আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
268 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (17 points)

আসসালামু আলাইকুম শ্রদ্ধেয় শায়েখ।
আপনি https://ifatwa.info/29062/ এর উত্তরে বলেছিলেন বইয়ে শিরকি কিছু থাকলে তা পড়লে বা লিখলে সমস্যা হবে না।

বেয়াদবি মাফ করবেন সম্মানিত শায়েখ,আমার লেখা টা মেহেরবানি করে পুরোটা পড়িয়েন।

আমি এনসিওর হতে চাচ্ছি এগুলো কি শিরকি কথা?মানে জেনে বুঝে বললে আর মাফ হবে না?এরকম হলে তো
" ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়,দুধ এর মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় মজবুত রাখে, আম্মু সবসময় মন ভালো করে দেন, অমুক বই আমার জীবন পাল্টে দিয়েছে" এগুলো শিরকি মনে হয়।

সম্মানিত শায়েখ, উল্লিখিত কোন ক্ষেত্রেই তো সৃষ্টি কর্তার স্থানে নিয়ে কিছু বলা হয়নি।শুধু এই জিনিস বা উপাদান গুলো দেহে এমন কাজ করে তাই বোঝানো হয়েছে।তবুও৷ কি শিরিক হবে?

যদি না হয় শ্রদ্ধেয়,শায়েখ, আমি জানতে চাচ্ছি 'জিন' যেহেতু বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে আর একই জিনের বিভিন্ন সংস্করণ ও একই বৈশিষ্ট কে ভিন্ন রুপে প্রকাশ করে। বিজ্ঞানের মতে সংস্করণ এর ভিন্নতার জন্যেই বৈশিষ্ট ও ভিন্ন হয়।তাহলে সম্মানিত শায়েখ, "জিন আমাদের বৈশিষ্ট্যের নিয়ন্ত্রণ করে " এটা বললে কি শিরক হবে?যদি হয়, তাহলে এটা কে তো অন্য ভাবে যেমন(জিন বৈশিষ্ট ধারণ করে) এমনো তো বলা যায়।এভাবে লেখা বা পড়া কি জরুরি?
এইরকম আরো কয়েকটা সন্টেন্স হিচ্ছে"কঙ্কাল তন্ত্র আকৃতি দান করে,মানুষ কৃত্রিম প্রজনন ঘটিয়ে কাঙ্খিত বৈশিষ্টের উদ্ভিদ সৃষ্টি করে"

১)সম্মানিত শায়েখ উল্লিখিত সব কথাই তো আপাত দৃষ্টিতে বলা হয়েছে, সৃষ্টিকর্তার স্থানে নিয়ে তো বলা হয় নি তবুও কি শিরকি হবে কথা গুলো?

২) শ্রদ্ধেয় শায়েখ, বইয়ে তো এমন অনেক লাইন থাকে এগুলো চিহ্নিত করে(এগুলোর ক্ষেত্র আমার আকিদা ঠিক করে) পড়তে গেলে তো সহজে মূখস্ত হয় না। আমি যদি আপাত দৃষ্টি তেই এগুলো মেনে নি(স্রষ্টার লেভেলে গিয়ে না) তাহলে কি সমস্যা হবে?যেহেতু একটা জিনিস সঠিক মেনে নিলে বুঝতে ও মনে রাখতে অনেক সুবিধা হয়।

৩) শায়েখ উপরের কঙ্কালতন্ত্র আকৃতি দেয় না বলে তো কঙ্কালতন্ত্র দিয়ে আকৃতই গঠিত হয়েছে, এমন ভাবে লেখা যায় পড়াও যায় মিনিং একি থাকে।এভাবে ভাষা চেঞ্জ করে বলা কি জরুরী?

শ্রদ্ধেয় শায়েখ,এসব নানা চিন্তায় আমার মাথা ব্যথা করে, আল্লাহ ভালো জানেন একজন বিজ্ঞ আলিমের এ ব্যপারে আন্তরিক পরামর্শ কতটা দরকার আমার জন্যে।আমি পড়তে পারছি না অথচ পরীক্ষা কয়দিন পরে, খারাপ করলে অনেক ঝামেলা হবে,দ্বীন পালন অনেক কঠিনতর হয়ে যাওয়ার তীবয আশঙ্কাআছে।

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


প্রথমেই আমরা একটি বিষয় জেনে নেইঃ- 
ইসলামের আগমনের পূর্বে জাহিলিয়্যাতের যুগে রোগ-বালাই থেকে মুক্তির ক্ষেত্রে কয়েক ধরনের উপায় ও পন্থা অবলম্বন করা হত। তন্মধ্যে একটি হল ঔষধের মাধ্যমে চিকিৎসা। ঐ যুগে যেহেতু আল্লাহপ্রদত্ত কোনো ধর্ম তারা অনুসরণ করত না তাই তাদের প্রায় সকল ক্ষেত্রেই তাওহীদ-পরিপন্থী কর্ম ও চরিত্র এবং মানবতা বিবর্জিত বহু বিষয় তাদের ধর্ম বা রীতিতে পরিণত হয়েছিল। ইসলাম এসে তাদের পূর্বের সকল রীতিনীতি পর্যবেক্ষণ করে; যেগুলো তাওহীদ-পরিপন্থী সেগুলো নিষিদ্ধ করে আর যেগুলো এসব থেকে মুক্ত সেগুলোকে আপন অবস্থায় ছেড়ে দেয়। 

ঔষধ-পত্রের মাধ্যমে চিকিৎসাতে যেহেতু তাওহীদ-পরিপন্থী তেমন কিছু নেই তাই ইসলাম এসে তা পূর্বের ন্যায় বহাল বা বৈধ রাখে। তবে, ইসলাম তাতে এ সংশোধনী অবশ্যই এনেছে যে, ঔষধকে সুস্থতাদানকারী  মনে করা যাবে না; বরং সুস্থতাদানকারী হলেন একমাত্র আল্লাহ আর ঔষধ মাধ্যমমাত্র। আর যারা এ চিকিৎসাকর্মে  নিজেকে নিয়োজিত করবে সে যেন পরিপূর্র্ণরূপে চিকিৎসা-জ্ঞান অর্জন করে এবং পুরো পারদর্শী হয়ে এ কাজে ব্রত হয়; আংশিক বা ভুল জ্ঞান ও অপরিপক্ক জ্ঞান নিয়ে যেন এ কাজে অগ্রসর না হয়। 
,
নিম্নে এ সংক্রান্ত কয়েকটি হাদীস পেশ করা হল :
হযরত আমর ইবনুল আস রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কোনো ব্যক্তি যদি চিকিৎসাজ্ঞান অর্জন করা ছাড়া চিকিৎসা শুরু করে, আর তার চিকিৎসায় কেউ মারা যায় বা ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে এর দায় ঐ ব্যক্তির উপরই বর্তাবে (তার ক্ষতিপূরণ তাকেই বহন করতে হবে)। -সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৪৫৭৭
,

হযরত যায়েদ ইবনে আসলাম থেকে বর্ণিত, নবীজীর যুগে এক ব্যক্তির শরীর যখম হয় এবং ফুলে রক্ত-পুঁজ জমে যায় তখন লোকটি বনী আনমারের চিকিৎসক দুই ভাইকে ডাকলেন। নবীজী তাদের উভয়জনকে দেখে বললেন, চিকিৎসায় তোমাদের মধ্যে কে বেশি পারদর্শী? তারা দুজনে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! চিকিৎসাকর্ম কি ভালো? তখন নবীজী বললেন, যিনি রোগ নাযিল করেছেন তিনি চিকিৎসাও নাযিল করেছেন। -মুয়াত্তা মালেক, হাদীস ১৭৫৭
,
ঔষধ  গ্রহনকারী যদি বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ ব্যতীত এসব জিনিসের নিজস্ব শক্তি রয়েছে, তাহলে সে বড় শির্ককারী হিসাবে গণ্য হবে। পক্ষান্তরে যদি সে বিশ্বাস করে যে, সবকিছু আল্লাহ্র হাতে; কিন্তু এগুলি অসিলা আর সুন্নাত মাত্র এবং এগুলির নিজস্ব কোনো শক্তি নেই, তাহলে তা জায়েজ আছে। 
,
মুসলিম যেহেতু তাওহীদে বিশ্বাসী, তাই সে সুস্থতা-অসুস্থতা, আপদ-বিপদ, সুখ-শান্তি একমাত্র আল্লাহর থেকেই হয় বলে বিশ্বাস করে। ঔষধ গ্রহনের ক্ষেত্রেও সে এই বিশ্বাস মনে জাগ্রত রাখবে। ঔষধ গ্রহণ করলে এই বিশ্বাস মনে রাখতে হবে যে এটি ওসীলা মাত্র। 
ঔষধের কোনো ক্ষমতা নেই,সব ক্ষমতা আল্লাহর হাতে।

আরো জানুনঃ  

(০১)
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন  
 প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে অনেক বিষয়ই অসিলা হিসেবে বলা হয়,বিশেষ করে প্রশ্নটির প্রথমাংশে উল্লেখিত বিষয়গুলি অসিলা হিসেবেই বলা হয়।
যেগুলোর সাধারণত শিরকী আকীদা রাখেনা। 
তাই এগুলি আকীদা শুদ্ধ রেখে বলা যাবে।
তবে শেষাংশের কিছু বিষয় শিরকী কথা।
যাহা আকীদা বিশুদ্ধ রেখে পড়া যাবে।
তবে আকীদা বিশুদ্ধ না রাখতে পারলে পড়া যাবেনা।   

(২.৩)
ভাষা চেঞ্জ করেই হোক বা অন্য যেকোনো ভাবেই হোক,
আল্লাহকে মূল হিসেবে মেনে নিয়ে আকীদা বিশুদ্ধ রেখে পড়তে পারেন।
নতুবা নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...