আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
202 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (65 points)
আসসালামু'য়ালাইকুম আমার প্রশ্ন টি হল আমি আমার কলেজের লাইব্রেরী থেকে একটি বই নিয়েছিলাম যে বইয়ের জরিমানা এখন দুইগুণ দাম পরিশোধ করতে হচ্ছে কারণ বইটি আমি হারিয়ে ফেলেছি।বইটি যখন নেই তখন লাইব্রেরী কার্ডে এরকম কোনো চুক্তি ছিল কিনা আমার মনে পড়ছে না তবে এরকম চুক্তি ছিল যে বইটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে এক টাকা করে জরিমানা হবে।সে হিসেব করলে এতদিনে তিন-চারগুণ দাম হয়ে যাওয়ার কথা।
এখন কি ডবল দাম দেয়া সুদের অন্তভূর্ক্ত হবে?

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মালি জরিমানা অর্থাৎ টাকা বা কোনো কিছু জরিমানা হিসেবে নেওয়া বৈধ নয়। 

(কিতাবুন নাওয়াজেল ১০/২০৩.ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ ১৪/১৩৫.কিফায়াতুল মুফতী ২/১৬৬)

 

মূল বিধান হচ্ছে–

এক মুসলমানের জন্য অন্য মুসলমানের সম্পদকে অন্যায়ভাবে গ্রহণ করা হারাম।যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:

قَالَ: «فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ، وَأَمْوَالَكُمْ، وَأَعْرَاضَكُمْ، بَيْنَكُمْ حَرَامٌ، كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا، فِي شَهْرِكُمْ هَذَا، فِي بَلَدِكُمْ هَذَا، لِيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ الغَائِبَ، فَإِنَّ الشَّاهِدَ عَسَى أَنْ يُبَلِّغَ مَنْ هُوَ أَوْعَى لَهُ مِنْهُ»

নিশ্চয় তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-সম্পদ, তোমাদের ইজ্জত-আব্রু তোমাদের পরস্পরের জন্য হারাম (পবিত্র) যেমনিভাবে তোমাদের এই দিনটি তোমাদের এই মাসে ও এই দেশে হারাম (পবিত্র)। এখানে উপস্থিত ব্যক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির নিকট এসব কথা পৌঁছে দেয়।”[সহিহ বুখারী (৬৭) ও সহিহ মুসলিম (১৬৭৯)]

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

عن أبي حرۃ الرقاشي عن عمہ رضي اللّٰہ عنہ قال: قال رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم: لا یحل مال إمرء مسلم إلا بطیب نفس منہ۔ (مسند أحمد ۵؍۷۲، شعب الإیمان للبیہقي ۲؍۷۶۹، مشکاۃ المصابیح ۲۵۵، مرقاۃ المفاتیح ۳؍۳۵۰)

রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন কাহারো সন্তুষ্টি চিত্ত ব্যাতিরেকে তার সম্পদ ব্যবহার হালাল হতে পারেনা।

নাজায়েজ।        

 

والحاصل أن المذہب عدم التعزیر بأخذ المال۔ (شامي / باب التعزیر، مطلب في التعزیر بأخذ المال ۶؍۱۰۶ زکریا)

সম্পদের মাধ্যমে জরিমানা নেওয়া যাবেনা।

 

لا یجوز لأحد من المسلمین أخذ مال أحد بغیر سبب شرعي۔ (شامي / باب التعزیر، مطلب في التعزیر بأخذ المال ۶؍۱۰۶ زکریا) 

শরীয়ত সম্মত কারন ব্যাতিত কাহারো থেকে  সম্পদ গ্রহন করা জায়েজ নেই।  

 

সৌদী আরবের ফাতাওয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, এক গোত্রের কিছু লোক এই মর্মে একমত হয়েছে যে, যে ব্যক্তি কিছু কিছু বিষয়ে লিপ্ত হবে তার উপরে কিছু আর্থিক জরিমানা ধার্য করা কি জায়েয হবে?

জবাবে তাঁরা বললেন: “এ ধরণের পদক্ষেপ নাজায়েয। কেননা এটি এমন লোকদের পক্ষ থেকে আর্থিক জরিমানা ধার্য করা, যারা আইনগতভাবে (শরিয়ত মোতাবেক) সে ক্ষমতা রাখে না। বরং এ ক্ষমতার অধিকারী হচ্ছে- বিচার বিভাগ। তাই, এ ধরণের জরিমানা প্রত্যাহার করা কর্তব্য।”[ফাতাওয়াল লাজনাহ্ আদ্ দায়িমা (১৯/২৫২)] আল্লাহ্ই সর্বজ্ঞ।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী উক্ত বইয়ের ক্ষতি পূরণ আপনাকে দিতে হবে আর তা হলো বইটির বাজার মূল্য । ডাবল মূল্য নয়। তাই ডাবল মূল্য নেওয়া কর্তৃপক্ষের জন্য জায়েজ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...