আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
191 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (106 points)
আমি যে আত্মীয়ের বাসায় আছি সে সুদের সেক্টরে কাজ করে বিধায় আমার তার ইনকামের খাবার খাওয়া হারাম হচ্ছে, তাই আপনারা অল্প পরিমাণ খেতে বলেছেন এবং ঐ টাকা সওয়াবের নিয়ত বাদে সাদাকাহ করতে বলেছেন। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম একজন প্রেগ্নেন্ট মহিলা যার স্বামীর এখন ইনকাম নেই ফলে তার চিকিৎসার জন্য টাকা দরকার,তাকে সাদাকাহ দিতে পারব কিনা,আপনারা https://www.ifatwa.info/29902?show=29911#a29911 এই প্রশ্নের জবাবে এখানে বলেছেন যে ঐ মহিলার উপর যাকাত ফরজ না হলে দিতে পারব।

আমার প্রশ্ন হলো,

১।যাকাত ফরজ হলে কেন তাকে দিতে পারব না?

এখন সেই মহিলা ঋণগ্রস্ত, তাহলে তাকে যাকাত দেওয়া যায়, তাহলে কি তাকে সওয়াবের নিয়ত বাদে হারাম খাওয়ার  টাকাটুকু সাদাকাহ দিলে হবে না?

গরিবদের যাকাত ও দেওয়া যায়,সেই হিসেবে আমি কাউকেই তাহলে আমার হারাম খাওয়ার টাকা সাদাকাহ করতে পারব না,
দয়া করে বিষয়টি একটু বুঝিয়ে বলবেন

২। অনলাইনে কিছু একাডেমি প্রত্যন্ত এলাকার নওমুসলিমদের সাহায্য করার জন্য ফান্ড তুলে,আমি কি তাদেরকে আমার হারাম খাওয়ার টাকাটুকু সাদাকাহ দিতে পারব? উল্লেখ্য, তাদেরকে যাকাত দেওয়া যাবে বলে উল্লেখ আছে

৩। সিরিয়া,ইয়েমেন সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নিপীড়িত মুসলিমদের সাহায্য পাঠানোর জন্য কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করছে,আমি কি তাদেরকে আমার হারাম খাওয়ার টাকা টুকু সাদাকাহ করতে পারব?

৪। অনলাইনে একটি পেইজ থেকে এখন সুবিধাবঞ্চিত মাদ্রাসায় পড়ুয়া তালিবুল ইলমদের মধ্যে কুরআন বিতরণ করাএ প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছে,আমি কি এখানে আমার হারাম খাওয়ার টাকা টুকু সাদাকাহ করতে পারব?
৫। মসজিদ নির্মাণ, মাদ্রাসা নির্মাণ, টিউবওয়েল নির্মাণ - এসব কাজে কি আমার হারাম খাওয়ার টাকা টুকু সাদাকাহ করতে পারব?
৬।  অনেকে গরীব না কিন্তু অনেক জটিল রোগের চিকিৎসার টাকা যোগান দেওয়ার সামর্থ্য থাকে না তাই তারা সাদাকাহ কালেক্ট করে,আমি কি তাদেরকে আমার হারাম খাওয়ার টাকা টুকু সাদাকাহ করতে পারব?
৭। সাবান, শ্যাম্পু,তেল, টুথপেষ্ট, ডিটারজেন্ট, হ্যান্ডওয়াশ - এগুলোর প্রত্যেকটির ব্যবহার হারাম হবে? এগুলোর ঠিকঠিক হিসাব তো সম্ভব না, আনুমানিক হিসাব ধরে সাদাকাহ করলে হবে?

৮। এই বাসায় কয়েল ও আমি ব্যবহার করি কিন্তু রুমে আমি একা থাকি না,খালার রুমে আমি ও খালা থাকি, তাহলে কি কয়েলের টাকাটা আমি সাদাকাহ না করলে চলবে?

৯। খালাদের পানির বিল দেওয়া লাগে না,বাড়ির মালিক পানির বিল নেয় না, আর খালাদের চাল ও কিনে আনা না, গ্রাম থেকে পাঠানো, তাহলে কি পানি ও ভাত আমার জন্য হালাল হচ্ছে?

অনেকগুলো প্রশ্ন একসাথে করার জন্য আফওয়ান, আসলে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়ার আর কোনো সোর্স আমার কাছে নেই,আর প্রতিবেলা হারাম খেতে হচ্ছে তাই আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছি দিনদিন, অনেক কষ্ট হচ্ছে,যতদ্রুত সম্ভব আমি প্রতিবার খাওয়ার টাকা সাদাকাহ করে দিতে চাই, আর হারাম খাওয়ার থেকেও বাঁচতে চাই, যতই টাকা সাদাখ করে দেওয়ার অপশন থাকুক,জেনে-বুঝে নিজের নাফস ও যে হারামে সাঁই দেয় না সেই হারামে ডুবে থাকতে গিয়ে আমি মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাবঃ-

(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.
আল্লাহর রাসূল ﷺ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান।
(মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
 (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে সেটি ফকিরদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।

★প্রশ্নে উল্লেখিত প্রেগন্যান্ট মহিলা যেহেতু ঋণগ্রস্ত।
শরয়ী পরিভাষায় সে এখন গরিব।
তাই তাকে উক্ত টাকা দেওয়া যাবে।
,
(০২)
হ্যাঁ, এক্ষেত্রে যেহেতু তারা যাকাত গ্রহনের উপযুক্ত,শরয়ী পরিভাষায় তারা গরিব। 
সুতরাং তাদেরকে সেই টাকা দিতে পারবেন।
,
(০৩)
হ্যাঁ, আপনি তাদেরকে সদাকাহ করতে পারবেন।
তবে যাদের মাধ্যমে টাকা পাঠাবেন,তাদের কার্যক্রমের প্রতি বিশ্বস্ত হয়েই সিদ্ধান্ত নিবেন।
,
(০৪)
হ্যাঁ, তাদের জন্য সদাকাহ করতে পারবেন।
তবে কিছু ইসলামী স্কলারগন তালেবে ইলেমদের শান রক্ষায় এহেন টাকা তাদের পিছনে খরচ করার প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে থাকেন।
,
(০৫)
না,এসব কাজে সেই টাকা ব্যবহার করতে পারবেননা।
তবে কিছু স্কলারদের মতানুসারে এক্ষেত্রে জনকল্যাণ মূলক কাজ হিসেবে টিউবওয়েল নির্মাণের ক্ষেত্রে এ টাকা খরচের সুযোগ রয়েছে। 
তাদের মতে মাদ্রাসাতেও সদকাহ করার সুযোগ রয়েছে।
তবে কোনো ক্রমেই মসজিদে এহেন টাকা সদাকাহ করা যাবেনা।
,
(০৬)
সেই মুহুর্তে সে নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক না হয়ে থাকলে তাকে উক্ত টাকা দিতে পারবেন।
কেননা নেসাব পরিমান সম্পদ না থাকলেই শরীয়তের পরিভাষায় গরিব বলা হয়।
,
(০৭)
হ্যাঁ প্রত্যেকটির বিধানই এমন হবে।
আপনি আনুমানিক হিসেব করে সদকাহ করতে পারবেন।
,
(০৮)
আপনিও যেহেতু ব্যবহার করছেন,সেক্ষেত্রে অল্প হলেও সদকাহ করবেন।
,
(০৯)
হ্যাঁ, পানি আর ভাত হালাল হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...