بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
ইসলামের মৌলিক একটি আকিদা হল, জান্নাতের যাওয়ার জন্য ঈমান পূর্বশর্ত। সুতরাং কোনো কাফির-মুশরিক বা বিধর্মী জান্নাতে যাবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّ اللّهَ لاَ يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَن يَشَاء وَمَن يُشْرِكْ بِاللّهِ فَقَدِ افْتَرَى إِثْمًا عَظِيمًا
নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল। (সুরা নিসা ৪৮ )
তাফসিরে খাযিনে এসেছে,
ومعنى الآية أن الله لا يغفر لمشرك مات على شركه ويغفر ما دون ذلك لمن يشاء يعني ويغفر ما دون الشرك لمن يشاء من أصحاب الذنوب والآثام. ففي الآية دليل على أن صاحب الكبيرة إذا مات من غير توبة فإنه في خطر المشيئة إن شاء عفا عنه وأدخله الجنة بمنه وكرمه وإن شاء عذبه بالنار ثم أدخله برحمته وإحسانه لأن الله تعالى وعد المغفرة لما دون الشرك فإن مات على الشرك فهو مخلد في النار لقوله تعالى إن الله لا يغفر أن يشرك به ويغفر ما دون ذلك لمن يشاء
আয়াতের মর্মার্থ হল, নিশ্চয় আল্লাহ ওই মুশরিককে ক্ষমা করেন না, যে শিরকের উপর মারা গিয়েছে। তিনি শিরকের চাইতে নিম্ন পর্যায়ের গুনাহ গুনাহগারদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা ক্ষমা করেন। উক্ত আয়াত প্রমাণ করে যে, গুনাহগারব্যক্তি তাওবা ছাড়া মারা গেলে তার বিষয়টি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছাধীন—তিনি চাইলে তাকে ক্ষমা করে দিবেন এবং দয়া করে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন; আর চাইলে তাকে শাস্তিও দিতে পারেন এবং অবশেষে দয়া করে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমার প্রতিশ্রুতি শুধুমাত্র শিরক থেকে নিম্ন পর্যায়ের গুনাহর জন্য। সুতরাং কোনো ব্যক্তি শিরকের সঙ্গে মারা গেলে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। (তাফসিরে খাযিন ১/৩৮৭)
এজন্য আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেছেন,
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَالْمُشْرِكِينَ فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا أُولَئِكَ هُمْ شَرُّ الْبَرِيَّةِ
আহলে-কিতাব ও মুশরেকদের মধ্যে যারা কাফের, তারা জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে থাকবে। তারাই সৃষ্টির অধম। (সুরা বাইয়্যেনাহ ৬)
হাদিসে এসেছে,
ثُمَّ أَمَرَ بِلَالًا فَنَادَى فِي النَّاسِ ، أَنَّهُ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلَّا نَفْسٌ مُسْلِمَةٌ
অতপর রাসূলুল্লাহ ﷺ বেলাল রাযি.-কে নির্দেশ দিলেন। তাই তিনি লোকদের মাঝে ঘোষণা দিলেন, জান্নাতে কেবল মুসলিম ব্যক্তিই প্রবেশ করবে। (বুখারী ২৮৯৭ মুসলিম ১৬৬)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, لَا تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না।(মুসলিম ৮৪ আবু দাঊদ ৫১৯৩)
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনি বোন /ভাই!
শির্ক বা কুফরের উপর যারা মারা যাবে তারা চিরকাল জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে। একমুহূর্তের জন্যও তারা জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে না। আর যারা ঈমানের হালতে মৃত্যু বরণ করবে তারা জান্নাতে যাবে।যদি তারা কোন গুনাহ করে থাকে তাহলে তারা স্বীয় গুনাহের শাস্তি ভোগ করে কোন না কোন সময় অবশ্যই জান্নাতে যাবে। কুরআন ও হাদীসের অসংখ্য দলীল দ্বারা তা প্রমাণিত। সুতরাং উক্ত বিষয়কে যদি কেউ অস্বীকার করে তাহলে সে নিজেকে কখনই পূর্ণ ঈমানদার হিসেবে দাবি করার অধিকার রাখে না।