আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
124 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (46 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ্ ,

উস্তাদজী ,

১/ বর্তমান সময়ে অনেক ছেলে বিয়ে করে অনেক ছোট বয়সের মেয়েকে , যেটা যায়েয , কিন্তু সরকার ১৮ বছর নিচে বা বাল্যবিবাহ বারণ করেছেন । এক্ষেত্রে অনেক মেয়ের পরিবার তাদের মেয়েকে বিয়ে দেন মূল বয়স বাড়িয়ে ।‌‌


এটা কি গোনাহ হবে ?

এর থেকে উত্তরণের উপায় কি?

২/

৭/৮ দিন ইস্তেখাড়া করা হয়েছে কিন্তু কোনো ফলাফল আসেনি বিয়ে করবে নাকি করবে না ।

ফলাফল জানাটাও জরুরি ।


এক্ষেত্রে করণীয় কি?


৩/ পা দিয়ে জায়নামাজ ঠিক করতে হয় না ।

এটা কি সহীহ হাদীস?


৪/ ইবনে কাসীর এত সুন্দর সাবলীল ভাবে লেখা যা সবাই পড়লে বুঝতে পারেন । এতে অনেক হাদীসের ব্যাখ্যা ও দেওয়া আছে কুরআনের আলোকে , এগুলো কি সব সহীহ ।

একজন সাধারণ মানুষ কি এটা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নিজে এবং অন্যকে আমলের জন্য আহ্বান করতে পারবেন?


৫/ বাবা মা যদি দ্বীনদার কাউকে না খুঁজে টাকাওয়ালা ঘুষখোর কাউকে বিয়ে দিতে চায় মেয়ের সাথে এক্ষেত্রে করণীয় কি ?

বুঝিয়ে কাজ হয় না ।

টর্চার করে অনেক । কুরআন পড়ায় বাঁধা দেন । মেয়ে যদি রাগ করে কোথাও চলে যায় তবে কি গোনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/5864/?show=5864#q5864 নং ফাতওয়াতে  আমরা উল্লেখ করেছি যে, বিয়ের কোনো বয়স ইসলামে নেই।যে কোনো বয়সে বিয়ে করা যায়,এবং বিয়ে দেয়া যায়।তবে উপযোক্ত বয়সে উপনীত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত উক্ত পাত্র/পাত্রীর সাথে সহবাসে লিপ্ত হওয়া যাবে না।

সরকার কর্তৃক এমন আইন স্পষ্টত শরীয়াত বিরোধী। সুতরাং এর জন্য আমাদের উপর দায়িত্ব সরকারকে বুঝানো এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নিকট ইসলামের সঠিক ব্যাখা তুলে ধরা।ইসলামের প্রাথমিকযুগে বাল্য বিবাহ ছিলো,রাসূলুল্লাহ হযরত আয়েশা রাযিকে ছয় বৎসর বয়সের সময় বিয়ে করেছিলের।অবশ্যই উপযুক্ত বয়সে উপনীত হওয়ার পরেই উনার সাথে ঘরসংসার করেছিলেন।সুতরাং বিয়ের কোনো বয়স নেই।বয়স নির্ধারণ করে কোনো বিধান জারি করা স্পষ্টত শরীয়তের বিধান বহির্ভূত।উভয়ের বয়স সমান হওয়া জরুরী নয়। তবে হাদীসে বয়স সমান হওয়ার প্রতি উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।

সুতরাং এমন পরিস্থিতিতে জন্ম সনদে বয়স কমানো বাড়ানোতে কোনো সমস্যা হবে না এবং যিনি বদলিয়ে দিবেন,তারও কোনো গোনাহ হবে না।মিথ্যা বলার বিধান জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/644

*হযরত জাবির রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,

عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَلِّمُنَا الِاسْتِخَارَةَ فِي الأُمُورِ كُلِّهَا، كَمَا يُعَلِّمُنَا السُّورَةَ مِنَ القُرْآنِ، يَقُولُ: " إِذَا هَمَّ أَحَدُكُمْ بِالأَمْرِ، فَلْيَرْكَعْ رَكْعَتَيْنِ مِنْ غَيْرِ الفَرِيضَةِ، ثُمَّ لِيَقُلْ:

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সব কাজে ইস্তিখারাহ্* শিক্ষা দিতেন। যেমন পবিত্র কুরআনের সূরাহ্ আমাদের শিখাতেন। তিনি বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কোন কাজের ইচ্ছা করলে সে যেন ফরজ নয় এমন দু’রাক‘আত সালাত আদায় করার পর এ দু’আ পড়েঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ، وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ العَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ، وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ، وَأَنْتَ عَلَّامُ الغُيُوبِ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي - أَوْ قَالَ عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ - فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي، ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي وَمَعَاشِي وَعَاقِبَةِ أَمْرِي - أَوْ قَالَ فِي عَاجِلِ أَمْرِي وَآجِلِهِ - فَاصْرِفْهُ عَنِّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ، وَاقْدُرْ لِي الخَيْرَ حَيْثُ كَانَ، ثُمَّ أَرْضِنِي " قَالَ: «وَيُسَمِّي حَاجَتَهُ»

ভাবার্থঃ‘‘প্রভু হে! আমি তোমার জ্ঞানের ওয়াসিলাহ্তে তোমার অনুমতি কামনা করছি; তোমার কুদরতের ওয়াসিলায় শক্তি চাচ্ছি আর তোমার অপার করুণা ভিক্ষা করছি। কারণ তুমিই সর্বশক্তিমান আর আমি দুর্বল। তুমিই জ্ঞানী আর আমি অজ্ঞ এবং তুমিই সর্বজ্ঞ। প্রভু হে! তুমি যদি মনে কর যে, এই জিনিসটি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায়, ইহকালে ও পরকালে সত্বর কিংবা বিলম্বে আমার পক্ষে মঙ্গলজনক হবে তা হলে আমার জন্য তা নির্ধারিত করে দাও এবং তার প্রাপ্তি আমার জন্য সহজতর করে দাও। অতঃপর তুমি তাতে বারাকাত দাও। আর যদি তুমি মনে কর এই জিনিসটি আমার দ্বীন ও দুনিয়ায় ইহকালে ও পরকালে আমার জন্য ক্ষতিকর হবে শীঘ্র কিংবা বিলম্বে তাহলে তুমি তাকে আমা হতে দূর করে দাও এবং আমাকে তা হতে দূরে রাখো; অতঃপর তুমি আমার জন্য যা মঙ্গলজনক তা ব্যবস্থা কর- সেটা যেখান থেকেই হোক না কেন এবং আমাকে তার প্রতি সন্তুষ্টচিত্ত করে তোল।’’তিনি ইরশাদ করেন هَذَا الْأَمْرَ  তার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করবে। (সহীহ বুখারী- (শামেলা);২/৫৭(হাদীস নং১১৬২)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১.আসল বয়স দিয়ে বায়োডাটা বানানোই উত্তম।তবে যদি পাত্রপক্ষ কর্তৃক সার্টিফিকেট দেখার সম্ভাবনা থাকে,তাহলে সার্টিফিকেট বয়সও দেয়া যেতে পারে। তবে এমন পরিস্থিতিতে বয়স বাড়ানোতে কোনো সমস্যা হবে না বলে আশা করা যায়।

২.আপনি ইস্তেখারার নামাজ পড়ে স্বপ্নযোগে কোনো কিছু দেখেছেন কিনা? যদি দেখে থাকেন,তাহলে সেই অনুযায়ী আমল করতে পারেন।যদি কোনো কিছুই দেখে না থাকেন, তাহলে নিজের মনের উপর তা নির্ভর করবে যে, মন কোন দিকে বেশী ধাপিত । যেদিকে মনের টান বেশী সে অনুযায়ী  ফায়সালা করবে। পজেটিভ হলে পজেটিভ আর নেগেটিভ হলে নেগেটিভ। আর যদি মনের মধ্যে কোন কছু না আশে তাহলে কুফুর মিল থাকলে আপনি এই বিবাহ করতে পারেন,যেটি একান্তই আপনার ব্যক্তিগত ইচ্ছা। আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/30157/

 ৩.জায়নামাজে দাড়িয়ে আমরা নামাজের মত পবিত্র ও মহান একটি বাদত আদায় করে থাকি। সুতরাং আমাদের উচিত জায়নামাজের আদব রক্ষা করা । তবে যদি কেউ পা দিয়ে জায়নামাজ ঠিক করে তাতে কোন গুনাহ হবে না। তবে এমনটি না করাই শ্রেয়।

৪. তাফসীরে ইবনে কাসীর হচ্ছে কালজয়ী মুফাসসির যুগশ্রেষ্ঠ মনীষী আল্লামা হাফিয ইবন কাসীর ( র:) এর একনিষ্ঠ নিরলস সাধনা ও অক্লান্ত পরিশ্রমের অমৃত ফল, তাফসীর জগতে এ যে বহুল পঠিত সর্ববাদী সম্মত নির্ভরযোগ্য এক অনন্য সংযোজন ও অবিস্মরণীয় কীর্তি এতে সন্দেহ সংশয়ের কোন অবকাশ মাত্র নেই।

হাফিজ ইমাদুদ্দীন ইবন কাসীর ( র:) এই প্রামাণ্য তথ্যবহুল, সর্বজন গৃহীত  তাফসীরের মাধ্যমে আরবী ভাষাভাষীদের জন্য পবিত্র কালামের সত্যিকারের রূপরেখা অতি স্বচ্ছ সাবলীল ভাষায় তুলে ধরেছেন তাঁর ক্ষুরধার বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে। এসব কারণেই এর অনবদ্যতা ও শ্রেষ্ঠত্বকে সকল যুগের মনীষীরা সমভাবে অকপটে এবং একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন।

তাই এই পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশে, সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের, এমনকি ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষায়তনের গ্রন্থাগারেও সর্বত্রই এটি বহুল পঠিত, সুপরিচিত, সমাদৃত এবং হাদীস-সুন্নাহর আলোকে এক স্বতন্ত্র মর্যাদার অধিকারী।

কিন্তু উক্ত গ্রন্থে কিছু কিছু দূর্বল রেওয়াতও পাওয়া যায় । বিধায় আপনার জন্য উচিত স্থানীয় কোন নির্ভরযোগ্য আলেমর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী উক্ত তাফসীর গ্রন্থটি পড়া । এতে আপনার জন্য যথেষ্ট ফায়দা হবে বলে আশা করা যায়।

৫. ঐ মেয়ের জন্য পিতা মাতার উপর রাগ করে অন্যত্র চলে যাওয়া উচিত হবে না। বরং জীবনে সৎ ও দ্বীনদার কোন ব্যক্তি স্বামী হিসেবে পাওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশী বেশী দোয়া করতে হবে এবং মা বাবাকে বুঝানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে। নিজে তাদেরকে বুঝাতে সক্ষম না হলে তাদের নিকট শ্রদ্ধাভাজন ও মান্যবর দ্বীনদার ও আল্লাহওয়ালা ব্যক্তির মাধ্যমে তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করবে। আল্লাহ তায়ালা তারেদকে সহিহ বু দান করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...