আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
238 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (33 points)
edited by
আজ বাজার থেকে একটি চেয়ার কিনে আনলাম। কিনার সময় খেয়াল করি নাই।

বাড়িতে আনার পর। আমি ওই চেয়ারে বসলাম। তখন ও খেয়াল করি নাই।

কিন্তু রাতে খেয়াল করলাম যে,, ওই চেয়ারের পিছনের দিক দিয়ে লিখা যে,

লিখাটি হচ্ছে "MUHAMMAD.Plastic"

আমাদের নাবী (সাঃ) এর নাম মোবারকের   সাথে মিল রেখে ওউ কোম্পানির নাম।

(লিখা কিভাবে লিখা এবং বসলে কিভাবে পড়ে যায় একটূ নিচে ব্যাখ্যা দিচ্ছি)--

ওই চেয়ারের যখন বসবো, তখন---


ওই চেয়ারের পিছনের দিকে ----


কিন্তু  কোমরের নিচের দিকে


পাছার নিচেও না, তবে পাছার উপরের দিক দিয়ে কাছাকাছি ভাবে ওই পবিত্র লিখা শারীফ  পড়ে যায়।

এখন এই পবিত্র নাম --
আমি যখন চেয়ারে বসবো তখন আমার কোমরের নিচে এবং পাছার কাছাকাছি ভাবে পড়ে যায়।

প্রশ্ন ১): তাহলে কি উক্ত চেয়ারে আমার বসা জায়েজ হবে কি?


বি:দ্র:
স্টিকার থাকলে ছিড়ে ফেলতাম ইনশাআল্লহ্। কিন্তু তা একদম প্লাস্টিক দিয়ে গাঢ়-ভাবে লিখা। যা ব্লেড দিয়ে কাটা ব্যতীত তুলা অসম্ভব।
(লিখা চেয়ারের পিছন দিকে, কোমরের নিচে,পাছার নিচে না,,কিন্তু প্রায় কাছাকাছি)


প্রশ্ন ২): আমি কি ব্লেড দিয়ে ওই নাম শারীফ তুলে ফেলবো?

প্রশ্ন ৩): যদি আমি ব্লেড দিয়ে না, তুলি তাহলে ওইভাবেই বসা জায়েজ হবে ক

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by
              بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
আল্লাহর বান্দাদের উপর আল্লাহর নবী খাতামুন্নাবিয়ীন হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনেক হক রয়েছে। সবচেয়ে বড় হক হল তাঁর প্রতি অন্তর থেকে ঈমান আনা এবং পিতামাতা, সন্তান-সন্ততি এমনকি নিজ প্রাণের চেয়েও অধিক তাঁর প্রতি মহববত রাখা। তাঁর যথাযথ সম্মান করা এবং অনুসরণ করা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল দ্বীনী আকীদাকে অন্তর থেকে বিশ্বাস করার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর প্রতি সত্যিকারের মহববত আর যথাযথ তা‘জীম ও সম্মান হচ্ছে ঈমানের জন্য অপরিহার্য। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কিছু শিক্ষার নিছক অনুসরণ ঈমানদারীর জন্য যথেষ্ট নয়। পশ্চিমা দুনিয়াও তাদের পার্থিব স্বার্থে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনেক শিক্ষা অনুসরণ করে থাকে। এমন অনুসরণ কখনো যথেষ্ট নয়। বরং তাঁর শর্তহীন আনুগত্য মেনে নেওয়া, তাঁর আদব-ইহতিরাম এবং মহববত ও ভালোবাসা হচ্ছে ফরয এবং ঈমানের অপরিহার্য অংশ। এটা ছাড়া ঈমান গ্রহণযোগ্য নয়। এ প্রসঙ্গে মনে রাখার মতো একটি সংক্ষিপ্ত কথা এই যে, আল্লাহকে ভালোবাসার মানদন্ড আল্লাহ নিজেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বানিয়েছেন। কেউ যদি আল্লাহর প্রিয়পাত্র হতে চায় তবে এর একমাত্র পথ হচ্ছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি মহববত রাখা এবং তাঁর আনুগত্য অবলম্বন করা। এ মানদন্ডে উত্তীর্ণ হওয়া ছাড়া আল্লাহকে ভালোবাসার দাবি আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কুরআন মজীদে ইরশাদ হয়েছে-

قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّونَ اللَّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللَّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ

মুমিনের হৃদয়ে নবী-মহববত কী পরিমাণ থাকা উচিত-এ প্রশ্নের উত্তর খোদ কুরআন মজীদে এসেছে-

النَّبِيُّ أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنْفُسِهِمْ

অর্থাৎ নবীর সঙ্গে ঈমানদারের প্রাণেরও অধিক সম্পর্ক। তিনি তাদের সত্তা থেকেও তাদের কাছে অগ্রগণ্য। (সূরা আহযাব : ৬)

মুমিনের সঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে মুমিনের যে সম্পর্ক তার প্রকৃতিই ভিন্ন, মাহাত্ম্যই আলাদা। এই সম্পর্কের সঙ্গে পার্থিব কোনো সম্পর্কের কোনো তুলনাই হতে পারে না। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈমানদারের জন্য তার পিতামাতার চেয়েও অধিক মেহেরবান আর তার নিজের চেয়েও অধিক কল্যাণকামী। উম্মতের ঈমানী ও রূহানী অস্তিত্ব নবীর রূহানিয়াতেরই অবদান। যে মমতা ও প্রতিপালন নবীর পক্ষ থেকে উম্মত লাভ করেছে এর কোনো নমুনা গোটা সৃষ্টি-জগতের মধ্যেও পাওয়া যাবে না। পিতামাতা এর দৃষ্টান্ত হতে পারেন না। পিতার মাধ্যমে আল্লাহ আমাদেরকে দান করেছেন দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবন আর নবীর মাধ্যমে হাসিল হয় চিরস্থায়ী ‘হায়াত’। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের এরূপ সহানুভূতি ও কল্যাণকামিতার সঙ্গে প্রতিপালন করে থাকেন যে সহানুভূতি ও কল্যাণকামিতা আমাদের নিজ সত্তার পক্ষেও সম্ভব নয়। স্ত্রী-সন্তান এমনকি পিতামাতাও অজ্ঞতা বা অসচেতনতার কারণে কখনো আমাদের ক্ষতির কারণ হতে পারে, ভুল পথে পরিচালিত করতে পারে, কিন্তু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উম্মতকে সর্বদা ওই পথই দেখিয়ে থাকেন, যে পথে রয়েছে তাদের প্রকৃত সফলতা। মানুষ নিজের পায়ে কুঠারাঘাত করে, নির্বুদ্ধিতার কারণে নিজের ক্ষতি সাধন করে, কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষকে ওই নির্দেশই দান করেন যাতে বাস্তবিকই তার কল্যাণ রয়েছে। এজন্য উম্মতের উপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই হক্ব প্রতিষ্ঠিত যে, তাঁকে নিজের পিতামাতা, স্ত্রীসন্তান এবং প্রাণের চেয়েও অধিক ভালোবাসবে। নিজের মতামতের উপর তাঁর মতামতকে এবং নিজের সিদ্ধান্তের উপর তাঁর সিদ্ধান্তকে অগ্রগণ্যতা দেবে। আর তাঁর আদেশকে শিরোধার্য করবে।

উল্লেখিত আয়াতে কারীমার মর্মবাণী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীস শরীফে এভাবে বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা ও সন্তানের চেয়ে, সকল মানুষের চেয়ে, এমনকি তাঁর প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয় না হই। -সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬৬৩২; সহীহ মুসলিম ১/৪৯
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনি ভাই / বোন!
প্রতিটি মুসলমানের জন্য আবশ্যক নবীজীর নামের প্রতিও যথোপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করা। প্রশ্নোক্ত ছুরিতে নবীজীর নামের সম্মানার্থে আপনার জন্য উচিত চেয়ার থেকে উক্ত মুহাম্মাদ লেখাটি কোন ভাবে মুছে ফেলা বা তুলে ফেলা। এরপর আপনি তা ব্যবহার করলে কোন সমস্যা হবে বলে আশা করা যায়।

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...