আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
203 views
in সালাত(Prayer) by (100 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
১.নামাজের মাঝে কিছু খাওয়া বা গিলে ফেললে তো নামাজ ভেঙে যায়!   কিন্তু নামাজে একটু পর পর  সামান্য থু থু এর মতো মুখের ভিতর থাকে মনে হয়, আর তা একটু পর পর নরমালি  গিলে ফেলি!
[ টা গলা থেকে কিছু বেরিয়ে আসে না , বরং থু থু জাতীয় সামান্য  জমে এমন মনে হয়, খুবই সামান্য,  সাধারণত আমাদের মুখ তো কখনোই শুকনো থাকে না, ভেজা ভেজা থাকে!]
সন্দেহ হয়,  এই গিলে ফেলার জন্য কি নামাজ ভেঙে যায়??
২.ওজু করার সময় এক অঙ্গ ধোঁয়ার পর হাতে যে অবশিষ্ট পানি লেগে থাকে,  সেই হাতেই নতুন পানি নিয়ে আরেক অঙ্গ ধুই! এতে কি ওজুতে সমস্যা হয়?!  নাকি প্রতি অঙ্গ ধোঁয়ার পর হাতে যে অবশিষ্ট পানি লেগে থাকে তার জন্য হাত ধুয়ে নিবো তারপর নতুন পানি নিয়ে আরেক অঙ্গ ধুবো?!

৩. ওজু করার সময় নাকে পানি দিয়ে আঙ্গুল দিয়ে নাক তিনবার পরিস্কার করার পর হাত ধুয়ে নেই, কারণ নাকের ভিতরে ময়লা থাকতে পারে তা হাতে লেগে থাকতে পারে তাই!  হাত ধুয়ে তারপর চেহারা ধোঁয়ার জন্য পানি নেই ও চেহারা ধুই!
এই যে, নাকে পানি দেয়ার পর যে হাত ধুয়ে নিলাম তারপর ওজুর বাকি কাজ করলাম এতে কি ওজুতে সমস্যা হয়?!
৪. কল ছেড়ে ওজু করলে প্রতি অঙ্গ ধোঁয়ার সময় কল বন্ধ করে নেই যেন পানি অপচয় না হয়! আর প্রতিবার কল ছাড়তে হয় ওজুর মাঝে! এতে কল ধরার ফলে হাতটা আবার ধুয়ে নেই যেহেতু কল ধরলাম, কলের উপরে কিছু পানি  থাকে তা ধরার ফলে হাতে লেগে যায় তাই!
এভাবে ওজুর মাঝে বার বার হাত অল্প অল্প করে ধোঁয়ার জন্য কি ওজু ভেঙে যায়?!
৫. ওজুতে পা ধোঁয়ার সময় কল ছেড়ে মগে পানি নেয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায় মগে পানি নেয়ার সময় পানি আশেপাশে ছিটে অনেকটা! আবার নিচে বালতিতে পানি ও থাকে যা পবিত্র কিন্তু ওজুর জন্য উপযুক্ত না!   এতে ছিটে পানি আবার মগের ওজুর পানিতে পড়ে কিনা বুঝতে পারি না!  যদি ছিটে পানি মগের পানিতে আসে সামান্য সেই পানিতে পা ধুলে ওজু হবে?!
৬. কল ছেড়ে ডিরেক্ট পা ধোঁয়ার ক্ষেত্রে তিনবার কিভাবে ধুতে হয়?  তিনবার কলের নিচে পা নিয়ে ধুবো এভাবে?!  নাকি কলের নিচে একবার ই পা রেখে সম্পুর্ণ ধুয়ে নিবো?!

৭.ওজুর করার মাঝে বা ওজু করার পর, ও নামাজের মাঝে অনিচ্ছাকৃত ভাবে হাত বা পায়ের  আঙ্গুল ফুটলে কি ওজু, নামাজ ভেঙে যায়?!
৮.ওজুর ক্ষেত্রে কোনো অঙ্গ একবার আর কোনো অঙ্গ তিনবার ধুলে কি ওজু ভুল হবে?!
যদি শুধু ফরজ গুলোর মাধ্যমে ওজু করতে চাই, সেক্ষেত্রে ফরজ অঙ্গগুলো তিনবার করে ধুতে হয়  নাকি একবার করে ধুতে হয়?!
৯. ওজুর ফরজ গুলো শুধু পালন করলেও  তো ওজু হয়ে যাবে না?!  ওজুতে  বিসমিল্লাহ বলা কি ফরজ?!

১০. নামাজে ভালো ভাবে হিজাব পড়ে নেয়ার পর আয়না ভালো ভাবে  না  দেখেই ভাবলাম যে চুল ঢেকেছে সব, বের হওয়া নেই কোথাও,  নামাজ শেষে যদি দেখা যায় কপালের দিক হতে বা যে কোনো পাশ থেকে সামান্য চুলের কিছু অংশ বের হয়ে ছিলো তখন কি আবার নামাজ পড়তে হবে?!

  শিওর না যে নামাজের মাঝে চুল বেরিয়েছে নাকি নামাজের আগেই বের হওয়া ছিলো!
এতোগুলো প্রশ্ন করার জন্য আফওয়ান!!


জাযাকাল্লাহু খাইরান!

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

 আল্লাহ তায়ালা বলেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ ۚ

হে মুমিনগণযখন তোমরা নামাযের জন্যে উঠতখন স্বীয় মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত কর ও মাথা মাসেহ কর এবং পদযুগল গিটসহ। (সূরা মায়িদা, আয়াত ৬)

 ওজুর ফরজ চারটি: ১. সমস্ত মুখমন্ডল ধৌত করা। ২. দুই হাতের কনুই পর্যন্ত ধৌত করা। ৩. মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা। ৪. পদযুগল গিটসহ ধৌত করা।

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ تَوَضَّأَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَرَّةً مَرَّةً.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিততিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক উযূ (ওজু/অজু/অযু)-তে একবার করে ধুয়েছেন। (সহীহ বুখারীহাদীস নং- ১৫৯)

 

 হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ عَطَاءَ بْنَ يَزِيدَ، أَخْبَرَهُ أَنَّ حُمْرَانَ مَوْلَى عُثْمَانَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، رَأَى عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ دَعَا بِإِنَاءٍ، فَأَفْرَغَ عَلَى كَفَّيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ فَغَسَلَهُمَا، ثُمَّ أَدْخَلَ يَمِينَهُ فِي الإِنَاءِ فَمَضْمَضَ، وَاسْتَنْشَقَ، ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا، وَيَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ ثَلاَثَ مِرَارٍ، ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ، ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَيْهِ ثَلاَثَ مِرَارٍ إِلَى الْكَعْبَيْنِ، ثُمَّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنْ تَوَضَّأَ نَحْوَ وُضُوئِي هَذَا، ثُمَّ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ، لاَ يُحَدِّثُ فِيهِمَا نَفْسَهُ، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ".

হুমরান (রহঃ) থেকে বর্ণিততিনি ‘উসমান ইবনু আফফান (রাঃ)-কে দেখেছেন যেতিনি পানির পাত্র আনিয়ে উভয় হাতের তালুতে তিনবার ঢেলে তা ধুয়ে নিলেন। এরপর ডান হাত পাত্রের মধ্যে ঢুকালেন। তারপর কুলি করলেন ও নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলেন। তারপর তাঁর মুখমণ্ডল তিনবার ধুয়ে এবং দু’হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুয়ে নিলেন। এরপর মাথা মাসেহ করলেন। তারপর উভয় পা গিরা পর্যন্ত তিনবার ধুয়ে নিলেন। পরে বললেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আমার মত এ রকম উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবেতারপর দু রাক‘আত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবেযাতে দুনিয়ার কোন খেয়াল করবে নাতার পেছনের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহীহ বুখারী ১৬১)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. না, নামাজের মধ্যে থুথু বা থুথু জাতীয় গিলে ফেললে নামাজ ভাঙ্গবে না।

২. ওজু করার সময় এক অঙ্গ ধৌত করার পর হাতে যে অবশিষ্ট পানি লেগে থাকে, সেই হাতেই নতুন পানি নিয়ে আরেক অঙ্গ ধৌত করতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা নেই।

. না, এতে ওজুতে কোনো সমস্যা হয় না
৪. না, এতে ওজু ভাঙ্গবে না। তবে এভাবে বারবার হাত ধৌত করার  কোনো প্রয়োজন নেই।
৫. হ্যাঁ, সেই পানিতে পা ধৌত করলে ওজু হবে। এতে কোনো সমস্যা নেই।
৬. তিনবার কলের নিচে পা নিয়ে ধৌত করবেন। তবে একবার ধৌত করলেও ওজু হয়ে যাবে।
৭. না, ওজু করার মাঝে বা ওজু করার পর, ও নামাজের মাঝে অনিচ্ছাকৃত ভাবে হাত বা পায়ের  আঙ্গুল ফুটলে ওজু নামাজ ভাঙ্গবে না।
৮. ওজু হয়ে যাবে।
৯. ওজুর ফরজ গুলো শুধু পালন করলেও  ওজু হয়ে যাবে আর ওজুতে  বিসমিল্লাহ বলা ফরজ নয়।
১০. নামাজের আগে ও মাঝে উভয় অবস্থাতে চুল বের হয়ে গেলে আর এই অবস্থায় নামাজ পড়লে নামাজ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 164 views
0 votes
1 answer 255 views
0 votes
1 answer 157 views
0 votes
1 answer 295 views
...