আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
247 views
in সালাত(Prayer) by (102 points)
edited by
১) এশার নামাজে মসজিদে যেখানে দাড়াই আমার পাশের জন আমার থেকে একটু দূরে হয়ে গিয়েছিল। মানে বেশি দূরে না কয়েক আঙ্গুল পরিমাণ দুর এতটুকু জায়গার মধ্যে একটা বাচ্চাও দাড়াতে পারবে না আশা করি বুঝাতে পেরেছি সামান্য একটু দূরে।তাও নামাজের মধ্যেই আমি পা মাটির সাথে ঘষে একটু আমার পাশের জনের কাছে নেই। খুবই অল্প একটু বাম দিকে যাই বলা যায় এক আঙ্গুল পরিমাণ হবে অথবা হবে না।এতে কি নামাজ হয়েছে?

২)নামাজে স্পষ্ট কোনো ভুল উচ্চারণ হলে তা পুনরায় সঠিক উচ্চারণ করলে নামাজ শুদ্ধ হয়ে যায়।এখন নামাজে কোনো আয়াতে বা বাক্যে ভুল উচ্চারণ করলে সংশোধনের জন্য কি ওই পুরো বাক্য বা সম্পূর্ন আয়াত আবার শুদ্ধভাবে পড়বো?নাকি যে শব্দে বা হরফে ভুল উচ্চারণ হয়েছে কেবল ওই হরফটাই পুনরায় উচ্চারণ করবো?

৩) সেদিন এশার নামাজে সিজদায় সুবহানা রববিয়াল আ'লা পড়ার সময়

আ"লা এখানে আইন উচ্চারণ করতে গিয়ে ঠিক মত হয় না তাই একই শব্দ অর্থাৎ এই আ"লা পুনরায় উচ্চারণ করি তাও ঠিক মত হয় না।এভাবে একই শব্দ অর্থাৎ এই আ"লা তিনবার উচ্চারণ করে ফেলি এরপর ঠিক উচ্চারণ আসে।ওই নামাজ কি হয়েছে?এটা যেহেতু সুন্নত তাই এতবার উচ্চারণের কারনসাহু সিজদাও দেই নাই।

৪)আমি আমার মায়ের সাথে এমনিতেই হেসে হেসে কথা বলেছিলাম। মানে মানুষ যেরকম সাধারণ মুচকি হেসে কথা বলে সেভাবে না একটু অন্যরকভাবে জোরে হেসে কথা বলছিলাম।তখন আমি আমার মা কে বলি মানুষের দিকে হাসি মুখে তাকানও সদকা।আমি যদিও সোয়াবের উদ্দেশ্যে হাসি নাই এমনি মজা করে হাসতেছিলাম আর মজা করতে করতে এই হাদিসের কথা বলি। হাদিস নিয়ে হাসি ঠাট্টা করার কোনো নিয়ত আমার ছিল না।এতে কি ঈমানে সমস্যা হবে?

৫)মানুষ বিভিন্ন সময় কথা প্রসঙ্গে বলে যে আমি এইটা ছুঁয়ে বলতেছি এটা সত্যি কথা।আমার বাবা একটা কথা বলার সময় বলছিল যে খাওয়ার সময় ভাত ছুঁয়ে বললাম সত্যি কথা।এরকম কোনো কিছু ছুঁয়ে বলা কি শিরক? তার কি ঈমানে সমস্যা হবে?

৬)হারাম কাজকে হারাম মনে করে করলে গুনাহ হবে কিন্তু কুফরী হবে না জানি।কেউ যদি কোনো হারাম কাজ করে সে এরা হারাম মনে করেই করে কিন্তু এই হারাম কাজ করার দ্বারা সে খুশি হয় বা হাসে এতে কি তার ঈমান ভঙ্গ হবে।সে এটা অন্তরে বিশ্বাস করে যে এটা তার করা উচিত না এটা হারাম হিসেবেই বিশ্বাস করে।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

১. জ্বী আপনার নামাজ হয়ে গেছে। তবে বিনা প্রয়োজনে ইচ্ছাকৃতভাবে পা সরা নড়া করা মাকরুহ।

 

২.নামাজে তেলাওয়াত অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে করতে হবে । এ ক্ষেত্রে কোন উদাসিনতা প্রদর্শন করা যাবে না। তবে ভুলবশত যদি কেউ কোন শব্দ বা আয়াতে ভুল করে, তাহলে শুদ্ধতার নিয়তে উক্ত আয়াতটি পুনরায় পড়াই শ্রেয়। তবে যেই শব্দে ভুল হয়েছে সেখান থেকে পুনরায় পড়লেও নামাজ হয়ে যাবে।

 

৩. জ্বী আপনার নামাজ হয়েছে।

৪. হাদিস নিয়ে হাসি ঠাট্টা করার যেহেতু কোনো নিয়ত ছিল না তাই ঈমান নষ্ট হবে না।

৫. আল্লাহর নামে কসম করার মত কোন জিনিস ছুঁয়ে কসম করলে তা শিরক হবে। যা থেকে তওবা করা আবশ্যক । অনুরুপ ভাবে যদি কেউ কোন জিনিস ছুঁয়ে বা স্পর্শ করে কোন কথা বলে তাহলেও তা থেকে তওবা করতে হবে।কেননা তা কুসংস্কার ও বেদআত, যা পরিত্যায্য।

কসম একমাত্র আল্লাহ তাআলার নামেই করা যায়। আল্লাহ তাআলার নাম ব্যতীত অন্য কোনো জিনিসের কসম করা নাজায়েজ। এমনকি কোরআনের নামে বা তা স্পর্শ করে কসম করাও নিষিদ্ধ। যদিও তা কার্যকর হয়ে যায়।(বাদায়িউস সানায়ে : ৩/৬৩; আল-বাহরুর রায়েক : ৪/২৮৬; ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ২/৫৩)

 

অনেককেই দেখা যায়, কোরআন ছুঁয়ে, মাথা ছুঁয়ে, মাজার বা পীরের নামে শপথ করে। ইসলামী বিধান মতে, তা শিরক ও সবচেয়ে বড় গুনাহ। হাদিস শরিফে আছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে শপথ করে, সে অবশ্যই কুফরি বা শিরক করল।’ (তিরমিজি শরিফ, হাদিস : ১৫৩৫)

৬. হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল মনে করার অর্থ হল,কোনো কিছুকে হালাল এবং হারাম ঘোষনা  প্রদানের একচ্ছত্র অধীকারী একমাত্র আল্লাহ তা'আলা।আল্লাহ তা'আলা ব্যতীত অন্য কাউকে হালাল এবং হারাম কারী মনে করা শিরক ও কুফরী।যদি কেউ মনে করে তাহলে তার ঈমান চলে যাবে।

আল্লাহ পবিত্র কুরআনে মুশরিকদের আচরণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,

وَلاَ يُحَرِّمُوْنَ مَا حَرَّمَ اللهُ وَرَسُولُهُ وَلاَ يَدِيْنُوْنَ دِيْنَ الْحَقِّ-

আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা হারাম করেছেন তারা তাকে হারাম গণ্য করে না এবং সত্য দ্বীনকে তাদের দ্বীন হিসাবে গ্রহণ করে না’ (তওবা ২৯)।

 

অন্যত্র তিনি বলেন,

قُلْ أَرَأَيْتُمْ مَّا أَنْزَلَ اللهُ لَكُم مِّن رِّزْقٍ فَجَعَلْتُمْ مِّنْهُ حَرَاماً وَحَلاَلاً قُلْ اللهُ أَذِنَ لَكُمْ أَمْ عَلَى اللهِ تَفْتَرُونَ-

আপনি বলুন, আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে যে রূযী দান করেছেন, তন্মধ্যে তোমরা যে সেগুলির কতক হারাম ও কতক হালাল করে নিয়েছ, তা কি তোমরা ভেবে দেখেছ? আপনি বলুন, আল্লাহ কি তোমাদেরকে এতদ্বিষয়ে অনুমতি দিয়েছেন, নাকি তোমরা আল্লাহর নামে মনগড়া কথা বলছ’ (ইউনুস ৫৯)।

 

*কেউ যদি কোনো হারাম কে অজ্ঞতাবসত হালাল মনে করে উক্ত কাজকে করে নেয়,তাহলে এই কাজ করা তার জন্য হারাম হয়েছে,কিন্তু সে কাফির হবে না।ইলম শিক্ষা ফরয ছিলো, সে কেন শিখেনি,এর জন্য তার গোনাহ হবে।

যেহেতু উক্ত ব্যক্তি হারাম কাজকে হারাম মনে করে বিধায় তাকে কাফের বলা যাবে না। কিন্তু কোন প্রকৃত ঈমানদ্বার ব্যক্তি গোনাহের কাজ করার পরে আনন্দ বা খুশী হতে পারে না । কারণ,যারা গোনাহ করার পরে অনুত্প্ত বা অনুশোচনা প্রকাশ করে তাদের সহজে তওবা নসীব হয়। কিন্তু যারা গোনাহ করার পরে আনন্দিত হয় তাদের সহজে তওবা করার নসীব হয় না ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...