আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
263 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (32 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ। https://ifatwa.info/28681/?show=29064#a29064 এই প্রশ্নটায় একটা বিষয়ে আমার ক্লিয়ার হয়নি, তাই প্রশ্নটা আবার করছি। তার সাথে নতুন আরেকটি বিষয় জানতে চাচ্ছি। আফওয়ান,উস্তাদ। আপনাদের উছিলায় আল্লাহ অনেক বিষয়গুলো ক্লিয়ার হবার সুযোগ দিচ্ছেন,জাজাকুমুল্লাহু খাইরান।

১. কিয়ামতের সময় সবকিছু ধ্বংস করে দেয়া হবে। তখন কি নবী রাসূল গণের কবরও ধ্বংস করে দেয়া হবে? উনারা যে বারযাখের জীবনে জীবিত, এরপর উনারা আবার অস্তিত্বহীন হয়ে যাবেন?

২. শহীদরাও মৃত্যুর পর জীবিত এবং রিজিক পাই। নবী রাসূলগণের চেয়ে উনাদের মর্যাদা কম। উনারা নামাজ পড়তে পারেন না আরো কিছু বিষয়ে নবী রাসূলগণের চেয়ে কম মর্যাদাবান। তবে জীবিত বলতে আমরা বুঝি আত্মা ও শরীর দুটোই থাকতে হবে (আকিদা ক্লাসে উস্তাদ পড়াইছিলেন,iom)। তাহলে কি শহীদরা জান্নাতে সবুজ পাখি হয়ে রিজিক পান? (সবুজ পাখি শরীর ও শহীদদের রুহ)। নবীদের সাথে শহীদদের জীবিতের মধ্যে আর কি কি পার্থক্য আছেন?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَ نُفِخَ فِی الصُّوۡرِ فَصَعِقَ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ اِلَّا مَنۡ شَآءَ اللّٰہُ ؕ ثُمَّ نُفِخَ فِیۡہِ اُخۡرٰی فَاِذَا ہُمۡ قِیَامٌ یَّنۡظُرُوۡنَ ﴿۶۸﴾ 

আর শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, ফলে আসমানসমূহে যারা আছে ও যমীনে যারা আছে তারা সবাই বেহুশ হয়ে পড়বে, যাদেরকে আল্লাহ ইচ্ছে করেন তারা ছাড়া। তারপর আবার শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, ফলে তৎক্ষণাৎ তারা দাঁড়িয়ে তাকাতে থাকবে।
(সুরা আয যুমার ৬৮)


وَ یَوۡمَ یُنۡفَخُ فِی الصُّوۡرِ فَفَزِعَ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ اِلَّا مَنۡ شَآءَ اللّٰهُ ؕ وَ کُلٌّ اَتَوۡهُ دٰخِرِیۡنَ ﴿۸۷﴾

আর যেদিন শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, সেদিন আসমানসমূহ ও যমীনে যারা আছে সবাই ভীত হবে; তবে আল্লাহ যাদেরকে চাইবেন তারা ছাড়া। আর সবাই তাঁর কাছে হীন অবস্থায় উপস্থিত হবে। 
(সুরা নামল ৮৭)

فزع শব্দের অর্থ, অস্থির ও উদ্বিগ্ন হওয়া। [ফাতহুল কাদীর]
 অন্য এক আয়াতে এ স্থলে فزع শব্দের পরিবর্তে صعق শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। [সূরা আয-যুমার: ৬৮] এর অর্থ অজ্ঞান হওয়া। যদি উভয় আয়াতকে সিঙ্গার প্রথম ফুৎকারের সাথে সম্পর্কযুক্ত করা হয়, তবে উভয় শব্দের সারমর্ম হবে এই যে, সিঙ্গার ফুঁক দেয়ার সময় প্রথমে সবাই অস্থির উদ্বিগ্ন হবে, এরপর অজ্ঞান হয়ে যাবে এবং অবশেষে মরে যাবে। 
[ ইবনে কাসীর]


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ بْنُ خَلِيْلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّحِيْمِ عَنْ زَكَرِيَّاءَ بْنِ أَبِيْ زَائِدَةَ عَنْ عَامِرٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنِّيْ أَوَّلُ مَنْ يَرْفَعُ رَأْسَهُ بَعْدَ النَّفْخَةِ الآخِرَةِ فَإِذَا أَنَا بِمُوْسَى مُتَعَلِّقٌ بِالْعَرْشِ فَلَا أَدْرِيْ أَكَذَلِكَ كَانَ أَمْ بَعْدَ النَّفْخَةِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শেষবার শিঙ্গায় ফুঁক দেয়ার পর যে সবার আগে মাথা উঠাবে, সে আমি। তখন আমি মূসা (আঃ)-কে দেখব আরশের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায়। আমি জানি না, তিনি আগে থেকেই এভাবে ছিলেন, না শিঙ্গায় ফুঁক দেয়ার পর। [বুখারী শরীফ ৪৮১৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৪৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৪৫০)
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কিয়ামতের সময় সকলে অস্তিত্বহীন হয়ে যাবে ধংস হয়ে যাবে,বিষয়টি সঠিক নয়।
বরং সকল কবরবাসী বেহুশ হয়ে যাবে,এরপর মারা যাবে।
তারপর পুনরায় জীবিত হবে।

নবীগন বারযাখের জগতে জীবিত, কিন্তু সেই সময়ে বেহুশ হয়ে যাওয়ার পর মৃত্যু বরন করবেন। 

(০২)
শহীদরা জান্নাতে সবুজ পাখি হয়ে উড়তে থাকেন।
রিজিক পান কিনা,সেটি হাদীসে নেই।

★নবীগন স্বীয় শরীরেই জীবিত আছেন,আর শহীদগন জান্নাতের পাখি হয়ে জীবিত আছেন।

★নবীগন কবরে নামাজ আদায় করছেন,আর শহীদগন জান্নাতে পাখি হয়ে উড়তেছেন।
★শহীদদেরকে মৃত ধরে এবং তাদের পরিত্যক্ত সম্পত্তি ওয়ারিসগণের মধ্যে বন্টিত হয়, তাদের বিধবাগণ অন্যের সাথে পুনর্বিবাহ করতে পারে। 

নবীদের ক্ষেত্রে এমনটি হয়না।

হাদীস শরীফে এসেছে,
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “শহীদগণের রূহ সবুজ পাখীর প্রতিস্থাপন করা হয়, ফলে তারা জান্নাতের যেখানে ইচ্ছা সেখানে ঘুরে বেড়াতে পারে। তারপর তারা আরশের নীচে অবস্থিত কিছু ঝাড়বাতির মধ্যে ঢুকে পড়ে। তখন তাদের রব তাদের প্রতি এক দৃষ্টি দিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তোমরা কি চাও? তারা বলে হে রব! আমরা কি চাইতে পারি? আমাদেরকে যা দিয়েছেন তা তো আপনি আপনার কোন সৃষ্টিকে দেন নি। তারপরও তাদের রব আবার তাদের প্রতি দৃষ্টি দিয়ে অনুরূপ প্রশ্ন করেন।
যখন তারা বুঝল যে, তারা কিছু চাইতেই হবে, তখন তারা বলে, আমরা চাই আপনি আমাদেরকে দুনিয়ার জীবনে ফেরৎ পাঠান, যাতে আমরা পুনরায় আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করে শহীদ হতে পারি। শহীদগণের সাওয়াবের আধিক্য দেখেই তারা এ কথা বলবে- তখন তাদের মহান রব তাদের বলবেন, আমি এটা পূর্বে নির্ধারিত করে নিয়েছি যে, এখান থেকে আর ফেরার কোন সুযোগ নেই।” [মুসলিম: ১৮৮৭]


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (32 points)
জ্বি উস্তাদ এখন সব ক্লিয়ার। জাজাকাল্লাহু খাইরান

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...