ওয়া আলাইকুমুস সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
■ আল্লাহ তায়ালা বলেন-
إِنَّهُ لَقُرْآنٌ كَرِيمٌ. فِي كِتَابٍ مَّكْنُونٍ. لَّا يَمَسُّهُ إِلَّا الْمُطَهَّرُونَ
নিশ্চয় এটা সম্মানিত কোরআন, যা আছে এক গোপন কিতাবে,
যারা পাক-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ একে
স্পর্শ করবে না। (সূরা ওয়াকিয়া, আয়াত নং- ৭৭,৭৮,৭৯)
■ তিনি আরো বলেন-
وَإِذَا قُرِئَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُوا لَهُ
وَأَنصِتُوا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ
এবং নিশ্চুপ থাক যাতে তোমাদের উপর রহমত হয়। (সূরা আরাফ, আয়াত
নং- ২০৪)
■ আল্লাহ তাআলার নাম, কুরআনের আয়াত কাউকে সতর্ক করার জন্য বা ডাকার জন্য ব্যবহার করা জায়েজ নেই। আর
মোবাইলের রিংটোনও যেহেতু সতর্ক করা ও ডাকার সমার্থক। তাই মোবাইলের রিংটোন আল্লাহর
নামও কুরআনের আয়াত ব্যবহার করা জায়েজ হবে না।
অনেক কারণেই তা নিষিদ্ধ। যথা-
১. আজান আল্লাহ তা‘আলার একত্ববাদ, বড়ত্ব ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রিসালাতের সাক্ষ্য
সম্বলিত কিছু বাক্যের সমষ্টি যা ইসলামি শরিয়তের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিআর বা প্রতীক।
অনুরূপভাবে পবিত্র কুরআনের আয়াত ও আল্লাহ তা‘আলার নামের জিকির যে কত মর্যাদাপূর্ণ
বিষয় তাও বলার অপেক্ষা রাখে না।
এদিকে মোবাইলে রিং আসার অর্থ হলো, আপনাকে একথা অবহিত করা যে, কেউ আপনার সাথে কথা বলতে
চায়। এখন ‘কেউ আপনার সাথে কথা বলতে চায়’ এই খবরটুকু দেওয়ার জন্য কি মহান আল্লাহর
বড়ত্ব সম্বলিত আজান ও মহামর্যাদাপূর্ণ কুরআনের আয়াত বা জিকির ব্যবহার করা সমীচীন? এসব আওয়াজকে এই উদ্দেশ্যে ব্যবহার করাটা পবিত্র শব্দসমূহকে অবমাননা ও অপাত্রে
ব্যবহার করার শামিল নয় কি ?
২. মোবাইল
নিয়ে বাথরুমে প্রবেশ করার পর রিং আসলে অপবিত্র স্থানে পবিত্র তিলাওয়াত, আজান, জিকির ইত্যাদি বেজে উঠবে। এতে এগুলোর পবিত্রতা কত মারাত্মকভাবে
ক্ষুন্ন হয় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
৩. রিংটোন
হিসেবে কুরআন তিলাওয়াত ব্যবহার করলে অনেক সময় এমন হওয়া স্বাভাবিক যে, কে কল করেছে তা দেখা ও কল রিসিভ করার ব্যস্ততার দরুণ তিলাওয়াতের প্রতি
ভ্রুক্ষেপ করার সুযোগ হয় না। অথচ আদব হলো, কুরআন তিলাওয়াত চলতে থাকলে
কাজ বন্ধ করে মনোযোগ দিয়ে তিলাওয়াত শ্রবণ করা।
৩. কারো
মোবাইলে রিং আসলে সে যেহেতু রিসিভের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং রিসিভ করাই তার মূল
উদ্দেশ্য থাকে তাই আয়াতের যে কোনো স্থানেই তিলাওয়াত চলতে থাকে সেদিকে খেয়াল না করে
রিসিভ করে ফেলে। ফলে অনেক সময় উচ্চারিত অংশের বিবেচনায় আয়াতের অর্থ বিকৃত হয়ে যায়।
আর পবিত্র কুরআনের অর্থ বিকৃতি যে কত বড় গুনাহের কাজ তা বলাই বাহুল্য!
মোটকথা বহু কারণেই আজান, জিকির, তিলাওয়াত ইত্যাদিকে রিংটোন হিসেবে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা জরুরি।
[আল আশবাহ ওয়ান্ নাযায়ের, পৃষ্ঠা: ৩৫ আল কাফী- ১/ ৩৭৬
ফাতাওয়ায়ে আলমগীরি-৫/ ৩১৫, আত্ তিবইয়ান ফি আদাবি হামালাতিল কুরআন- ৪৬, রদ্দুল মুহতার- ১/ ৫১৮}
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
না, আজান বা
কুরআন তেলাওয়াত রিংটোন অথবা এলার্ম হিসেবে ব্যবহার করা জায়েজ নয়।