দ্বীন-শরীয়ত সম্পর্কে জানার আগ্রহ দেখে এবং i.o.m এর প্রতি আশ্বস্ত দেখে আমরা যারপরনাই আনন্দিত।আল্লাহ পাক আপনাকে দ্বীনের উপর সর্বদা অঠল-অবিচল থাকার তৌফিক দান করুক।আ'মলী জিন্দেগি গঠন করার তৌফিক দান করুক।সেই প্রত্যাশা ও কামনা আমরা হৃদয়ে লালন করি ।
ইনশা আল্লাহ উত্তরের প্রস্তুতি চলছে...
ইনশা আল্লাহ উত্তরের প্রস্তুতি চলছে...
জবাবঃ-
(১)
নামাযের যে সমস্ত দু'আ রয়েছে।এর মধ্যে তাশাহুদ আর কুনুত হল,ওয়াজিব।বাকীগুলো সুন্নত।
সুতরাং এই সুন্নত দু'আ গুলোর মধ্যে একটির স্থলে অন্যটি পড়ে নিলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না।ঠিকতেমনিভাবে,সুন্নত দু'আ গুলির স্থলে ওয়াজিব দু'আ গুলিকে কেউ পড়ে নিলে,তাতেও সাহু সিজদা আসবে না।সুন্নত দু'আ গুলির স্থলে কেউ কেরাত পড়ে নিলে তাতেও সাহু সিজদা আসবে না।তবে ওয়াজিব দু'আ গুলির স্থলে সুন্নত দু'আ পড়ে নিলে,সাহু সিজদা আসবে।এবং কেরাতের স্থলে দু'আ পড়লে,চায় সুন্নত দু'আ হোক বা ওয়াজিব দু'আ হোক।সর্বাবস্থায় সাহু সিজদা আসবে।তবে শুধুমাত্র
প্রথম রাকাতে সূরায়ে ফাতেহার স্থলে আত্তাহিয়্যাতু বা অন্য কোনো দু'আ পড়লে,তখন সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না।তবে দ্বিতীয় রাকাতে হলে সাহু আসবে।
(২)
বিতিরের সালাত তিন রাকাত।এক সালামেই তিন রাকাত ওয়াজিব।
বিতির নামায সম্পর্কে পাকিস্তানের বিশিষ্ট গবেষক আলেম মাওলানা মুহাম্মাদ ইউসুফ লুধিয়ানভী রাহ.
'হাদীস ও আছারের আলোকে বিতর নামায'
শীর্ষক একটি ফেকহী মাক্বালা লিখেছেন- যা মাসিক আল-কাউছারে প্রকাশ করা হয়েছে।উনি এ সম্পর্কিয় যাবতীয় বিষয়বস্তুকে একজায়গায় একত্র করেছেন।তাই এ বিষয়ে নতুন করে লিখার কোনো প্রয়োজন নাই।
নিম্নে উনার মাক্বালাকে উপস্থাপন করছি-
প্রশ্ন : বিতরের নামাযে দুই রাকাতের পর আত্তাহিয়্যাতুর জন্য বসা এবং তৃতীয় রাকাতে ফাতিহা-কিরাতের পর আল্লাহু আকবার বলে দুই হাত কান পর্যন্ত ওঠানো অতঃপর হাত বেঁধে কুনূত পাঠ করা কি দলীল দ্বারা প্রমাণিত?
অথচ হযরত আয়েশা রা.-এর বিশুদ্ধ বিবরণে আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তিন রাকাত, পাঁচ রাকাত বা সাত রাকাত বিত্র পড়তেন তখন দুই রাকাতের পর আত্তাহিয়্যাতুর জন্য বসতেন না। তদ্রূপ বিতর নামায এক রাকাত পড়াও হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।
আশা করি বিষয়টি পরিষ্কার করবেন। পাশাপাশি আরো জানতে চাই যে, কুনূত পাঠের সময় দুই হাত দোয়ার মতো ওঠাবে, না নামাযের মতো হাত বেঁধে রাখবে?
হাদীস শরীফের আলোকে সমাধান প্রদান করে কৃতজ্ঞ করবেন।
উত্তর : আপনি বিতর নামাযের বেশ কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। বিষয়গুলি হচ্ছে :
১. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বিতরের নামায তিন রাকাতই পড়তেন, না এক রাকাত, পাঁচ রাকাত বা সাত রাকাতও পড়তেন?
২. বিতরের দ্বিতীয় রাকাতে বৈঠক করতেন, না সরাসরি তৃতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যেতেন?
৩. কুনূত পাঠের পূর্বে কি আল্লাহু আকবার বলে হাত ওঠাতেন?
৪. দুআয়ে কুনূত হাত বেঁধে পাঠ করতেন, না দোয়ার মতো হাত তুলে পাঠ করতেন?
ধারাবাহিকভাবে প্রতিটির উত্তর লিখছি।
১. বিতরের রাকাত-সংখ্যা
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতরের নামায তিন রাকাত পড়তেন, এক রাকাত পড়া প্রমাণিত নয়। তদ্রূপ যেসব রেওয়ায়েতে তিন রাকাতের অধিক, যথা পাঁচ, সাত বা নয় রাকাত পড়ার কথা বলা হয়েছে সেখানেও মূল বিতর তিন রাকাত। বর্ণনাকারী পূর্বের বা পরের রাকাতসমূহ মিলিয়ে সমষ্টিকে ‘বিতর’ বলে বর্ণনা করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিতর নামায তিন রাকাত পড়তেন তা নীচের হাদীসসমূহ দ্বারা প্রমাণিত।
১. আবু সালামা ইবনে আবদুর রহমান উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. কে জিজ্ঞাসা করেন, ‘রমযানুল মুবারকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নামায কীরূপ হত?’ উম্মুল মুমিনীন বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে ও রমযানের বাইরে এগারো রাকাতের বেশি পড়তেন না। প্রথমে চার রাকাত পড়তেন-এত সুন্দর ও দীর্ঘ সে নামায, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। অতঃপর চার রাকাত পড়তেন-এরও দীর্ঘতা ও সৌন্দর্য সম্পর্কে জানতে চেয়ো না। এরপর তিন রাকাত পড়তেন।
’ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺳﻠﻤﺔ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺃﻧﻪ ﺳﺄﻝ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﻛﻴﻒ ﻛﺎﻥ ﺻﻼﺓ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻲ ﺭﻣﻀﺎﻥ؟ ﻗﺎﻟﺖ ﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﺰﻳﺪ ﻓﻲ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﻭﻻ ﻓﻲ ﻏﻴﺮﻩ ﻋﻠﻰ ﺇﺣﺪﻯ ﻋﺸﺮﺓ ﺭﻛﻌﺔ، ﻳﺼﻠﻲ ﺃﺭﺑﻌﺎ ﻓﻼ ﺗﺴﺄﻝ ﻋﻦ ﺣﺴﻨﻬﻦ ﻭﻃﻮﻟﻬﻦ، ﺛﻢ ﻳﺼﻠﻲ ﺃﺭﺑﻌﺎ ﻓﻼ ﺗﺴﺄﻝ ﻋﻦ ﺣﺴﻨﻬﻦ ﻭﻃﻮﻟﻬﻦ ﺛﻢ ﻳﺼﻠﻲ ﺛﻼﺛﺎ .
(সহীহ বুখারী ১/১৫৪; সহীহ মুসলিম ১/২৫৪; সুনানে নাসায়ী ১/২৪৮; সুনানে আবু দাউদ ১/১৮৯; মুসনাদে আহমদ ৬/৩৬)
(৩)
কাযা নামাযের কোনো ওয়াক্ত নাই।তিন হারাম সময় ব্যতীত যেকোনো সময় পড়া যাবে।
সুতরাং বিতিরের আগে বা পরে, যেকোনো সময় কাযা নামায পড়া যাবে।