আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
372 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (70 points)

আসসালামু আলাইকুম, 
প্রশ্ন-১ঃ অনেকের মুখে শুনি ১ বালতি দুধের মধ্যে এক ফোঁটা প্রসাব দিলে পুরো দুধ টুকুই হারাম হয়ে যায়?
উক্ত কথাটা কি হাদিসে আছে? থাকলে রেফারেন্স সহ দিন ।

প্রশ্ন-২ঃ "আল্লাহু তা'আলা আমাদেরকে মাফ করুন বুঝার জন্য একটা নোংরা উদাহরণ দিতে হচ্ছে"
কেউ যদি জেনে শুনে ৫০০ মিলি দুধের ভিতর ৫০ মিলি প্রসাব দিয়ে খায় এবং তওবা না করে তাহলে বিচারের দিন তাকে
কতটুকু হারাম খাওয়ার জন্য হিসেব দিবে? তাকে কি পুরোটাই ৫৫০ মিলি হারামের হিসেব দিতে হবে নাকি শুধু ৫০ মিলি
(প্রসাব)হারামের হিসেব দিতে হবে?
 

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
প্রথমেই আমরা মাসয়ালাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেইঃ-
শরীয়তের বিধান হলো প্রবাহিত বা বেশি পানিতে নাপাকি পড়লে নাপাকির গুন প্রকাশ পাওয়ার আগ পর্যন্ত সেই পানি পাক থাকবে।
তার দ্বারা পবিত্রতা অর্জন জায়েজ।
,   
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ سَلَمَةَ- مِنْ آلِ ابْنِ الأَزْرَقِ- أَنَّ الْمُغِيرَةَ بْنَ أَبِي بُرْدَةَ- وَهُوَ مِنْ بَنِي عَبْدِ الدَّارِ - أَخْبَرَهُ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُوْلُ: سَأَلَ رَجُلٌ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّا نَرْكَبُ الْبَحْرَ وَنَحْمِلُ مَعَنَا الْقَلِيلَ مِنَ الْمَاءِ فَإِنْ تَوَضَّأْنَا بِهِ عَطِشْنَا، أَفَنَتَوَضَّأُ بِمَاءِ الْبَحْرِ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " هُوَ الطَّهُورُ مَاؤُهُ الْحِلُّ مَيْتَتُهُ "

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! আমরা সমুদ্রে যাত্রা করি এবং পান করার জন্য সাথে সামান্য (মিঠা) পানি বহন করি। আমরা যদি তা দিয়ে অযু করি তাহলে পিপাসায় থাকতে হয়। সুতরাং এরূপ অবস্থায় আমরা সমুদ্রের পানি দিয়ে অযু করব কী? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সমুদ্রের পানি পবিত্র এবং তার মৃত প্রাণী (খাওয়া) হালাল।
তিরমিযী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ সমুদ্রের পানি পবিত্র, হাঃ ৬৯), নাসায়ী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ সমুদ্রের পানি, হাঃ ৫৯ এবং অধ্যায়ঃ পানি, অনুঃ সমুদ্রের পানি দ্বারা উযু করা, হাঃ ৩৩১)। ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ সমুদ্রের পানি দ্বারা উযু করা, হাঃ ৩৮৬) মালিক (১২) শাফিঈ ‘কিতাবুল উম্ম’ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, ১/৩)। দারিমী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ সমুদ্রের পানি দ্বারা উযু করা, হাঃ ৭২৯)। আহমাদ (২/২৩৭, ৩৬১, ৩৯৩) ইবনু খুযাইমাহ (১১১), ইবনু হিববান (১১৯-১২০) আবূ হুরাইরাহ সূত্রে।

★যদি পানি প্রবাহিত না হয়,বদ্ধ পানি হয়,কম পানি হয়,সেক্ষেত্রে সেখানে নাপাকি পড়লে সেটি নাপাক হয়ে যাবে।
সেই পানি দিয়ে পবিত্রতা অর্জন জায়েজ হবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، قَالَ حَدَّثَنَا حِبَّانُ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " لاَ يَبُولَنَّ الرَّجُلُ فِي الْمَاءِ الدَّائِمِ ثُمَّ يَغْتَسِلُ مِنْهُ أَوْ يَتَوَضَّأُ " .

মুহাম্মদ ইবনু হাতিম (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামথেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি যেন বদ্ধ পানিতে পেশাব না করে, যাতে সে পরে গোসল অথবা উযু করবে।

সহিহ, বুখারি হাঃ ২৩৯, মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ৫৬৩,নাসায়ী ৩৯৭)

★উক্ত হাদীসে বদ্ধ পানিতে পেশাব করা,পেশাব করা হলে তা থেকে পবিত্রতা অর্জন নিষেধ করা হয়েছে।
এখানে পেশাবের কোনো পরিমান নির্দিষ্ট করা হয়নি।
তাই ফুকাহায়ে কেরামগন বলেছেন যে অল্প পেশাব হলেও এই পানি নাপাক হবে।
তাই এক ফোটা পেশাব এক বালতি পানিতে পড়লে সেই এক বালতি দুধ নাপাক বলেই গন্য হবে।
,
এটিই হানাফি মাযহাবের মত।
তবে ইমাম মালেক রহঃ সহ আরো কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে অল্প পানিতেও নাপাকি পড়ার পর যদি নাপাকির কোনো গুন দৃশ্যমান না হয়,তাহলে সেটিকে নাপাক বলা যায়না।
তার দ্বারা অযু গোসল জায়েজ।     

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ اَبِىْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِىِّ قَالَ قِيْلَ يَا رَسُوْلُ اللهِ اَنَتَوَضَّاُ مِنْ بِئْرِ بُضَاعَةَ وَهِيَ بِئْرِ يُّلْقى فِيْهَا الْحِيَضُ وَلُحُوْمُ الْكِلَابِ وَالنَّتْنُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ ﷺ اِنَّ الْمَاءَ طَهُوْرٌ لَا يُنَجِّسُه شَىْءٌ. رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وأَبُوْ دَاوٗدَ وَالنَّسَاۤئِىُّ

আবূ সা‘ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে একদিন) জিজ্ঞেস করা হলোঃ হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি ‘‘বুযা-‘আহ্’’ কূপের পানি দিয়ে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করতে পারি? কেননা এ কূপটিতে হায়যের নেঁকড়া, মরা কুকুর ও বিভিন্ন ধরনের দুর্গন্ধময় আবর্জনা ফেলা হয়। উত্তরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পানি পবিত্র। কোন জিনিসই সেটাকে নাপাক করতে পারে না।
(সহীহ : আহমাদ ২১০১, আবূ দাঊদ ৬৬, তিরমিযী ৬৬, নাসায়ী ৩২৬, ইরওয়া ১৪,মিশকাত ৪৭৮)

قال شيخ الإسلام ابن تيمية رحمه الله : " وَهَذَا اللَّفْظُ عَامٌّ فِي الْقَلِيلِ وَالْكَثِيرِ ، وَهُوَ عَامٌّ فِي جَمِيعِ النَّجَاسَاتِ.
وَأَمَّا إذَا تَغَيَّرَ بِالنَّجَاسَةِ : فَإِنَّمَا حُرِّمَ اسْتِعْمَالُهُ لِأَنَّ جِرْمَ النَّجَاسَةِ بَاقٍ ، فَفِي اسْتِعْمَالِهِ : اسْتِعْمَالُهَا؛ بِخِلَافِ مَا إذَا اسْتَحَالَتْ النَّجَاسَةُ ، فَإِنَّ الْمَاءَ طَهُورٌ وَلَيْسَ هُنَاكَ نَجَاسَةٌ قَائِمَةٌ".
 "مجموع الفتاوى" (21/33).
সারমর্মঃ  
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেন, 
কোনো জিনসই পানিকে নাপাক করতে পারেনা,এই বিধানটি ব্যাপক একটি বিধান।
অল্প পানির ক্ষেত্রেও,বেশি পানির ক্ষেত্রেও।
তবে নাপাকির দ্বারা পানির গুন পরিবর্তন হয়ে গেলে বিধান ভিন্ন হবে।
,
★সুতরাং উল্লেখিত মতানুসারে তাদের মতানুসারীগন সেই মত অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।     
,
(০২)
এক্ষেত্রে মহান আল্লাহ তায়ালা চাইলে সেই ব্যাক্তিকে ৫৫০ মিলি নাপাক বস্তু খাওয়ার হিসেব দিতে হবে।
বিষয়টি পুরোপুরি মহান আল্লাহর ফায়সালার উপর নির্ভরশীল।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 144 views
0 votes
1 answer 160 views
...