আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
386 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (84 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম,
আমার ননদকে আমি কয়েকদিন আগে ফোন দেই। এরপর কিছু কথার মধ্যে আমাকে একটু ভুল বোঝে। আমি বলছি একটা সে বোঝছে আরেকটা। যদিও সেটা তার দোষ না হয়তো।হয়ে গেছে।

কিন্তু এটা নিয়ে সে আমার শাশুড়ীকে বলার পর শাশুড়ি আমাকে অনেক কথা শোনায়।

__আমি কেন তার একমাত্র মেয়েকে এসব বলব। আগেও দেখছে কড়া কথা বলছি।আমি নাকি কড়া কথা বলি।তার একটা মাত্র মেয়ে।

আমি বোঝানোর পরও সে বোঝতেছিল না।

কিন্তু এইটুক বললেও হতো। সে আমাকে আরো বলে।

__আমি বিয়ের আগে কোন কাজই তেমন করিনি।যেহেতু বাবা মার একমাত্র মেয়ে আর পড়াশোনায় একটু ভালো ছিলাম।আমাকে কখনো তেমন কোন কাজ করতে হয়নি।

কিন্তু বিয়ের পর তো আর বসে থাকলে হয় না। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করি। আমি জানি সেটা হয়তোবা তাদের চাহিদা অনুযায়ী কম। কিন্তু আমিতো বসে থাকি না।কিছু না কিছু করিই। কখনো কাজের কথা কিছু বললেও না করিনা।

এখন আমি মোটামুটি বেশ কিছু রান্না পারি বা আদার্স কাজ করি।তাও তাদের পছন্দ না।

কিন্তু এই ঘটনার ভিত্তিতেই আমাকে অনেক কথা শুনাল। কয়দিন রান্না করে খাওয়াইছি, যে এসব বলব।হেন তেন।

অন্যজনের সাথে তুলনা দিল। কে কেমন কাজ করে।

অথচ আমার বিয়ের মাত্র ১ বছর ৪ মাস।

অথচ সেই বাসায় কাজ করতে আমার অনেক কষ্ট হয়ে যায়।যেহেতু কম পারি, যতটুকই করি আমার জন্য কষ্ট হয়ে যায়, তাওতো আমার সাধ্য অনুযায়ী করি।কিন্ত তারা মনে করে কিছুই করি নাই।

আর দেবর থাকাই পর্দা করে রান্নাঘরে কাজ করাও কষ্ট হয়ে যায়।

__তারপর এমন একটা কথা বললো। আমি তাজ্জব হয়ে গেলাম।

কোন শাশুড়ী তার ছেলের বৌকে এটা বলতে পারে কিনা আমার জানা নাই।

আমি আমার জামাই এর চাকরি সূত্রে এখন বেশিরভাগ সময় ঢাকা থাকি।

উনি বলতেছে, আমি নাকি কখনো ঢাকা থেকে কিছু আনিনা।ড্রেস বা কিছু। উনার বোনও নাকি এসব জিজ্ঞেস করে।এসব বললো।

আমার বিয়ে হয়ছে ১ বছর ৪ মাস মাত্র।

আর যেহেতু আমি জব করিনা,

ইনকাম শুধু আমার স্বামীর, কিছু দিলে তো আমার স্বামীই দিবে বা দায়িত্বও তার।

আমি কিভাবে দিব?

অথচ প্রতি ঈদেই আমার স্বামী বোনাসের বড় একটা অংশ তার বাবাকে দিয়ে দেয়।

ইভেন ঈদের আগে আমি বলছিও, আমরা কেনাকাটা করি সবার জন্য।কিন্তু আমার স্বামীই বলছে এখানে এটাই নিয়ম।

অথচ আমি জানি, আমার বিয়ের খরচ সব আমার স্বামীই করছে। আমার শশুড়বাড়ি থেকে কখনো কোন গয়নাও দেয়া হয়নাই। অথচ আমার বাড়ি থেকে অনেক গয়না দেওয়ার পরও এটা ওটা নিয়ে সমস্যা বের করছে।

কিন্তু তারা আমাকে কিছু না দিলেও এটা নিয়ে আমার অভিযোগ নাই।

কিন্তু আমি এতকিছু আনার পরও।

একটা ড্রেসের কথা এভাবে কিভাবে বলে??

আর আমার স্বামী আর আমি কি আলাদা? আমার স্বামী কিনাকাটার জন্য তো টাকা দিচ্ছেই।

আর কিছু না দিলেও, সেটা তো সে তার ছেলেকে বলবে।

ছেলের বৌকে কিভাবে বলে?? বা দোষ দেয়।

__তারপর বলতেছে, আমি নাকি তার খোজ নেই না।অথচ মাসে ৭ দিন কল দিলেও, ৬টা কলই থাকে আমার।১টা হয়তো তার থাকে এমন। আর আমার শশুড় আজকে ৩ মাস থেকে আমাকে কলই দেয় না। মাঝে মাঝে আমিই দিয়ে কথা বলি।আমিও কম দেই, কিন্তু দেই। কিন্তু এসব নিয়ে আমার অভিযোগ নেই, কিন্তু তারা যে অভিযোগ করে সেটা যে ভিত্তি হীন, সেটার জন্য বললাম।

আর সে অতটা বয়স্কাও না। যথেষ্ট শক্তিশালী। ইভেন আমার চেয়ে বেশি।

এইরকম কথা বার্তা নতুন না।

সুযোগ পেলেই আমাকে অনেক কথা শুনায়। আমি ঘরে পর্দা করি এটা নিয়েও আমি কম কথা শুনিনাই।

আমিওতো মানুষ, আমি প্রথম প্রথম চুপ থাকতাম।

এখন বেশি কিছু বললে, নিজের সাফাই গাই, লজিক্যালি বলি এইটা এমন।এই টাইপ।

কিন্তু তাদের দোষ নিয়ে বলি না।

কিন্তু আমার মনে হয় এভাবে বেশিদিন চলতে থাকলে আমিও  হয়তো একদিন তাদের দোষ বলা শুরু করতে পারি।কারন আমার মনে আক্ষেপ জন্ম নিছে।
প্রশ্ন ১: সেক্ষেত্রে আমি তাদের দোষ লজিক্যালি বললে কি গুনাহ হবে??

যেমন যদি বলে,

কিছু দাও না হেন তেন।

আমি যদি বলি, আপনারাও তো আমাকে কখনো কিছু দেননাই। অথচ আপ্নারাই তো বড়।আর আমার শশুড় এখনো চাকরি করে। তাহলে কেন আমার দেওয়া নেওয়া নিয়ে হিসেব করেন।

বা কাজ পারোনা, আমি যদি বলি, কাজ যতটুক পারি করি, কাজ না করার জন্য তো আর গুনাহ হবে না।

বা ফোন দাওনা,খোজ নাওনা। আমি যদি বলি,ফোন তো আমিই বেশি দেই। আপনারা তো মাসে একদিন দেন।

এভাবে বললে কি গুনাহ হবে??

আর আমি অনেক কষ্ট পাই এসবে।আমিওতো মানুষ।

কালকে আমি এতটাই কষ্ট পাইছি।এসব শুনে আমার জর এসে গেছে।

তাই আমি ভাবছি,

আমি প্রয়োজন ছাড়া তাদের সাথে খুব একটা কথাই বলব না।

আমি নিযে থেকে দরকার ছাড়া খুব একটা ফোন দিব না। তারা যদি ফোন দেয় কথা বলব। বা কখনো খুব প্রয়োজন হলে দিব হয়তো।যেমন অসুস্থতা।

আর যেহেতু আমার শশুড়বাড়ি আমাকে যেতেই হবে মাঝে মাঝে, সেখানেও আমি যতটুক সম্ভব কম মিশার চেষ্টা করব।

আমি আমার স্বামীকেও বলেছি, যেহেতু এখন আমি খোজ নিব না, তোমার বাবা মা ভাই বোনের খোজ তুমি বেশি নিবা।তোমার সাথে যেন তাদের কোন দূরত্ব সৃষ্টি না হয়।

(আসলে আমি এত কষ্ট আর নিতে পারছি না।

আর আমি আমার নিজের জবান নিয়েও ভয়ে আছি।)

প্রশ্ন ২ঃ এরকম করলে কি আমার গুনাহ হবে? বা আমি কি সঠিক সিদ্ধান্ত নিছি?


প্রশ্ন ৩ঃ এই ব্যাপারে আমি আমার কাছের মানুষদের সাথে যদি শেয়ার করি, পরামর্শ কিংবা কষ্ট লাগবের জন্য তাহলে কি আমার গীবত হবে?

যেমনঃ স্বামী,বাবা-মা,কাছের কোন বান্ধুবী।
by (597,330 points)
আপনি আসলে কি জানতে চান। যদি কষ্ট করে মূল জিনিষটা সংক্ষেপে লিখে দিতেন। জাযাকিল্লাহ। 

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-

(১)
https://www.ifatwa.info/430 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
শশুর-শাশুড়ীর খেদমত করতে যে সব স্বামীরা স্ত্রীর উপর আমানবিক নির্যাতন করে,তাদের জেনে রাখা উচিত -একেতো তাদের খেদমত স্ত্রীর উপর ওয়াজিব নয়!দ্বিতীয়ত শশুরের খেদমতে ফিতনার আশংকা আছে! তাই স্বামী নিজে আপন মাতা-পিতার খেদমত করবে অথবা পারিশ্রমিক দিয়ে করাবে।
স্ব ইচ্ছায় শাশুড়ীর খেদমত করা বধুর নৈতিক দায়িত্ব ,কিন্তু এক্ষেত্রে বধুর উপর কোন রকম চাপ প্রয়োগ করা যাবেনা,এবং বধুর খেদমতকে অনুগ্রহ বিবেচনা করাও শ্বাশুড়ীর নৈতিক দায়িত্ব।

মোটকথাঃ-
এককপরিবার ব্যবস্থা-ই ইসলামের মৌলিক ও মূল বিধান,তবে যৌথপরিবার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে নাজায়েযও বলা যাবে না।
আমাদের দেশে যেহেতু পূর্ব থেকেই  যৌথপরিবার ব্যবস্থা চলে আসছে, এবং এককপরিবার ব্যবস্থাকে মা-বাবা সহ অনেকেই মেনে নিতে পারেন না।এমনকি অনেকে এককপরিবার ব্যবস্থাকে কটাক্ষ করেন ও নিন্দা মনে করেন,তাই যৌথপরিবার ব্যবস্থাকে আমারা একেবারে বিসর্জন দিতে পারছিনা। তবে যৌথপরিবারে  যাতে শরীয়তের কোনো বিধি-বিধান লঙ্ঘন না হয়, সেদিকে তীক্ষ্ণদৃষ্টি অত্যান্ত গুরুত্বতার সাথে রাখতে হবে, আল্লাহ না করুক যদি কোনো অঘটন ঘটে যায়,সেক্ষেত্রে সমস্ত দায়-দায়িত্ব কিন্তু আপনার-ই থাকবে।
যখন আমাদের সমাজ এককপরিবার ব্যবস্থাকে মেনে নিবে তখন সেটাই একমাত্র মঙ্গলজনক ও নিরাপদ পরিবার ব্যবস্থা হবে।(শেষ)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
শশুড় শাশুড়ি কে নিজ পক্ষ্য থেকে কিছু দান করা,হাদিয়া প্রদান করাতো উত্তম ও প্রশংসনীয় কাজ।তবে এরজন্য তারা ছেলে বউয়ের উপর কোনো প্রকার চাপ প্রয়োগ করতে পারবেন না।চাপ প্রয়োগ করা কখনো জায়েয হবে না।

তারা মুরব্বি হিসেবে তাদের খোজখবর নিবেন।তবে তাদের খেদমত আপনার স্বামীর উপর ওয়াজিব হলেও আপনার উপর ওয়াজিব নয়।


(২)

স্বামীর আত্মীয়র খোঁজখবর স্বামীই নিবে।আপনার উপর অত্যাবশ্যকীয় নয়। হ্যা, আপনি যদি নিজ পক্ষ্য স্বামীর দায়িত্বকে আদায় করে নেন, তাহলে সেটা কতইনা উত্তম।

(৩)

ধর্য্য ধরবেন।কারো সাথে শেয়ার করবেন না।যেহেতু আপনার উপর অযথা চাপ দেয়া হচ্ছে, তাই আপনি পরামর্শের নিয়তে কারো কাছে উল্লেখ করতে পারবেন,তবে তার বদনাম করার উদ্দেশ্যে আপনি কারো কাছে কিছুই বলতে পারবেন না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...