আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
217 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (26 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ্।

১)নফল যেমন তাহাজ্জুদ নামাজে সিজদায় গিয়ে তাসবিহ পাঠ করার পর, দুই সিজদার মাঝে,সালাম ফেরানোর আগে বাংলায় দোয়া করা যাবে?

নফল নামাজে কি ক্রন্দন করা যাবে?

২)নামাজে সূরা মেলানোর সময় এক সূরা শেষ হওয়ার পর আবার আরেক সূরা মেলানো যাবে?এক্ষেত্রে কি প্রতি সূরার আগে বিসমিল্লাহ পাঠ করতে হবে?
৩)জেনারেল স্টুডেন্টদের জন্য কোনো ভালো বাংলা ভাষায় অনুদিত বা রচিত তাফসির এবং সিরাহ গ্রন্থ সাজেস্ট করুন প্লিজ।

শায়েখ মুহাম্মাদ সালেহ আল মুয়াজ্জিদ এর "যেমন ছিলেন তিনি "এই সিরাহ গ্রন্থটি কেমন?

৪)আমার কাছে " এমদাদিয়া পুস্তকালয় লি:"এর একটি কুরআন, "সালমা বুক ডিপো,ঢাকা" এর একটি অর্থ, উচ্চারণ, শানে নুযুল সহ একটি কুরআন এবং মূল তফসির মাআারেফুল কুরআন (হযরত মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ শাফী'(রহঃ),অনুবাদ (মাওলানা মহিউদ্দিন খান)এর সংক্ষিপ্ত তাফসির আছে।

প্রশ্ন হচ্ছে এগুলো কি পড়া যাবে?

কোরআনের ক্ষেত্রে একটি ভিডিও তে দেখেছি,আরবি ফন্ট নিয়ে কিছু সমস্যা আছে,এখানে কি বলা হয়েছে?

৫)তাহলে কোণ প্রকাশনীর কুরআন কিনবো?

৬)নামাজে ফরজ পড়ার পর,বা সুন্নাত পড়ার পর সালাম ফিরিয়ে কি কারো সাথে কথা বলা যাবে?

৭)কাওকে নসিহাহ করার সময় বা ফেসবুকে দ্বীনি পোস্ট করার সময় কি এরকম লেখা যাবে যে আমিও আগে খারাপ কাজ করতাম,পর্দ করতাম না,মিথ্যা বলতাম, এমন?এটা কি গুনাহ প্রকাশ করে দেয়া হবে?

৮)কোনো নাপাক কাপড় সঠিকভাবে ধোয়ার পর অন্য ভেজা কাপড়ের সাথে একসাথে কোনো বালতিতে রাখা যাবে যে কাপড় শুদ্ধভাবে ধোয়া হয়নি?

৯)এক ভিডিওতে শুনলাম নোমান আলী খানের ভিডিও দেখা যাবে না,এটা কি ঠিক?পাকিস্তানের তারেক জামিলের আলোচনা শোনা যাবে?

১০)কোনো স্যারকে ছাত্রী  কি উপহার হিসেবে কিছু দিতে পারবে যে সাফল্যের একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে,যদি সে প্রবীণ হয়?যেমন কোনো ডায়েরি,কলম এসব।বা তাকে কি কোনো ফলমূল বা ভালো জিনিস নিয়ে দেখতে যাওয়া যাবে পরিপূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে?
১১)শুধুমাত্র মনি বের হলেই নাকি মহিলাদের গোসল ফরজ হয়।এক্ষেত্রে উত্তেজনার সাথে না বের হলেও কি গোসল ফরজ হবে?
১২)কাউকে দাওয়াহ দেওয়ার সঠিক নিয়ম কি?

১৩)ফেসবুকে কোনো দ্বীনি পোস্ট করার জন্য কি কুরআন, তাফসির, সিরাহ সব পড়ার পর,যথাযথ ইলম অর্জনের পর পোস্ট করতে হবে নাকি যতটুকু জানি ততটুকুই শেয়ার করতে পারবো?

১৪)দ্বীনি বিষয়ে লেখার সময় কি কোনো কাল্পনিক মানুষের নাম দিয়ে গল্প বানানো যাবে,এটি কি মিথ্যা বলা হবে?
১৫)কোনো ভুল না করে বার বার মনে হয় ভুল করেছি,এবং এর জন্য বার বার ক্ষমা চাওয়া কি দূর্বল ঈমানের বৈশিষ্ট্য? আবার শয়তানের ওয়াসওয়াসা হয় যদি যে মনে হচ্ছে ভুল করছি,এভাবে একদিন ভুল পথে চলে যাব,এই ভেবে বিশ্বাস রাখা যাবে কি  ভুল করছি না?

১৬)আমি একবার একরকম প্রতিজ্ঞাই করেছিলাম যে অনলাইনে ভয়েস মেসেজও দিবো না কখনো,বাট এখন একটা অনলি গার্লস পেজ সেটার নাম হলো "Muslimah Confidence Workshop" সেখানে অনেক ভালো বিষয়ে আলোচনা করা হয়।এখন সেখানে নারী কিনা সেটা যাচাই এর জন্য ভয়েস মেসেজ দিতে হলে কি দেয়া যাবে?দিলে কি গুনাহ হবে? যদি দেই প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করা হবে কি?যেহেতু আমি ইলম অর্জনের জন্য দিচ্ছি।
আর এরকম ভাবে কি প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ জায়েজ?

১৭)কেউ একজন ছেলেদের সাথে মেলামেশা করতো,কথা বলতো,এখন যদি সে ফিরে আসতে চায়,তাহলে কি তাকে পরামর্শ দেয়া যাবে যে শেষবারের মতো তাদেরকে বলা যে আজ থেকে সে আর ফ্রি মিক্সিং এ নাই,ওদের সাথে মিশবে না,এভাবে বলতে? তাছাড়া তো ছেলেরা বার বার কথা বলতে চাইবে

 জাযাকাল্লাহ খায়ের।

1 Answer

0 votes
by (713,800 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)

নামাযে দু'আ  এবং বাংলায় দু'আ সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/185
আপনি নামাযের বাহিরে দু'আ করবেন, অথবা আপনি আপনার অন্তরে সেই বিশেষ বিষয়কে উপস্থিত রেখে মুজমাল দু'আ যাতে দুনিয়া আখেরাতের সকল প্রকার কল্যাণ রয়েছে,যেমন রাব্বানা আতিনা ফিদ-দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ এমন দু'আ করবেন।নফল সালাতে বাংলায় দু'আ সম্পর্কে হানাফি কোনো কোনো ফকীহ অনুমোদন ও দেন।

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
নামাযের সিজদায়,বা দুই সিজদার মাঝখানে কিংবা সালাম ফিরানোর পূর্বে কুরআন-হাদীসে বর্ণিত আরবীতে দু'আ করা যায়। বাংলাতে দু'আ করার সাধারণত কোনো নিয়ম নাই।তবে হ্যা, বাংলাতে দু'আ করার বিষয়ে কোনো কোনো ফকিহ অনুমতিও দিয়ে থাকেন।

নামাযে কান্না করার বিধান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/431

(২)
আউযু বিল্লাহ শুধুমাত্র প্রথম রাকাতে পড়া সুন্নত।

আর নামাযের প্রত্যেক রা'কাতে সূরায়ে ফাতেহার পূর্বে নিম্নস্বরে বিসমিল্লাহ্ পড়া সুন্নত।এবং সূরায়ে ফাতেহার পর সূরা মিলানোর পূর্বে বিসমিল্লাহ্ পড়া উত্তম।অবশ্য এ ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে।তবে সুন্নত না হওয়ার উপর সবাই-ই একমত।(কিতাবুন-নাওয়াযিল-৪/৫১,কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/১৭২)বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1300

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
একই রাকাতে অনেক সূরা যদি কেউ পড়ে, তাহলে প্রত্যেক সূরার প্রথমে বিসমিল্লাহ নিম্নস্বর বলা যাবে।বলাই উত্তম।তবে সুন্নত না।

(৩)
কুরআন তরজমার জন্য মুফতি তাকী উসমানি দাঃবাঃ কর্তৃক রচিত ''তাওযিহুল কুরআন" পড়তে পারেন।তাছাড়া মুহি উদ্দিন খান অনূদিত "মা'রিফুল কুরআন" কিতাবখানাও পড়তে পারেন।

সিরাহের জন্য, "আর-রাহিকুল মাখতুম" কিতাবখানাও পড়তে পারেন। তাছাড়া ইদরিস কান্দলভী দাঃবাঃ কর্তৃক রচিত "সীরাতে মুস্তাফা" কিতাব খানাও পড়তে পারেন।

(৪)
আপনার প্রশ্নটি অস্পষ্ট। আপনি কমেন্টে পরিস্কার করে উল্লেখ করবেন।আমি যতটুকু বুঝেছি, সেই আলোকে বলছি,
আপনি উপরোল্লিখিত কিতাবাদি পড়তে পারবেন।এতে কোনো সমস্যা নাই।

(৫)
ইসলামিয়া কুতুবখানার কুরআন ক্রয় করতে পারেন। তাছাড়া আরো অনেক প্রকাশনীর কুরআনের ফ্রন্ট বিশুদ্ধ রয়েছে।

(৬)
সালাম ফিরানোর পর তাসবিহাতে ব্যস্ত থাকাই সুন্নাহ।হ্যা, আপনি প্রয়োজনে যে কারো সাথে কথা বলতে পারবেন।

(৭)
দাওয়াত দিতে গিয়ে নির্দিষ্ট কারোর নির্দিষ্ট কোনো গোনাহ বা নিজের কোনো নির্দিষ্ট গোনাহকে প্রকাশ করা জায়েয হবে না।হ্যা, দাওয়াত ফলপ্রসূ হওয়ার জন্য আকারে ইঙ্গিতে অনির্দিষ্ট ভাবে ইশারা ইঙ্গিত করা যাবে।

(৮)
না, রাখা যাবে না।

(৯)
নোমান আলী খান সম্ভবত সালাফি মানহাযের লোক।তাই উনার থেকে দ্বীনের দাওয়াত গ্রহণ করা যাবে, তবে নির্দিষ্ট মাযহাব ফলোকারীর জন্য উনার ফিকহি আলোচনাকে গ্রহণ করা যাবে না।

(১০)
যেহেতু এতে ফিতনার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে, তাই এত্থেকে মুসলমান ছাত্রীদেরকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হবে। স্যারের সাথে বিনা প্রয়োজনে কথা বলা,দেখা করা, সবই নাজায়েয ও হারাম বলে বিবেচিত হবে,যদিও পর্দা মেন্টেইন করে হোকনা কেন?

(১১)
জ্বী, সহবাস ব্যতিত শুধুমাত্র মনি বের হলেই মহিলার উপর গোসল ফরয হয়ে থাকে। মযি বা ওদী বের হলে, উক্ত স্থানকে ধৌত করে নিলেই হবে, এক্ষেত্রে গোসল করতে হবে না।

(১২)
দায়ী যিনি হবেন, উনার আ'মল উন্নত হতে হবে। যাকে দাওয়াত দেওয়া হবে, তার সাথে উত্তম ও সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। তার মন-মানষিকতা বুঝে তাকে হেকমতের সাথে দাওয়াত দিতে হবে। মানুষের ভয় না দেখিয়ে আশার বাণী শোনাতে হবে।

(১৩)
দাওয়াত ও তাবলীগের জন্য বড় আলেম হওয়া শর্ত নয়। বরং যতটুকু জানা থাকবে, ততটুকুরই দাওয়াত পৌছানো একজন মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব। হ্যা, ওয়াজ করা,ফাতাওয়া প্রদান করা ইত্যাদির জন্য অবশ্যই ভালো আলেম হতে হবে।

(১৪)
কাল্পনিক মানুষের গল্পকে সত্য ও বাস্তব রূপে প্রকাশ করা নাজায়েয ও হারাম।হ্যা, কাল্পনিক গল্পকে কাল্পনিকভাবে উপস্থাপন করলে এতে কোনো সমস্যা হবে না।

(১৫)
ভুল না হওয়া সত্বেও আল্লাহর কাছে বারবার ক্ষমা চাওয়া, এটা ভুল বা অশুদ্ধ নয়, বরং এটা পূর্ণ ঈমানের পরিচায়ক।

(১৬)
আপনি যদি আল্লাহর নাম না নিয়ে প্রতিজ্ঞা করে থাকেন, তাহলে এতে কোনো সমস্যা হবে না।কিন্তু আল্লাহর নাম নিয়ে প্রতিজ্ঞা করলে, কাফফারা দিতে হবে।

(১৭)
জ্বী, উনি শেষবারের মত বলে আসতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (26 points)
জাযাকাল্লাহ খায়ের
২) আউযুবিল্লাহ কি প্রতি রাকাতের  ফাতিহা পড়ার আগে পরা যাবে?
৩)শায়েখ মুহাম্মাদ সালেহ আল মুয়াজ্জিদ এর "যেমন ছিলেন তিনি "এই সিরাহ গ্রন্থটি কেমন?১১)উত্তেজনার সাথে মনি না বের হলেও কি গোসল ফরজ হবে?
১৪)যেমন আরিফ আজাদ স্যার,বা এরকম আরো ইসলামিক রাইটাররা বিভিন্ন টপিকে লিখে থাকেন,জীবন যেখানে যেমন বইটিতে গল্প লিখেছেন। আমি যদি পর্দা সম্পর্কে সতর্ক করার জন্য লিখি "মিলির হাতদুটো কাপছে। আজ সে সোশাল মিডিয়া থেকে সব ফটো ডিলিট করে দিবে।..." এরকম কি লেখা যাবে?
১৬)আল্লাহর নাম নিয়ে বলতে শুধু এভাবে বলেছি,আল্লাহ,আমি কোনোদিন অনলাইনে ভয়েস মেসেজ দিবো না।এখন এটি দেয়া প্রয়োজন হয়ে পরেছে।ভাঙা যাবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...