আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
162 views
in সালাত(Prayer) by (61 points)

আসসালামু আলাইকুম। 

১) সাহু সিজদা দেওয়ার কারণ সংঘটিত হয়েছিল কিন্তু সাহু সিজদা দেয়নি; এদিকে সেই ওয়াক্ত/ওয়াক্তসমূহের সময় পার হয়ে গেছে, এমন সালাতগুলোর কি কাজা আদায় করতে হবে? 

২) মাসজিদুল হারামে কি নিষিদ্ধ সময়েও (সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত, দ্বিপ্রহর) সালাত আদায় করা যায়?

৩) এক ব্যক্তি না জানার কারণে মাসবুক হলে প্রথম দুই রাকাতের এক বা উভয় রাকাত মিস করে ইমামের সালাম ফেরানোর শেষে একা একা মিস হওয়া রাকাতগুলো পড়ার সময় সূরা ফাতিহার পরে অন্য সূরা মিলায়নি। এটা তার জীবনের দীর্ঘ সময় ধরে হয়েছে। এখন কি সেসব সালাতগুলো আবারো পড়তে হবে?

৪) গোসল ফরজ হয়েছে, কিন্তু ওয়াক্তের শেষ সময়ে এসে গোসল করে সালাত আদায়ের সময়টুকু অবশিষ্ট নেই, এমতাবস্থায় করণীয় কী?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

শরীয়তের বিধান হলো  সেজদায়ে সাহু যদি ভুলে যায়,তাহলে উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করা ওয়াজিব। 

ওয়াক্ত শেষ হয়ে গেলে পুনরায়  পড়তে হয় না এমন একটি কওল রয়েছে। তবে রাজেহ তথা প্রাধান্য পাওয়া বক্তব্য হল, পুনরায় পড়তে হবে। ওয়াক্ত থাকুক বা না থাকুক। সতর্কতা এর মাঝেই।

وقد علمت ايضا ترجيح القول بالوجوب فيكون المرجح وجوب الإعادة فى الوقت وبعده (رد المحتار-3/532

ওয়াক্ত মাঝেই হোক বা পরেই হোক,রাজেহ কওল হলো উক্ত নামাজ পুনরায় আদায় করা ওয়াজিব।  

নামাযে যেকোনো ভুলের কারণে সেজদা সাহু ওয়াজিব হয়ে যায় না। বরং ভুলে নামাযের কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে কিংবা কোনো ফরয বা ওয়াজিব বিলম্বিত হলে ওয়াজিব হয়। আর যদি ভুলে কোনো ফরয ছুটে যায়, তবে সেজদা সাহু করা যথেষ্ট নয়, বরং পুনরায় নামায আদায় করতে হবে। আর কোনো সুন্নত বা মুস্তাহাব ছুটে গেলে সেজদা সাহু করার বিধান নেই। 

হাদীস শরীফে এসেছে   

حدثنا عبد الله بن يوسف، أخبرنا مالك بن أنس، عن ابن شهاب، عن عبد الرحمن الأعرج، عن عبد الله بن بحينة رضي الله عنه، أنه قال: صلى لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم ركعتين من بعض الصلوات، ثم قام فلم يجلس، فقام الناس معه، فلما قضى صلاته ونظرنا تسليمه كبر قبل التسليم، فسجد سجدتين وهو جالس، ثم سلم.

আবদুল্লাহ ইবনে বুহায়না রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক নামায আমাদের দুই রাকাত পড়ান। তারপর না বসে দাঁড়িয়ে যান। মুকতাদীরাও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে যায়। যখন তিনি নামায পূর্ণ করলেন এবং আমরা তাঁর সালাম ফিরানোর অপেক্ষা করছিলাম তখন সালাম ফিরানোর আগে তাকবীর দিলেন এবং বসা অবস্থায় দুটি সেজদা করলেন। তারপর সালাম ফিরালেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১২২৪

আরো দ্রষ্টব্য : সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৭০

সেজদায়ে সাহু কখন ওয়াজিব হয়,বিস্তারিত জানুনঃ

https://ifatwa.info/2982/

https://ifatwa.info/4486/ 

তিন সময়ে নামাজ পড়তে হাদীস শরীফে নিষেধ করা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ الصُّنَابِحِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الشَّمْسُ تَطْلُعُ وَمَعَهَا قَرْنُ الشَّيْطَانِ فَإِذَا ارْتَفَعَتْ فَارَقَهَا فَإِذَا اسْتَوَتْ قَارَنَهَا فَإِذَا زَالَتْ فَارَقَهَا فَإِذَا دَنَتْ لِلْغُرُوبِ قَارَنَهَا فَإِذَا غَرَبَتْ فَارَقَهَا " . وَنَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الصَّلاَةِ فِي تِلْكَ السَّاعَاتِ .

আবদুল্লাহ সুনাবিহী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনসুর্য শয়তানের দুই শিঙের মধ্য দিয়ে উদিত হয়। যখন সুর্য উপরে উঠেতখন শয়তান তা থেকে দুরে সরে যায়। আবার যখন সুর্য মাথার উপর আসেতখন শয়তান এসে মিলিত হয়। আবার ঢলে পড়লে পৃথক হয়ে যায়। আবার যখন সুর্য অস্তগমনের নিকটবর্তী হয়তখন শয়তান মিলিত হয় এবং যখন সুর্য অস্তমিত হয়তখন শয়তান সরে যায়। এ জন্যই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ তিন সময় সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন ( সুনান আন-নাসায়ী ,৫৬০)

 

অন্য হাদীসে এসেছে-

عَنْ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ الْجُهَنِيَّ، يَقُولُ ثَلاَثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْهَانَا أَنْ نُصَلِّيَ فِيهِنَّ أَوْ نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ حَتَّى تَمِيلَ وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى تَغْرُبَ .

উকবা ইবনু আমির জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনতিনটি সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সালাত আদায় করতে ও মৃত ব্যাক্তিকে কবরস্থ করতে নিষেধ করেছেন (১) যখন সুর্য আলোকিত হয়ে উদয় হয়যাবৎ না ঊর্ধাকাশে উঠে; (২) যখন দ্বিপ্রহর হয়যাবৎ না সুর্য হেলে পড়ে আর (৩) যখন সুর্য অস্ত যাওয়ার উপক্রম হয়যাবৎ না সম্পূর্ণ অস্ত যায়। ( সুনান আন-নাসায়ী ,৫৬১)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


১. রাজেহ তথা প্রাধান্য পাওয়া বক্তব্য হল, পুনরায় উক্ত নামাজগুলো কাযা করতে হবে। আর এর মধ্যেই সতর্কতা রয়েছে।

২. হ্যাঁ, মাসজিদুল হারামেও নিষিদ্ধ সময়ে সালাত আদায় করা যাবে না।

৩. যেহেতু প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার পরে অন্য সূরা মিলানো ওয়াজিব ছিলো, আর তা তরক হয়েছে। কিন্তু সাহু সেজদা দেওয়া হয়নি। তাই উক্ত নামাজগুলো আবার কাযা করতে হবে। আর এর মধ্যেই সতর্কতা রয়েছে। উল্লেখ্য যে, এমন কত ওয়াক্ত হয়েছে  তা অনুমান করে কাযা আদায় করতে হবে।

৪. তার করণীয় হলো যে, সে প্রথমে গোসল করবে। অত:পর যদি ওয়াক্ত পার হয়ে যায় তাহলে উক্ত নামাজ কাযা আদায় করবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 180 views
...