আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
725 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (6 points)

আসসালামু আলাইকুম,

প্রথম অংশঃ

আমার বিয়ের সময় দেনমোহর ধার্য করা হয় ১২ লক্ষ টাকা। স্বর্ণ বাবদ ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা (৭.৫। ভরি স্বর্ণ) দেওয়া হয়।

  1. আমার স্ত্রীর এই স্বর্ণের জন্য কি যাকাত দিতে হবে?
  2. যাকাত যদি দিতে হয় তাহলে কার দায়িত্ব দেওয়া, যেহেতু স্ত্রীর অই স্বর্ণ  ছাড়া দেওয়ার মত কিছু নাই।
  3. আমার স্ত্রী যেহেতু আমার কাছ থেকে আরও ৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা পাবে। আমি যদি তার যাকাতের টাকা দিয়ে দেই এই শর্তে যে, ঐ টাকা আমার দেনা থেকে কাটা যাবে, তাহলে কি এই শর্তে দেওয়া যাবে?

দ্বিতীয় অংশঃ

আমার স্ত্রী বর্তমানে ২ মাসের গর্ভবতী।

  1. এই সময়ে কি কি আমল করা যেতে পারে?
  2. এই সময়ে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে যদি কষ্ট হয় তাহলে, বসে সালাত আদায় করা যাবে?
  3. সমতল জায়গায় সিজদাহ দিতে যদি কষ্ট হয় তাহলে কি উচু কোন জায়গায় সিজদাহ দেওয়া যাবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
প্রথম অংশের উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله 
بسم الله الرحمن الرحيم 

.
শরীয়তের বিধান হলো স্ত্রী যখন নেসাব পরিমান মোহরের মালিক হবে,সেটা তার হস্তগত হওয়ার সময় থেকে নিয়ে এক বছর অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর স্ত্রীর উপর যাকাত ফরজ হবে। 

আর যদি ইহা ছাড়াও স্ত্রীর মালিকানায় যাকাত এর নেসাব জাতীয় কোনো সম্পদ থাকে,তাহলে মোহরের টাকার উপর এক বছর অতিবাহিত হতে হবেনা,বরং তখন সেই সম্পদের সাথে মোহর যোগ করে যাকাত দিতে হবে।
(নাজমুল ফাতওয়া ৩/৩২)  

★স্ত্রীর কাছে যতক্ষন পর্যন্ত মোহর  হস্তগত (কবজা)
 না হবে, ততক্ষন পর্যন্ত স্ত্রীকে সেটার যাকাত দিতে হবেনা।
(নাজমুল ফাতওয়া ৩/৩৩) 

,
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছেঃ  
لمافی الھندیۃ(۱۷۵/۱): واما سائر الدیون المقر بھا فھی علی ثلاث مراتب عند ابی حنیفۃ رحمہ اﷲ ضعیف وھو کل دین ملکہ بغیر فعلہ لا بدلاً عن شیٔ نحو المیراث او بفعلہ لا بدلاً عن شیٔ کالوصیۃ أو بفعلہ بدلاً عما لیس بمال کالمھر وبدل الخلع والصلح عن دم العمد والدیۃ وبدل الکتابۃ لازکوۃ فیہ عندہ حتی یقبض نصاباً ویحول علیہ الحول۔
যার সারমর্ম হলো মোহর যতক্ষন পর্যন্ত হস্তগত (কবজাহ) না হবে,এবং তার উপর এক বছর অতিবাহিত না হবে,ততক্ষন পর্যন্ত তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবেনা।

,
(০১) আপনার স্ত্রী যেহেতু নেসাব পরিমান স্বর্ণের মালিক হয়েছে,তার উপর যদি এক বছর অতিবাহিত হয়ে যায়,তাহলে আপনার স্ত্রীর উপর যাকাত ফরজ হবে। 

(০২) এটা স্ত্রীর দায়ীত্বেই আদায় করা ফরজ। 
তার কাছে যদি অতিরিক্ত কোনো টাকা না থাকে,তাহলে কাহারো কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সে যাকাত আদায় করবে।
বা অন্য যেকোনো ভাবে টাকা জোগাড় করে যাকাত আদায় করবে।

(০৩) যেহেতু আপনার স্ত্রী আপনার কাছ থেকে আরও ৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা পাবে। সুুুতরাং আপনি যদি তার যাকাতের টাকা দিয়ে দেন, তার সাথে এই শর্ত করে যে, ঐ টাকা আপনার দেনা থেকে কাটা যাবে, তাহলে এই শর্তে টাকা দেওয়া যাবে।
আপনার দেনা থেকে টাকা কেটে যাবে।

তবে এক্ষেত্রে সেই টাকা আপনি আগে স্ত্রীর হাতে দিবেন,তারপর স্ত্রী সেটা যাকাতের টাকা হিসেবে আপনাকে দিতে বললে আপনি সেই টাকা যাকাত হিসেবে গরীব মিসকীন দের মাঝে দিতে পারবেন।         
,

দ্বিতীয় অংশঃ

(০১) গর্ভবতী মহিলা বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করবে,যিকির আযকার করবে,ফরজ নামাজ আদায়ের পাশাপাশি বেশি বেশি নফল নামাজ পড়ার চেষ্টা করবে।
আল্লাহর কাছে নেক সন্তানের দোয়া করবে। 


(০২) হ্যাঁ, এই সময়ে দাড়িয়ে নামাজ পড়তে কষ্ট হলে বসে নামাজ আদায় করতে পারবে।

যদি সেজদাহ করতে সমস্যা হয়,তাহলে  রুকু রেখে আর একটু ঝুকে (যতটুকু সম্ভবপর হয়,ঝুকে) সেজদাহ আদায় করবে।
(কিতাবুল ফাতওয়া ৩/৮২)

হাদীস শরীফে এসেছে    
’’ و عن نافع أن عبد اللّٰہ بن عمر ص یقول : إذا لم یستطع المریض السجود أومأ برأسہ إیمائً ، و لم یرفع إلی جبھتہ شیئًا ‘‘ رواہ مالک و اسنادہ صحیح ، (آثار السنن ، حدیث نمبر : ۸۰۴ ، باب صلاۃ المریض )
যখন কোনো অসুস্থ ব্যাক্তি সেজদাহ করতে সক্ষম না হয়,তখন সে ইশারার দ্বারা সেজদা আদায় করবে।

★   ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীতে আছে  

’’ وإن عجز عن القیام والرکوع والسجود وقدر علی القعود یصلی قاعدا بإیماء ویجعل السجود أخفض من الرکوع‘‘ ( الفتاوی الھندیۃ : ۱/۱۳۶، في صلاۃ المریض )

অসুস্থ ব্যাক্তি সেজদাহ করতে সক্ষম না হলে,ইশারার দ্বারা সেজদা আদায় করবে।
রুকুর তুলনায় সেজদাহ এর মধ্যে বেশি ঝুকবে।
,
(০৩) উঁচু জায়গায় সেজদাহ করা যাবে,তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে,পা রাখার জায়গা থেকে সেজদার জায়গা  এক বিঘত (১২ আঙ্গুলের সমপরিমান) এর চেয়ে উঁচু না হয়। 
এমন উঁচু হলে নামাজ হবেনা।
,
তাই ঝুকে সেজদাহ করাই উত্তম।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...