আসসালামু আলাইকুম,
আমার ননদকে আমি কয়েকদিন আগে ফোন দেই। এরপর কিছু কথার মধ্যে আমাকে একটু ভুল বোঝে। আমি বলছি একটা সে বোঝছে আরেকটা। যদিও সেটা তার দোষ না হয়তো।হয়ে গেছে।
কিন্তু এটা নিয়ে সে আমার শাশুড়ীকে বলার পর শাশুড়ি আমাকে অনেক কথা শোনায়।
__আমি কেন তার একমাত্র মেয়েকে এসব বলব। আগেও দেখছে কড়া কথা বলছি।আমি নাকি কড়া কথা বলি।তার একটা মাত্র মেয়ে।
আমি বোঝানোর পরও সে বোঝতেছিল না।
কিন্তু এইটুক বললেও হতো। সে আমাকে আরো বলে।
__আমি বিয়ের আগে কোন কাজই তেমন করিনি।যেহেতু বাবা মার একমাত্র মেয়ে আর পড়াশোনায় একটু ভালো ছিলাম।আমাকে কখনো তেমন কোন কাজ করতে হয়নি।
কিন্তু বিয়ের পর তো আর বসে থাকলে হয় না। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করি। আমি জানি সেটা হয়তোবা তাদের চাহিদা অনুযায়ী কম। কিন্তু আমিতো বসে থাকি না।কিছু না কিছু করিই। কখনো কাজের কথা কিছু বললেও না করিনা।
এখন আমি মোটামুটি বেশ কিছু রান্না পারি বা আদার্স কাজ করি।তাও তাদের পছন্দ না।
কিন্তু এই ঘটনার ভিত্তিতেই আমাকে অনেক কথা শুনাল। কয়দিন রান্না করে খাওয়াইছি, যে এসব বলব।হেন তেন।
অন্যজনের সাথে তুলনা দিল। কে কেমন কাজ করে।
অথচ আমার বিয়ের মাত্র ১ বছর ৪ মাস।
অথচ সেই বাসায় কাজ করতে আমার অনেক কষ্ট হয়ে যায়।যেহেতু কম পারি, যতটুকই করি আমার জন্য কষ্ট হয়ে যায়, তাওতো আমার সাধ্য অনুযায়ী করি।কিন্ত তারা মনে করে কিছুই করি নাই।
আর দেবর থাকাই পর্দা করে রান্নাঘরে কাজ করাও কষ্ট হয়ে যায়।
__তারপর এমন একটা কথা বললো। আমি তাজ্জব হয়ে গেলাম।
কোন শাশুড়ী তার ছেলের বৌকে এটা বলতে পারে কিনা আমার জানা নাই।
আমি আমার জামাই এর চাকরি সূত্রে এখন বেশিরভাগ সময় ঢাকা থাকি।
উনি বলতেছে, আমি নাকি কখনো ঢাকা থেকে কিছু আনিনা।ড্রেস বা কিছু। উনার বোনও নাকি এসব জিজ্ঞেস করে।এসব বললো।
আমার বিয়ে হয়ছে ১ বছর ৪ মাস মাত্র।
আর যেহেতু আমি জব করিনা,
ইনকাম শুধু আমার স্বামীর, কিছু দিলে তো আমার স্বামীই দিবে বা দায়িত্বও তার।
আমি কিভাবে দিব?
অথচ প্রতি ঈদেই আমার স্বামী বোনাসের বড় একটা অংশ তার বাবাকে দিয়ে দেয়।
ইভেন ঈদের আগে আমি বলছিও, আমরা কেনাকাটা করি সবার জন্য।কিন্তু আমার স্বামীই বলছে এখানে এটাই নিয়ম।
অথচ আমি জানি, আমার বিয়ের খরচ সব আমার স্বামীই করছে। আমার শশুড়বাড়ি থেকে কখনো কোন গয়নাও দেয়া হয়নাই। অথচ আমার বাড়ি থেকে অনেক গয়না দেওয়ার পরও এটা ওটা নিয়ে সমস্যা বের করছে।
কিন্তু তারা আমাকে কিছু না দিলেও এটা নিয়ে আমার অভিযোগ নাই।
কিন্তু আমি এতকিছু আনার পরও।
একটা ড্রেসের কথা এভাবে কিভাবে বলে??
আর আমার স্বামী আর আমি কি আলাদা? আমার স্বামী কিনাকাটার জন্য তো টাকা দিচ্ছেই।
আর কিছু না দিলেও, সেটা তো সে তার ছেলেকে বলবে।
ছেলের বৌকে কিভাবে বলে?? বা দোষ দেয়।
__তারপর বলতেছে, আমি নাকি তার খোজ নেই না।অথচ মাসে ৭ দিন কল দিলেও, ৬টা কলই থাকে আমার।১টা হয়তো তার থাকে এমন। আর আমার শশুড় আজকে ৩ মাস থেকে আমাকে কলই দেয় না। মাঝে মাঝে আমিই দিয়ে কথা বলি।আমিও কম দেই, কিন্তু দেই। কিন্তু এসব নিয়ে আমার অভিযোগ নেই, কিন্তু তারা যে অভিযোগ করে সেটা যে ভিত্তি হীন, সেটার জন্য বললাম।
আর সে অতটা বয়স্কাও না। যথেষ্ট শক্তিশালী। ইভেন আমার চেয়ে বেশি।
এইরকম কথা বার্তা নতুন না।
সুযোগ পেলেই আমাকে অনেক কথা শুনায়। আমি ঘরে পর্দা করি এটা নিয়েও আমি কম কথা শুনিনাই।
আমিওতো মানুষ, আমি প্রথম প্রথম চুপ থাকতাম।
এখন বেশি কিছু বললে, নিজের সাফাই গাই, লজিক্যালি বলি এইটা এমন।এই টাইপ।
কিন্তু তাদের দোষ নিয়ে বলি না।
কিন্তু আমার মনে হয় এভাবে বেশিদিন চলতে থাকলে আমিও হয়তো একদিন তাদের দোষ বলা শুরু করতে পারি।কারন আমার মনে আক্ষেপ জন্ম নিছে।
প্রশ্ন ১: সেক্ষেত্রে আমি তাদের দোষ লজিক্যালি বললে কি গুনাহ হবে??
যেমন যদি বলে,
কিছু দাও না হেন তেন।
আমি যদি বলি, আপনারাও তো আমাকে কখনো কিছু দেননাই। অথচ আপ্নারাই তো বড়।আর আমার শশুড় এখনো চাকরি করে। তাহলে কেন আমার দেওয়া নেওয়া নিয়ে হিসেব করেন।
বা কাজ পারোনা, আমি যদি বলি, কাজ যতটুক পারি করি, কাজ না করার জন্য তো আর গুনাহ হবে না।
বা ফোন দাওনা,খোজ নাওনা। আমি যদি বলি,ফোন তো আমিই বেশি দেই। আপনারা তো মাসে একদিন দেন।
এভাবে বললে কি গুনাহ হবে??
আর আমি অনেক কষ্ট পাই এসবে।আমিওতো মানুষ।
কালকে আমি এতটাই কষ্ট পাইছি।এসব শুনে আমার জর এসে গেছে।
তাই আমি ভাবছি,
আমি প্রয়োজন ছাড়া তাদের সাথে খুব একটা কথাই বলব না।
আমি নিযে থেকে দরকার ছাড়া খুব একটা ফোন দিব না। তারা যদি ফোন দেয় কথা বলব। বা কখনো খুব প্রয়োজন হলে দিব হয়তো।যেমন অসুস্থতা।
আর যেহেতু আমার শশুড়বাড়ি আমাকে যেতেই হবে মাঝে মাঝে, সেখানেও আমি যতটুক সম্ভব কম মিশার চেষ্টা করব।
আমি আমার স্বামীকেও বলেছি, যেহেতু এখন আমি খোজ নিব না, তোমার বাবা মা ভাই বোনের খোজ তুমি বেশি নিবা।তোমার সাথে যেন তাদের কোন দূরত্ব সৃষ্টি না হয়।
(আসলে আমি এত কষ্ট আর নিতে পারছি না।
আর আমি আমার নিজের জবান নিয়েও ভয়ে আছি।)
প্রশ্ন ২ঃ এরকম করলে কি আমার গুনাহ হবে? বা আমি কি সঠিক সিদ্ধান্ত নিছি?
প্রশ্ন ৩ঃ এই ব্যাপারে আমি আমার কাছের মানুষদের সাথে যদি শেয়ার করি, পরামর্শ কিংবা কষ্ট লাগবের জন্য তাহলে কি আমার গীবত হবে?
যেমনঃ স্বামী,বাবা-মা,কাছের কোন বান্ধুবী।