আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
590 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ।
আমি মাঝে মাঝে ডাইরি লিখি। এসব ডাইরি কেউ পড়ে না। মাঝে মাঝে আমার ছোট ভাই পড়ে। আর মা বাবা পড়লেও কোনো সমস্যা নেই। কারণ সেখানে খারাপ কিছু লেখা নেই। সেখানে আমি দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা, সুন্দর স্মৃতি, কষ্টের স্মৃতি, নতুন কোনো আমল, কুরআনের বিভিন্ন আয়াত, সুন্দর কোনো হাদিস, সুন্দর কোনো বইয়ের রিভিউ এসব নিয়ে লিখি, যা যেকোনো কেউ পড়তে পারবে। দেশে ঘটে যাওয়া বিস্ময়কর ঘটনা নিয়েও লিখি। ছোট ভাই কিংবা বান্ধবীরা খুব বেশি আঘাত দিলে সেটাও লিখি তবে খুব কম।

১. আমার প্রশ্ন হলো ইসলামে ডাইরি লেখার কোনো আলাদা বিধান আছে কি? এভাবে ডাইরি লিখলে কি কোনো সমস্যা হবে বা কোনো কিছু বাদ দিতে হবে? আমি প্রতিদিন লিখি না। মাঝে মধ্যে লিখি।

২. বাসার দেয়ালে কি বিভিন্ন দুআ দরুদ কাগজে লিখে ঝুলিয়ে রাখা যাবে?  যেন সেখানে চোখ পড়লেই সেটা পড়া যায়? এভাবে পড়ার টেবিলের উপরে ছবির ফ্রেমে ছবি না রেখে কোনো হাদিস লিখে রাখা যাবে কি??
জাযাকাল্লাহ খায়ের শায়েখ।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم  
,
(০১) কেহ যদি নিয়মিত ডায়েরি লেখে তাহলে সে অনেক ফায়েদা পাবে। 
★ ভুল শোধরানো যায় : 
কোনো মানুষই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। প্রত্যেকটা মানুষই জীবনে কোনো না কোনো ভুল করে থাকে। নিজের কর্মকান্ড নিয়মিত ডায়েরিতে লিখে রাখলে নিজের ভুলগুলোতে আলোকপাত করা যায়। সেগুলো পুনর্বিবেচনা করা যায়। যে ভুলগুলো শোধরানো সম্ভব সেগুলো শুধরে নেওয়া যায়। ভবিষ্যতে যেন একই ভুল আর না হয় সেদিকেও সতর্ক থাকা যায়।
★আত্মশুদ্ধির সুযোগ থাকে : 
নিয়মিত ডায়েরি লেখা মানে নিজেকে আত্মশুদ্ধির সুযোগ দেওয়া। নিজের ইতিবাচক, নেতিবাচক দিকগুলো, নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ডায়েরিতে লিখে রাখা অতীত কর্মকান্ড থেকে নিখুঁতভাবে বোঝা যায়। নিজেকে জানা, নিজেকে বোঝা, নিজের আত্মশুদ্ধিতে আপনার লেখা পুরনো ডায়েরিগুলো অনেক সহায়তা করবে।
★জীবন সুসংগঠিত হয় : 
ডায়েরিতে যদি আপনার দৈনন্দিন কাজকর্ম নিয়মিত লিপিবদ্ধ করেন অর্থাত্ কী করেছেন, কী করতে চান – এসব লিখলে জীবন অনেকখানিই গুছিয়ে আসে। নিজের প্রতিটি সিদ্ধান্ত, পদক্ষেপ এবং তার ফলাফল যদি ডায়েরিতে লেখা থাকে, তাহলে পরবর্তী কাজগুলোতে ভুলত্রুটি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়। জীবন হয়ে ওঠে সুসংগঠিত।
,
সুতরাং ডায়েরি লেখা জায়েজ, আত্মশুদ্ধির দিক লক্ষ্য করলে ডায়েরী লেখা উত্তম।   
দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা, সুন্দর স্মৃতি, কষ্টের স্মৃতি, নতুন কোনো আমল, কুরআনের বিভিন্ন আয়াত, সুন্দর কোনো হাদিস, সুন্দর কোনো বইয়ের রিভিউ এসব নিয়ে লেখালেখি করা যেতে পারে।
★তবে অন্যের কোনো দোষ ত্রুটি লেখা যাবেনা।
★আপনার ডায়েরি অন্যের হাতে যাওয়ার আশংকা থাকলে সেখানে আপনার গুনাহের কোনো ঘটনা লিখবেননা।
এতে নিজের গুনাহ অন্যের সামনে প্রকাশ পাবে।
★অশ্লীল বাক্য,ঘটনা লিখবেননা।
★ছবি আকাবেননা।


,
(০২) বাসার দেয়ালে বিভিন্ন দুআ দরুদ কাগজে লিখে ঝুলিয়ে রাখা যাবে।  
পড়ার টেবিলের উপরে ছবির ফ্রেমে ছবি না রেখে কোনো হাদিস লিখে রাখা যাবে, এটা অনেক উত্তম কাজ। 

বিস্তারিতঃ 
দোয়া দরুদ সাধারণত  মহান আল্লাহর কালাম বা রাসুল সাঃ এর হাদীস হয়ে থাকে । এটি প্রদর্শনের বস্তু নয়। তাই শুধু প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে কোরআন-হাদিস লিখিত বা ক্যালিওগ্রাফি করা ওয়ালমেট বা শোপিস ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে কেউ যদি এ উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহার করে যে, এর দ্বারা আল্লাহ তাআলার কথা স্মরণ হবে, এতে লিখিত বাণীর হেদায়েত ও শিক্ষা গ্রহণ করা যাবে তাহলে শর্ত সাপেক্ষে তা করা যেতে পারে। সে শর্তগুলো হলো, আয়াত ও হাদিসের মর্যাদার প্রতি খেয়াল রাখা, যেন তা নিচে পড়ে না যায় বা নাপাক কিছুর সঙ্গে স্পর্শ না হয়, আর ধুলোবালি থেকে নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। কোরআন-হাদিস লিখিত ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রেও একই বিধান। কোরআন-হাদিসের মর্যাদার প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। বাতাসে যাতে ওড়াউড়ি না করে সে ব্যবস্থাও করা প্রয়োজন। 
,
কোরআন-হাদিস লিখিত ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রেও একই বিধান। কোরআন-হাদিসের মর্যাদার প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। বাতাসে যাতে ওড়াউড়ি না করে সে ব্যবস্থাও করা প্রয়োজন। তবে ক্যালেন্ডারে কোরআনের আয়াত বা হাদিস না লেখাই উত্তম। কারণ মানুষ এটিকে সেভাবে মর্যাদা দিয়ে ব্যবহার করে না এবং মাস ও বছর শেষে তা হেফাজত করে না; যেখানে-সেখানে তা ফেলে দেয়।

কোরআন-হাদিস লিখিত ক্যালেন্ডার দ্বারা কিতাব বা বই-পুস্তক বাঁধাই করা মাকরুহ। এটা কোরআন-হাদিসের মর্যাদাপরিপন্থী। এ ধরনের ক্যালেন্ডার প্রয়োজন শেষে হেফাজত করতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে পুড়িয়ে ছাইগুলো কোনো পবিত্র স্থানে দাফন করে দেবে। (ফতোয়ায়ে খানিয়া : ৩/৪২৪; আল বাহরুর রায়িক : ২/৩৭; ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া : ১৮/৬৭, ৬৯; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/১০৯, ৫/৩২২; দুররুল মুখতার : ৪/১৩০)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (18 points)
শায়েখ আপনাকে অনেক অনেক জাযাকাল্লাহ খায়ের। আলহামদু লিল্লাহ অনেক কিছু জানতে পারলাম। ইন শা আল্লাহ আত্মশুদ্ধির কাজেই ডাইরি লিখব।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...