তার মানে কি ভালোবাসা প্রকাশ করা বৈধ?এক্ষেত্রে  ভালোবাসা প্রকাশ বলতে কি সবাইকে প্রকাশ করা বুঝানো হয়েছে?

https://photos.app.goo.gl/e5PJGUVmisXVR6FB9

১৩)উমরি কাযা বলতে তেমন কিছু নেই।যখন হেদায়েতপ্রাপ্ত হবো, তওবা করে নামাজ শুরু করলেই আগের সব নামাজ কাযা করার গুনাহ মাফ।এটি কি ঠিক?

১৪)মেয়েদের সতর কতটুকু?

১৫)ইসলাম বিদ্বেষী কাউকে আল্লাহর লানত পরুক,বা এ ধরণের কোনো অভিশাপ দেয়া যাবে নাকি তাদের হেদায়েতের জন্য দুআ করতে হবে?

যেমন কুরআন বা রাসূল(ﷺ)এর অবমাননাকারীদের?

১৬)আমার জন্মদাত্রী মায়ের দ্বিতীয় স্বামী অর্থাৎ আমার সৎ বাবার আগের স্ত্রীর ছেলে সন্তানরা কি আমার মাহরাম?

১৭)মহিলারা কোনো কারণে বাইরে গেলে /সফরে বের হলে নামাজের সময় ওযু না থাকলে হিজাব খুলে ওযু করা পসিবল হয় না।এক্ষেত্রে করণীয় কি?

আর বাইরে নামাজ পরার সময় পর্দার খেলাফ হওয়ার আশঙ্কা থেকে কি মুখ ঢেকে নামাজ পড়বে নাকি খুলে?

অনেকগুলো প্রশ্ন,দুঃখিত।আশা করি উত্তর দিবেন।জাযাকুমুল্লাহ খায়ের।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by


ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
(১)
ঘুম থেকে ওঠার পর ভেজা কিছু দেখলে স্বপ্নের কথা স্মরণ না থাকলে, মযি হিসেবে নিশ্চিত হলে গোসল ফরজ হবে।
এটা এজন্য যে, মযি সাধারণত বীর্যের পূর্বেই বের হয়ে থাকে।যেহেতু এখানে স্বপ্নের বিবরণ মনে নাই, তাই বুঝা গেল যে, এখানে বীর্য বের হওয়ার সম্পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে।

(২)
সহবাবসের ইচ্ছার মূহুর্তে যে তরল পদার্থ বের হয়, সেটাই মযি।সহবাসের ইচ্ছা যে কারো হতে পারে।বিবাহিত হোক বা অবিবাহিত।

(৩)
সাদাস্রাব না মযি? এটা সাধারণত নিজ অবস্থার উপর বিবেচনা করেই নির্ধারণ করতে হবে।যদি কারো সাদাস্রাব বের হওয়ার প্রবণতা বেশী হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে যে, ঘুমের মধ্যেও সাদাস্রাবই বেশী নির্গত হয়েছে।

(৪)
সাদাস্রাব বা মযি বের হলে, টিস্যু ইত্যাদি দিয়ে মুছে অজু করে নামায পড়া যাবে।

(৫)
অজু করার পর অজু ভেঙ্গে গেছে বলে নিশ্চিত না হলে, ধরে নিতে হবে, অজু আছে।

(৬)
এগুলো বেহুদা কাজ।তাই কোনো মু'মিন ব্যক্তির জন্য এগুলো কাম্য হতে পারে না।

(৭)
শুধু যে সালাত পড়তে হবে,  এমন নয়, বরং যিকির কুরআন তিলাওয়াত তথা সব রকম নফল ইবাদত করা যাবে।

(৮)
তাহাজ্জুদের সময় যে দু'আ কবুল হয়ে থাকে, এটা নামাযের সাথে নির্দিষ্ট নয়।বরং নামায ব্যতিতও দু'আ কবুল হবে।তবে নামাযের মাধ্যমে দু'আ কবুল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী।
তাহাজ্জুদের নামাযের মধ্যেও দু'আ করা যেতে পারে, এবং নামাযের পরেও করা যাবে।
নামাযের ভিতরে বাংলা ভাষায় দু'আ করা যাবে না।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/185

(৯)
দাড়িয়ে পান করা সুন্নতের খেলাপ।তবে শয়তানের প্রস্রাব পান করার বিষয়টি সঠিক নয়।

(১০)
https://www.ifatwa.info/2461 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
মেয়েদের জন্য মেয়েদের সতর কতটুকু সে সম্পর্কে ফাতাওয়া হিন্দিয়ায় উল্লেখ করা হয়
نظر المرأة إلى المرأة كنظر الرجل إلى الرجل، كذا في الذخيرة. وهو الأصح، هكذا في الكافي. ولا يجوز للمرأة أن تنظر إلى بطن امرأة عن شهوة، كذا في السراجية. ولا ينبغي للمرأة الصالحة أن تنظر إليها المرأة الفاجرة؛ لأنها تصفها عند الرجال فلا تضع جلبابها، ولا خمارها عندها، ولا يحل أيضا لامرأة مؤمنة أن تكشف عورتها عند أمة مشركة أو كتابية إلا أن تكون أمة لها، كذا في السراج الوهاج.
মহিলার জন্য মহিলার সতর হচ্ছে এক পুরুষের জন্য অন্য পুরুষের সতর যতটুকু(অর্থাৎ নাভীর নীচ থেকে হাটু পর্যন্ত)(যাখিরাহ)এটাই বিশুদ্ধ।কোনো মহিলার জন্য অপর মহিলার পেটের দিকে কামভাব সহকারে দৃষ্টি দেয়া জায়েয না।(সিরাজিয়্যাহ)নেককার মহিলার জন্য উচিৎ হবে না যে,তাকে কোনো বদকার মহিলা দেখবে,কেননা ঐ মহিলা অন্যান্য পুরুষের কাছে তার সৌন্দর্যর আলোচনা করবে।সুতরাং কখনো সে ঐ রকম বদকার মহিলার সামনে নিজের বোরখা ও উড়না খুলবে না।ঠিকতেমনিভাবে কোনো মুসলিম মহিলা অমুসলিম কোনো বাদীর সামনে বোরখা বা উড়না খোলবে না, তবে ঐ অমুসলিম বাদীটি তার নিজ মালিকানাধীন থাকলে ( এক্ষেত্রে শংকামুক্ত থাকার ধরুণ তার সামনে বোরখা খোলা) বৈধ হবে।(আস-সিরাজুল ওয়াহ্হাজ) (ফাতাওয়া হিন্দিয়া-৫/৩২৭)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কাফির মহিলার সামনে আওরাহ তথা পেটপিঠ খুলা যাবে না। তবে মুখ হাত পা ইত্যাদি খুলা যাবে। হ্যা, না খুলাই উত্তম বলে বিবেচিত হবে।

(১১)
সালামের মাধ্যমেই শুভেচ্ছা জানানো ইসলামি রীতি। এ জন্য অবশ্যই সওয়াব পাওয়া যাবে।

(১২)
জ্বী, একজন আরেকজনকে ভালবাসা-মহব্বত প্রকাশ করতে পারবে।তবে প্রেম বা বিবাহ বহির্ভূত মহব্বত প্রকাশ যাবে না।

(১৩)
না, উমরি কাযা আছে। বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/968

(১৪)
১০ নং প্রশ্নোত্তর দেখুন।

(১৫)
প্রথমে তাদের জন্য হেদায়তের দু'আ করতে হবে।যদি তাদের দ্বারা ইসলামের কোনো ক্ষতি না হয়, তাহলে তাদের জন্য অভিশাপ মূলক দু'আ জায়েয হবে না।

(১৬)
মায়ের আগের স্বামীর ছেলে আপনার জন্য মাহরাম নয়।

(১৭)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/9190


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...