আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
149 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (39 points)

শায়েখ আমার কিছু প্রশ্ন রয়েছে,

১.ফেইসবুকে কোন নারী দ্বীনি বিষয়ে পোষ্ট করলে সেটা শেয়ার করা যাবে কিনা? 

২.কোন ওয়াক্তের ফরজ সালাতের আগে সুন্নাত সালাত পড়তে না পারলে ফরজের পর সেই সুন্নাত সালাত পড়া যাবে কি?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ফজরের  সুন্নত কোন কারণে পড়তে না পারলে তার কাযা আদায় করবে সুর্য উদিত হবার পর। আগে আদায় করা জায়েজ নয়।

কারণ নবীজি সা: থেকে  متواتر (নিরবচ্ছিন্ন সূত্র পরম্পরায়) বর্নিত হাদিসে এসেছে যে, তিন সময়ে নামায পড়া জায়েজ নয়। তার মাঝে একটি সময় হল-“ফজরের ফরয পড়ার পর থেকে সুর্য উদয় হবার আগ পর্যন্ত।”তাছাড়া নবীজি সা: থেকে বিভিন্ন হাদিসে এসেছে যে, নবীজি বলেছেন যে, কারো ফজরের দুই রাকাআত সুন্নত ছুটে গেলে সে যেন তা সুর্য উদিত হবার পর আদায় করে।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা: বলেন-আমি নবীজি সা: কে বলতে শুনেছি যে, ফজরের নামাযের পর সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত কোন নামায নেই, এবং আসরের পর সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত  কোন নামায নেই। (সহীহ বুখারী-১/৮২)

আমর বিন আবাসা আস সুলামী রা: বলেন-আমি বললাম-হে আল্লাহর নবী! আপনি আমাকে নামায সম্পর্কে শিক্ষা দিন, রাসুলুল্লাহ সা: বললেন-ফজরের নামায আদায় করবে। তারপর সূর্য পূর্বাকাশে উঁচু হওয়া পর্যন্ত নামায পড়া থেকে বিরত থাকবে। কেননা সূর্য শয়তানের দুই শিংয়ের মধ্যখানে উদিত হয়, এবং সে সময় কাফেররা সূর্যকে সিজদা করে। (সহীহ মুসলিম-১/২৭৬)

فى موطا مالك- وحدثني عن مالك أنه بلغه أن عبدالله بن عمرفاتته  ركعتاالفجرفقضاهمابعدأنطلعت الشمس( موطا مالك النداءللصلاة،باب ماجاءفي ركعتي الفجر،رقم-422

অনুবাদ-হযরত ইমাম মালেক রহ: বলেন, আমি জেনেছি যে, আবদুল্লাহ বিন ওমর রা: এর ফজরের দুই রাকাআত ছুটে গিয়েছিল। তিনি তা সূর্যোদয়ের পর আদায় করেন। (মুয়াত্তা মালিক-৪৫)

وفى جامع الترمذى- عن أبي هريرة قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من لم يصل ركعتي الفجرفليصلهمابعدماتطلع الشمس (جامع الترمذى-أبواب الصلاةعن رسول الله صلى الله عليه وسلم، باب ماجاءفي إعادتهمابعدطلوع الشمس،رقم-423)

অনুবাদ-হযরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত যে, নবীজি সা: বলেন-যে ফজরের দুই রাকআত সুন্নত (সময়মতো) পড়ল না সে যেন সূর্যোদয়ের পর তা আদায় করে। ( জামে তিরমিজী-১/৯৬)

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) জোহরের ফরজের আগের চার রাকাত সুন্নাত এবং ফজরের দুই রাকাত সুন্নাত কখনো ছাড়তেন না। (বুখারি, হাদিস : ১১২৭; নাসায়ি, হাদিস : ১৭৫৭)

সুতরাং নিয়ম হলো, কেউ আগে পড়তে না পারলে পরে পড়ে নিবে। কোনো কোনো সময় জোহরের আগে চার রাকাত সুন্নত পড়ার মতো পর্যাপ্ত সময় থাকে না। এক্ষেত্রে সম্ভব হলে ফরজ নামাজের আগে দুই রাকাত পড়ে নেবে। তবে জোহরের পূর্বের চার রাকাতই যেহেতু সুন্নতে মুআক্কাদা, তাই কখনো জোহরের পূর্বে চার রাকাত সুন্নত পড়তে না পারলে জোহরের পর দুই রাকাত সুন্নত পড়ে পূর্বের চার রাকাত সুন্নত আদায় করে নেওয়া উচিত। (তিরমিজি, হাদিস : ৪২৬; ইবনু মাজাহ, হাদিস : ১১৫৮; আলমুহিতুল বুরহানি : ২/২৩২; ফাতহুল কাদির : ১/৪১৫; আদ্দুররুল মুখতার : ২/১২-১৩

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

১.বিশুদ্ধ নিয়তে দ্বীন প্রচারের উদ্দেশ্যে ফেসবুকে তার পোস্ট শেয়ার যাবে এবং এতে সওয়াব হবে বলে আশা করা যায়। তবে যদি উক্ত মেয়েটির দৃষ্টি আকর্ষণ বা তার সাথে সখ্যতা তৈরীর উদ্দেশ্যে তার পোস্ট শেয়ার করা হয় তাহলে তা থেকে দূরে থাকায় শ্রেয় কেননা এতে ফেতনার আশঙ্কা আছে।

২. কোন কারণ ফজরের  সুন্নত কোন পড়তে না পারলে তার কাযা আদায় করবে সুর্য উদিত হবার পর। আগে আদায় করা জায়েজ নয়।

৩. কোন কারণে যহরের পূর্বের চার রাকাত সুন্নাত পড়তে না পারলে ফরজের পরে দুরাকাত সুন্নাত পড়ার পরে পূর্বের চার রাকাত কে আদায় করে নিবে। তবে আছরের কোর সুন্নাত নামাজ আদায় করা জায়েয নেই। বরং আছরের পূর্বেই সম্ভব হলে চার রাকাত সু্ন্নাতে গয়রে মুআক্কাদা পড়ে নিবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...