বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
মূলত এখানে প্রশ্ন দু'টি
(১)কবিরা গোনাহ যেমন ধর্ষণ ইত্যাদিতে লিপ্ত ইমামের পিছনে কি নামায শুদ্ধ হবে?
উত্তরঃ
এ প্রশ্নের জবাব জানার পূর্বে আমাদের দুয়েকটি হাদীস ও আসরের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে। দেখুন হাদীস শরীফে এসেছে,
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻰ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ :( ﻣَﻦْ ﻧَﻔَّﺲَ ﻋَﻦْ ﻣُﺆْﻣِﻦٍ ﻛُﺮْﺑَﺔً ﻣِﻦْ ﻛُﺮَﺏِ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻧَﻔَّﺲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻛُﺮْﺑَﺔً ﻣِﻦْ ﻛُﺮَﺏِ ﻳَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ، ﻭَﻣَﻦْ ﻳَﺴَّﺮَ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﻌْﺴِﺮٍ ﻳَﺴَّﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻓﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻭَﺍﻵﺧِﺮَﺓِ ، ﻭَﻣَﻦْ ﺳَﺘَﺮَ ﻣُﺴْﻠِﻤًﺎ ﺳَﺘَﺮَﻩُ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻓﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻭَﺍﻵﺧِﺮَﺓِ ، ﻭَﺍﻟﻠَّﻪُ ﻓﻲ ﻋَﻮْﻥِ ﺍﻟْﻌَﺒْﺪِ ﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟْﻌَﺒْﺪُ ﻓﻲ ﻋَﻮْﻥِ ﺃَﺧِﻴﻪِ )
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দুনিয়ার কোনো কষ্টক্লিষ্টকে দূর করবে,কেয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা তার কষ্টক্লিষ্টকে দূর করে দিবেন।আর যে ব্যক্তি কোনো অভাবীর অভাবকে দূর করবে,কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে প্রশস্ততার জীবন দান করবেন।আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষত্রুতিকে গোপন রাখবে,আল্লাহ তা'আলা দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষত্রুতিকে গোপন রাখবেন।বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত তার ভাইয়ের সাহয্যের মধ্যে থাকবে,আল্লাহ তা'আলা ততক্ষণ ঐ বান্দার সাহায্যে থাকবেন।(সহীহ মুসলিম২৬৯৯)
ইমাম ত্বাহাবী রাহ, উনার আক্বিদার কিতাব- 'আক্বিদাতুত ত্বাহাবী'- নামক কিতাবে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত এর আক্বিদা বর্ণনা করতে যেয়ে বলেন,"আমরা আহলে কিবলা প্রত্যেক নেককার এবং বদকারের পিছনে নামায পড়াকে বৈধ মনে করি।এবং নেককার বদকার যেই মারা যাক না কেন সবার জানাযার নামাযে আমরা অংশগ্রহণ করি"।
উক্ত আক্বিদার সমর্থন আমরা নিম্নোক্ত হাদীস থেকে পেতে পারি।হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﺍﻟﺼَّﻼﺓُ ﺍﻟْﻤَﻜْﺘُﻮﺑَﺔُ ﻭَﺍﺟِﺒَﺔٌ ﺧَﻠْﻒَ ﻛُﻞِّ ﻣُﺴْﻠِﻢٍ ﺑَﺮًّﺍ ﻛَﺎﻥَ ﺃَﻭْ ﻓَﺎﺟِﺮًﺍ ﻭَﺇِﻥْ ﻋَﻤِﻞَ ﺍﻟْﻜَﺒَﺎﺋِﺮَ )
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, ওয়াক্তিয়া ফরয নামায ইমামের পিছনে জামাতের সাথে পড়া ওয়াজিব।চায় ইমাম নেককার হোক বা বদকার হোক।এবং চায় উক্ত ইমাম কবিরাহ গুনাহ করে থাকুক না কেন।(সুনানে আবু-দাউদ;৫৯৪)(কেউ কেউ যেমন ইমাম আলবানী রাহ উক্ত হাদীসকে সনদের দিক দিয়ে দুর্লব বলেছেন)
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রাহ বলেন,
ﻭَﻟَﻮْ ﻋَﻠِﻢَ ﺍﻟْﻤَﺄْﻣُﻮﻡُ ﺃَﻥَّ ﺍﻹِﻣَﺎﻡَ ﻣُﺒْﺘَﺪِﻉٌ ﻳَﺪْﻋُﻮ ﺇﻟَﻰ ﺑِﺪْﻋَﺘِﻪِ ، ﺃَﻭْ ﻓَﺎﺳِﻖٌ ﻇَﺎﻫِﺮُ ﺍﻟْﻔِﺴْﻖِ ، ﻭَﻫُﻮَ ﺍﻹِﻣَﺎﻡُ ﺍﻟﺮَّﺍﺗِﺐُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻻ ﺗُﻤْﻜِﻦُ ﺍﻟﺼَّﻼﺓُ ﺇﻻ ﺧَﻠْﻔَﻪُ ، ﻛَﺈِﻣَﺎﻡِ ﺍﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻭَﺍﻟْﻌِﻴﺪَﻳْﻦِ ، ﻭَﺍﻹِﻣَﺎﻡِ ﻓِﻲ ﺻَﻼﺓِ ﺍﻟْﺤَﺞِّ ﺑِﻌَﺮَﻓَﺔَ ﻭَﻧَﺤْﻮِ ﺫَﻟِﻚَ ، ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟْﻤَﺄْﻣُﻮﻡَ ﻳُﺼَﻠِّﻲ ﺧَﻠْﻔَﻪُ ﻋِﻨْﺪَ ﻋَﺎﻣَّﺔِ ﺍﻟﺴَّﻠَﻒِ ﻭَﺍﻟْﺨَﻠَﻒِ ، ﻭَﻫُﻮَ ﻣَﺬْﻫَﺐُ ﺃَﺣْﻤَﺪ ﻭَﺍﻟﺸَّﺎﻓِﻌِﻲِّ ﻭَﺃَﺑِﻲ ﺣَﻨِﻴﻔَﺔَ ﻭَﻏَﻴْﺮِﻫِﻢْ
যদি মুক্তাদি জেনে যায় যে,ইমাম বেদাআতী-যে কিনা লোকজনকে বেদাআতের দিকে আহবান করে,অথবা ইমাম প্রকাশ্যে গোনাহের কাজে লিপ্ত রয়েছে।এবং উক্ত ইমামও এমন যিনি মসজিদের নির্ধারিত ইমাম,যার পিছনে নামায পড়া ব্যতীত জামাতে নামায পড়ার অদ্য কোনো সুযোগ নাই। যেমন জুমুআহ ও ঈদের নামাযের ইমাম এবং আরাফার ময়দানে নামাযের ইমাম।তাহলে এমতাবস্থায় উক্ত ইমামের পিছনে নামায পড়াই মুসাল্লির দায়িত্ব ও কর্তব্য।
এবং এটাই পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল উলামায়ে কেরামের সিদ্ধান্ত।হ্যা এটাই ইমাম আহমদ রাহ ও ইমাম শাফেয়ী রাহ এবং ইমাম আবু-হানিফা রাহ সহ আরো অন্যান্য উলামায়ে কেরামের মাযহাব।
মাজমু'উল ফাতাওয়া;২৩/৩৫২
সুতরাং কবিরা গোনাহ লিপ্তে ইমামের পিছনে নামায আদায় হয়ে যাবে।
(২)কবিরা গোনাহে লিপ্ত ইমামকে কি বহাল রাখা যায় বা এমন ব্যক্তিকে কি ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেয়া যায়?
উত্তরঃ
কবিরাহ গুনা যে কারো মাধ্যমে সংগঠিত হতে পারে।সেটা আবার দু-ধরণের হবে।
(ক)
অনাখাঙ্কিতভাবে কারো নিকট থেকে গুনাহ সংগঠিত হয়ে যাওয়া এবং সাথে সাথে তাওবাহ করে নেয়া।এমন ব্যক্তির গোনাহকে প্রকাশ করা কখনো জায়েয হবে না।এবং উক্ত ব্যক্তিকে ইমামতি থেকে বরখাস্তও করা যাবে না।উক্ত ব্যক্তির পিছনে নামায পড়তে শরীয়তে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
আল্লাহ তা'আলা বলেন-
ﻭَﺇِﻧِّﻲ ﻟَﻐَﻔَّﺎﺭٌ ﻟِّﻤَﻦ ﺗَﺎﺏَ ﻭَﺁﻣَﻦَ ﻭَﻋَﻤِﻞَ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﺛُﻢَّ ﺍﻫْﺘَﺪَﻯ
আর যে তওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে অতঃপর সৎপথে অটল থাকে, আমি তার প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল।(সূরা ত্বোয়া-হা-৮২)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত,
عن ﺃﺑﻲ ﻋﺒﻴﺪﺓ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﺍﻟﺘَّﺎﺋِﺐُ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺬَّﻧْﺐِ ﻛَﻤَﻦْ ﻟَﺎ ﺫَﻧْﺐَ ﻟَﻪُ )
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,গোনাহ থেকে তাওবাহকারী এমন যেন তার কোনো গোনাহ-ই নেই।(সুনানে ইবনে মাজাহ-৪২৫০,সুনানে বায়হাক্বী-২০৫৬১)
(খ)
কারো নিকট থেকে বারংবার কোনো গোনাহ সংগঠিত হয়ে স্বভাবে পরিণত হয়ে যাওয়া।এবং উক্ত গোনাহ থেকে তাওবাহ না করা।বা কবিরা গোনাহে লিপ্ত হয়ে তাওবাহ না করা।
এমন ব্যক্তির গোনাহকে জনসম্মুখে প্রচার করা নাজায়েয হবে না।বরং লোকজন কে ঐ ব্যক্তির ধোকাবজী থেকে বাঁচাতে তার কৃত গোনাহকে প্রকাশ করা যাবে।জায়েয আছে।
ফাতাওয়ায়ে শামীতে বর্ণিত রয়েছে,
لما في الدر المختار
(ﻭَﻳُﻜْﺮَﻩُ) ﺗَﻨْﺰِﻳﻬًﺎ (ﺇﻣَﺎﻣَﺔُ ﻋَﺒْﺪٍ) ﻭَﻟَﻮْ ﻣُﻌْﺘَﻘًﺎ ﻗُﻬُﺴْﺘَﺎﻧِﻲٌّ. ﻋَﻦْ اﻟْﺨُﻼَﺻَﺔِ، ﻭَﻟَﻌَﻠَّﻪُ ﻟِﻤَﺎ ﻗَﺪَّﻣْﻨَﺎﻩُ ﻣِﻦْ ﺗَﻘَﺪُّﻡِ اﻟْﺤَﺮِّ اﻷَْﺻْﻠِﻲِّ، ﺇﺫْ اﻟْﻜَﺮَاﻫَﺔُ ﺗَﻨْﺰِﻳﻬِﻴَّﺔٌ ﻓَﺘَﻨَﺒَّﻪْ (ﻭَﺃَﻋْﺮَاﺑِﻲٌّ)ﻭَﻣِﺜْﻠُﻪُ ﺗُﺮْﻛُﻤَﺎﻥٌ ﻭَﺃَﻛْﺮَاﺩٌ ﻭَﻋَﺎﻣِّﻲٌّ (ﻭَﻓَﺎﺳِﻖٌ ﻭَﺃَﻋْﻤَﻰ) ﻭَﻧَﺤْﻮُﻩُ اﻷَْﻋْﺸَﻰ ﻧَﻬْﺮٌ (ﺇﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﻜُﻮﻥَ) ﺃَﻱْ ﻏَﻴْﺮُ اﻟْﻔَﺎﺳِﻖِ (ﺃَﻋْﻠَﻢَ اﻟْﻘَﻮْﻡِ) ﻓَﻬُﻮَ ﺃَﻭْﻟَﻰ (ﻭَﻣُﺒْﺘَﺪِﻉٌ)..........الخ
উক্ত ইবারতের ব্যখায় ইবনে আবেদীন শামী রাহ লিখেন,
وفي رد المحتار تحت ......
(ﻗَﻮْﻟُﻪُ ﻭَﻓَﺎﺳِﻖٌ) ﻣِﻦْ اﻟْﻔِﺴْﻖِ: ﻭَﻫُﻮَ اﻟْﺨُﺮُﻭﺝُ ﻋَﻦْ اﻻِﺳْﺘِﻘَﺎﻣَﺔِ، ﻭَﻟَﻌَﻞَّ اﻟْﻤُﺮَاﺩَ ﺑِﻪِ ﻣَﻦْ ﻳَﺮْﺗَﻜِﺐُ اﻟْﻜَﺒَﺎﺋِﺮَ ﻛَﺸَﺎﺭِﺏِ اﻟْﺨَﻤْﺮِ، ﻭَاﻟﺰَّاﻧِﻲ ﻭَﺁﻛِﻞِ اﻟﺮِّﺑَﺎ ﻭَﻧَﺤْﻮِ ﺫَﻟِﻚَ، ﻛَﺬَا ﻓِﻲ اﻟْﺒُﺮْﺟَﻨْﺪِﻱِّ ﺇﺳْﻤَﺎﻋِﻴﻞُ.
ﻭَﻓِﻲ اﻟْﻤِﻌْﺮَاﺝِ ﻗَﺎﻝَ ﺃَﺻْﺤَﺎﺑُﻨَﺎ: ﻻَ ﻳَﻨْﺒَﻐِﻲ ﺃَﻥْ ﻳَﻘْﺘَﺪِﻱَ ﺑِﺎﻟْﻔَﺎﺳِﻖِ ﺇﻻَّ ﻓِﻲ اﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﻷَِﻧَّﻪُ ﻓِﻲ ﻏَﻴْﺮِﻫَﺎ ﻳَﺠِﺪُ ﺇﻣَﺎﻣًﺎ ﻏَﻴْﺮَﻩُ. اﻩـ. ﻗَﺎﻝَ ﻓِﻲ اﻟْﻔَﺘْﺢِ ﻭَﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻓَﻴُﻜْﺮَﻩُ ﻓِﻲ اﻟْﺠُﻤُﻌَﺔِ ﺇﺫَا ﺗَﻌَﺪَّﺩَﺕْ ﺇﻗَﺎﻣَﺘُﻬَﺎ ﻓِﻲ اﻟْﻤِﺼْﺮِ ﻋَﻠَﻰ ﻗَﻮْﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ اﻟْﻤُﻔْﺘَﻰ ﺑِﻪِ ﻷَِﻧَّﻪُ ﺑِﺴَﺒِﻴﻞٍ ﺇﻟَﻰ اﻟﺘَّﺤَﻮُّﻝ
ভাবার্থঃফাসিক অর্থাৎ যিনি ইসলামের স্বাভাবিক নিয়ম থেকে বের হয়ে গেছেন।আমি মনে করি, সম্ভবত এর অর্থ হল, যিনি কবিরা গোনাহে লিপ্ত রয়েছেন।যেমন মদপান কারী,ব্যভিচারী,সুদখোর,ইত্যাদি।(বুরজানদি)মে'রাজ নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,আমাদের উলামায়ে কিরামগণ বলেন,জুমুআহ ব্যতীত ফাসিকের ইমামতিতে কেউ নামায পড়বে না।কেননা জুমুআহ শহরে একটা হওয়ার ধরুণ ভিন্ন ইমাম খুঁজে পাওয়া মুশকিল কিন্তু অন্যান্য নামাযে মুশকিল হবে না।ইমদাদুল ফাত্তাহ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,ইমাম মুহাম্মদ রাহ এর মতে উপরুক্ত উসূলে ভিত্তিতে যদি কোনো শহরে একাধিক জুমুআহর জামাত হয় তাহলে এমন ইমামের পিছনে তখন নামায পড়া মাকরুহ হবে।কেননা তখন ভিন্ন জামাতে শরীক হওয়ার সুযোগ রয়েছে।(রদ্দুল মুহতার;১/৫৬০)
কবিরাহ গোনাহে লিপ্ত ব্যক্তির পিছনে নামায পড়া মাকরুহে তাহরিমী।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-৬/১০৫)
কবিরা গোনাহে লিপ্ত ইমামের পিছনে নামায পড়া মাকরুহ।উক্ত ইমামকে বরখাস্ত করলে যদি ফিৎনা ফাসাদের আশঙ্কা থাকে তাহলে এমতাবস্থায় উক্ত ইমামের পিছনেই নামায পড়ে নেয়া শ্রেয়।
(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-৪/৮০)
কবিরা গোনাহে লিপ্ত ব্যক্তির পিছনে নামায পড়া মাকরুহে তাহরিমী না তানযিহি?
فَالْحَاصِلُ أَنَّهُ يُكْرَهُ لِهَؤُلَاءِ التَّقَدُّمُ وَيُكْرَهُالِاقْتِدَاءُ بِهِمْ كَرَاهَةَ تَنْزِيهٍ، فَإِنْ أَمْكَنَ الصَّلَاةُ خَلْفَ غَيْرِهِمْ فَهُوَ أَفْضَلُ وَإِلَّا فَالِاقْتِدَاءُ أَوْلَى مِنْ الِانْفِرَادِ وَيَنْبَغِي أَنْ يَكُونَ مَحَلُّ كَرَاهَةِ الِاقْتِدَاءِ بِهِمْ عِنْدَ وُجُودِ غَيْرِهِمْ وَإِلَّا فَلَا كَرَاهَةَ كَمَا لَا يَخْفَى
ভাবার্থ-মোটকথা,পূর্বে উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গের জন্য ইমামতি করা মাকরুহে তানযিহি এবং তাদের পিছনে নামায পড়া মুক্তাদিদের জন্যও মাকরুহ তানযিহি।যদি ঐ সমস্ত ইমামগণ ব্যতীত অন্য কোনো মসজিদে নামায পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়,তাহলে সেখানেই নামায পড়া উত্তম হবে।নতুবা একা নামায পড়ার চেয়ে তাদের পিছনেই নামায পড়া উত্তম।ঐ সমস্ত ব্যক্তিবর্গ ব্যতীত তাদের চেয়ে উত্তম ব্যক্তিবর্গ কে ইমাম হিসেবে পাওয়া গেলে তখনই তাদের পিছনে নামায মাকরুহ।নতুবা এদের পিছনেই নামায পড়া জায়েয(মাকরুহ ব্যতীত)।(বাহরুর রায়িক১/৩৭)
সু-প্রিয় প্রশ্নকর্তা দ্বীনী ভাই!
প্রথম কথা হল,কবিরাহ গোনাহে বরাবর লিপ্ত ব্যক্তির পিছনে নামায পড়লে নামায যদিও আদায় হয়ে যাবে।তথাপি তাদের পিছনে নামায পড়া মাকরুহ।মাকরুহ- তানযিহি না তাহরিমী? সেটা নিয়ে আমাদের হানাফি পূর্ববর্তী ও পরবর্তি কিতাব সমূহে ভিন্ন ভিন্ন মত পাওয়া যায়।তাই এ সম্পর্কে এতটুকুই বলা যায় যে,তা পরিবেশ-পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে।যদি দেখা যায় যে,পরিস্থিতি চুড়ান্ত পর্যায়ের আশঙ্কাজনক তখন মাকরুহে তাহরিমী হবে।নতুবা তানযিহি।ফিতনার আশংকা না থাকলে এমন ইমামকে অপসারণ করাই উচিৎ।