আপনার মন অশান্তিতে আছে।এ জন্য আপনি নিয়মিত ধারাবাহিক আল্লাহর যিকির করতে থাকুন-দেখবেন মন শান্ত হবে।
الَّذِينَ آمَنُواْ وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُم بِذِكْرِ اللّهِ أَلاَ بِذِكْرِ اللّهِ تَطْمَئِنُّ الْقُلُوبُ
যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্তর আল্লাহর যিকির দ্বারা শান্তি লাভ করে; জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তর সমূহ শান্তি পায়।(সূরা রা'দ-২৮)
★ধৈর্য্য ধারণ করুন।
কেননা, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
وَاعْلَمْ أَنَّ النَّصْرَ مَعَ الصَّبْرِ، وَأَنْ الْفَرَجَ مَعَ الْكَرْبِ، وَأَنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا
জেনে রাখো- ধৈর্য্য ধারণের ফলে (আল্লাহর) সাহায্য লাভ করা যায়। কষ্টের পর স্বাচ্ছন্দ আসে। কঠিন অবস্থার পর স্বচ্ছলতা আসে। (ইমাম নববই-কৃত আলআরবাঈন-১৯)
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
وَاعْلَمْ أنَّ فِي الصَّبْرِ عَلَى مَا تَكْرَهُ خَيْرًا كَثِيرًا، وَأَنَّ النَّصْرَ مَعَ الصَّبْرِ، وَأَنَّ الْفَرَجَ مَعَ الْكَرْبِ، وَأَنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا
জেনে রাখ, কষ্ট সত্ত্বেও ধৈর্য ধারণ করার মধ্যে প্রভূত কল্যাণ রয়েছে। ধৈর্যের সাথে আসে বিজয়। বিপদের সাথেই আসে মুক্তি। দুঃখের সাথেই আছে সুখ। (মুসনাদে আহমাদ ২৮০৩)
★আপনি বেশি বেশি নেক আমল করুন, নামাজ পড়ুন, ইস্তেগফার করুন।
★তাকদিরের উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস রাখুন।
★চিন্তার মোড় ঘুরিয়ে দিন। দুনিয়ার মুসিবত নয়; বরং সবচে’ বড় মুসিবত তো হল আখেরাতের মুসিবত। সুতরাং চিন্তার ‘কেন্দ্রবিন্দু’ দুনিয়াকে না বানিয়ে আখেরাতকে বানান।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
مَنْ جَعَلَ الْهُمُومَ هَمًّا وَاحِدًا هَمَّ آخِرَتِهِ كَفَاهُ اللَّهُ هَمَّ دُنْيَاهُ وَمَنْ تَشَعَّبَتْ بِهِ الْهُمُومُ فِي أَحْوَالِ الدُّنْيَا لَمْ يُبَالِ اللَّهُ فِي أَىِّ أَوْدِيَتِهَا هَلَكَ
যে ব্যাক্তি তার সমস্ত চিন্তাকে একই চিন্তায় অর্থাৎ আখিরাতের চিন্তায় কেন্দ্রীভূত করেছে, আল্লাহ তার দুনিয়ার চিন্তার জন্য যথেষ্ট। অপর দিকে যে ব্যাক্তি যাবতীয় পার্থিব চিন্তায় নিমগ্ন থাকবে সে যে কোন উন্মুক্ত মাঠে ধ্বংস হোক, তাতে আল্লাহ্র কিছু আসে যায় না। (ইবনু মাজাহ ২৫৭)
★আপনার থেকেও যার অবস্থা আরো করুণ ও বেগতিক; তার দিকে তাকিয়ে উপদেশ গ্রহণ করুন।
ভাবুন, আল্লাহ আপনাকে তার থেকেও ভাল রেখেছেন।
★আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন এবং তাঁর প্রতি এ সুধারণা রাখুন যে, তিনি আপনাকে আপনার দুরাবস্থা থেকে নাজাত দিবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ‘আর যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।’ (তালাক ৩)
★সালাতুল হাজাত পড়ুন।
হাদিসে এসেছে, كَانَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ إِذَا حَزَبَهُ أَمْرٌ فَزِعَ إِلَى الصَّلاةِ রাসূলুল্লাহ ﷺ যখন দুঃশ্চিন্তায় পড়তেন, নামাযে মগ্ন হতেন। (জামিউল বায়ান ৭৭৯) আল্লাহ তাআলা বলেন, وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلاةِ তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। (সূরা বাকারা ৪৫)
★অধিকহারে ইস্তেগফার করুন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَنْ لَزِمَ الاِسْتِغْفَارَ جَعَلَ اللَّهُ لَهُ مِنْ كُلِّ ضِيقٍ مَخْرَجًا وَمِنْ كُلِّ هَمٍّ فَرَجًا وَرَزَقَهُ مِنْ حَيْثُ لاَ يَحْتَسِب
যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার করবে আল্লাহ তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুঃশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের সংস্থান করে দেবেন। (আবূদাউদ ১৫২০)
★অধিকহারে মহান আল্লাহর আছে দোয়া করুন।
★অধিকহারে দরুদপাঠ করুন।
আবু সাঈদ খুদরী রাযি. হতে এক বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ আবু উমামা রাযি. কে বলেছেন- আমি কি তোমাকে এমন একটি বাক্য শিক্ষা দিব না, তুমি যদি তা পাঠ কর, তাহলে আল্লাহ্ তা‘আলা তোমার দুশ্চিন্তা দূর করে দিবেন এবং তোমার ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করে দিবেন? বর্ণনাকারী বলেন- আমি বললাম, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে তা শিক্ষা দিন। তিনি বললেন, সকাল ও বিকালে তুমি পাঠ করবেঃ
اللّٰهُمَّ إِنِّى أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وأعوذبك من َالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَأعوذبك من الْجُبْنِ الْبُخْلِ وَغلبة الدَّيْنِ وَ قَهْرِ الرِّجَالِ
(অর্থ-হে আল্লাহ! আমি উদ্বিগ্ন ও বিষণ্ণ হওয়া থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে অক্ষম ও আলস্য হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তোমার কাছে আরও আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা করা ও ভীরু হওয়া থেকে। হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে ঋণের আধিক্য এবং পুরুষদের অন্যায় প্রাধান্য ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা হওয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।)
আবু উমামা রাযি. বলেন, আমি এই দু’আটি পাঠ করলাম। এতে আল্লাহ্ তা‘আলা আমার যাবতীয় দুশ্চিন্তা দূর করে দিলেন এবং ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করে দিলেন।