আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
189 views
in সালাত(Prayer) by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ।
১. যদি কেউ তার অতীতের কাযা সালাতের সংখ্যা প্রথম থেকে  অনুমান করে নির্ণয় করতে চায়, তাহলে সে কি তার সাত বছর বয়স থেকে গণনা করবে নাকি দশ বছর বয়স থেকে গণনা করবে?  নাকি সে সাবালক হওয়ার পর থেকে গণনা করবে?  যেহতু সাত বছর বয়স সালাত পড়তে হয়।

২. আমরা জানি মেয়েদের উটের পিঠের মতো করে ফুলিয়ে চুল বাধা নিষিদ্ধ। যদি কোনো মেয়ে ঘরে থাকা অবস্থায় মাথার উপরে না বেধে পিছনে চুল বাধে এবং তাতে সামান্য ফুলে থাকে এতে কি গুনাহ হবে?  যদি সে ইচ্ছে করে উঁচু করে বা ফুলিয়ে না বেধে স্বাভাবিক ভাবেই চুল পিছনে নিয়ে খোপার মতো করে বাধে তাহলে কি সমস্যা হবে?  বাইরে বের হলে কি সবসময় নিচু করে বাধতে হবে?

৩. বিভিন্ন বৃত্তি পরীক্ষায় পুরস্কার হিসেবে যে ক্রেস্ট দেয়া হয়, সেগুলো কি উল্টো ঘুরিয়ে পড়ার টেবিলে রাখা যাবে? এতে কি কোনো সমস্যা হবে??
জাযাকাল্লাহ খাইরান শায়েখ।

1 Answer

0 votes
by (566,160 points)
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১) শরীয়তের বিধান হলো বালেগ হওয়ার পর থেকে  যেসব নামাজ পড়া হয়নি,সেসব নামাজের কাজা আদায় করে নিতে হবে।
সুতরাং কেহ যদি বয়স গণণা করে কাজা নামাজের সংখ্যা নির্ণয় করতে চায়,সে বালেগ বা বালেগাহ হওয়ার পর থেকে হিসেব করে কাজা নামাজ আদায় করতে হবে। 
,
আর যদি বালেগ হবার আলামতগুলো তার ১৫ বছরের মধে প্রকাশিত না হয়, তাহলে বয়স পনের বছর হলেই উক্ত ছেলে মেয়ে বালেগ হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে।

عن ابن عمر رضي الله عنهما أنه عُرِض على النبي صلى الله عليه وسلم يوم أُحدٍ وله أربع عشرة سنة فلم يُجِزْه، وعُرِض عليه يوم الخندق وله خمس عشرة سنة فأجازه.


ইবনে উমর রাঃ উহুদের জিহাদে অংশ নেবার অনুমতি চাইলেন, তখন তার বয়স ছিল চৌদ্দ বছর। রাসূল সাঃ তাকে অনুমতি প্রদান করেননি। কিন্তু খন্দকের জিহাদের অংশ নিতে অনুমতি চাইলে অনুমতি দেয়া হয়, তখন তার বয়স ছিল পনের বছর। [আলআহাদ ওয়ালমাছানী, হাদীস নং-৭৪৬] 


বুঝা গেল, শরীয়তের মুকাল্লাফ হতে হলে কোন আলামত না থাকলে বয়স হিসেবে কমপক্ষে পনের বছর হতে হয়।

দ্রষ্টব্য
আল ইনায়া শারহুল হেদায়া ৮/২০১;আদ্দুররুল মুখতার ৬/১৫৩;তাফসীরে কুরতুবী ১২/১৫১, -সহীহ বুখারী হাদীস : ২৬৬৪, ৪০৯৭; আললুবাব ফী শরহিল কিতাব ২/১৬।
,
(০২)
আবূ হুরায়ররা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, একটি হাদিসে রাসূল সা. বলেছেন,
صنفان من أهل النار لم أرهما تيجان بأيديهن سياط يضربون بها الناس يعني ظلماً ونساء كاسيات عاريات مائلات مميلات رؤوسهن كأسمنة البخت المائلة لا يدخلن الجنة ولا يجدن ريحها، وإن ريحها ليوجد من مسيرة كذا وكذا
*”জাহান্নামবাসী দুটি দল রয়েছে। যাদেরকে আমি এখনো দেখিনি। একদল এমন লোক যাদের হাতে গরুর লেজের মত লাঠি থাকবে যা দিয়ে তারা লোকদেরকে প্রহার করবে।*
“আর অন্য দল এমন নারী যারা পোশাক পরেও উলঙ্গ থাকে। তারা অন্যদের তাদের প্রতি আকৃষ্ট করবে নিজেরাও অন্যদের প্রতি ঝুঁকবে। তাদের মস্তক উটের পিঠের কুঁজের মত হবে। তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এমনকি জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ এর ঘ্রাণ এত এত দূর থেকেও পাওয়া যায়।” [মুসলিম : ২১২৮]*

হাদীসের ভাষা হল: *উটের পিঠের কুঁজের মত*। মাথার উপর চুল বাধলে বা ঝুটি থাকলেই তখন উটের পিঠের কুঁজের মত দেখা যাবে; অন্যথায় নয়। চুল মাথার পিছনে খোপা করায় কোন সমস্যা নাই।

উক্ত হাদিসে এক প্রকারের জাহান্নামী নারীর বৈশিষ্ট্য ও আলামত বর্ণনা করা হয়েছে। সে এমন এক নারী যে এমন পোশাক পরিধান করবে যা দেখে অন্যরা আকৃস্ট হবে ও ঐ নারী নিজেও অন্যদের প্রতি আকৃষ্ট হবে। সে এমন পোশাক পরিধান করবে যা দেখলে অন্য পুরুষদের মনে কামনা বাসনার সৃস্টি হবে অর্থাৎ তার বেসভুসা হবে অপরকে আকৃষ্টকারিনীর ন্যায়। এই প্রকৃতির নারীকে চিহ্নিত করার আরেকটি আলামত হচ্ছে যে তার মাথা হবে ঊটের কুজের ন্যায় দেখতে। এখানে শুধু তাকে চিহ্নিত করার একটি বৈশিষ্ট্য বা আলামত হিসেবে বলা হয়েছে যে তার মাথা হবে ঊটের কুজের ন্যায় দেখতে। হাদিসে সরাসরি এরূপ চুল বাধতে নিষেধ করা হয় নাই। তবে তাকওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের এই পদ্ধতি এরিয়ে চলাই অধিক উত্তম। আরা তাছাড়া জাহান্নামী নারীদের কোন বৈশিষ্ট্য কোন মুমিন নারী গ্রহন করতে পারেনা।
,
তাই বাহিরে বেধে হওয়ার সময় সতর্কতামূলক এমনভাবে চুল বেধে না যাওয়াই উত্তম
,

(০৩) বিভিন্ন বৃত্তি পরীক্ষায় পুরস্কার হিসেবে যে ক্রেস্ট দেয়া হয়, সেগুলো উল্টো ঘুরিয়ে পড়ার টেবিলে রাখা যাবে।
এতে শরীয়তের পক্ষ থেকে কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...