জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো ধুপকাঠি যেহেতু সরাসরি হারাম কাজের সাথে যুক্ত নয়। বরং ব্যবহারকারীর উপর নির্ভরশীল। এ কারণে এসব বিক্রির জন্য বিক্রেতা গোনাহগার হবে না। বা তার উপার্জিত টাকাও হারাম হবে না।
,
عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ: أَنَّ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ رَأَى حُلَّةً سِيَرَاءَ تُبَاعُ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، لَوِ ابْتَعْتَهَا تَلْبَسُهَا لِلْوَفْدِ إِذَا أَتَوْكَ وَالجُمُعَةِ؟ قَالَ: «إِنَّمَا يَلْبَسُ هَذِهِ مَنْ لاَ خَلاَقَ لَهُ» وَأَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ بَعْدَ ذَلِكَ إِلَى عُمَرَ حُلَّةً سِيَرَاءَ حَرِيرٍ كَسَاهَا إِيَّاهُ، فَقَالَ عُمَرُ: كَسَوْتَنِيهَا، وَقَدْ سَمِعْتُكَ تَقُولُ فِيهَا مَا قُلْتَ؟ فَقَالَ: «إِنَّمَا بَعَثْتُ إِلَيْكَ لِتَبِيعَهَا، أَوْ تَكْسُوَهَا»
আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উমর (রাঃ) একটি রেশমী হুল্লা বিক্রী হতে দেখে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি যদি এটি খরীদ করে নিতেন, তা হলে যখন কোন প্রতিনিধি দল আপনার কাছে আসে তখন এবং জুমুআর দিনে পরিধান করতে পারতেন। তিনি বললেনঃ এটা সে ব্যক্তিই পরতে পারে যার আখিরাতে কোন অংশ নেই। পরবর্তী সময়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর (রাঃ) এর নিকট ডোরাকাটা রেশমী হুল্লা পাঠান। তিনি কেবল তাকেই পরতে দেন। উমর (রাঃ) বললেন আপনি এখনি আমাকে পরতে দিয়েছেন, অথচ এ সম্পর্কে যা বলার তা আমি আপনাকে বলতে শুনেছি। তিনি বললেন আমি তোমার কাছে এজন্য পাঠিয়েছি যে তুমি এটি বিক্রি করে দিবে অথবা কাউকে পরতে দিবে। (সহীহ বুখারী-২/৮৬৮, হাদীস নং-৫৮৪১, ইফাবা-৫৪২৩)
,
أن بيع العصير ممن يتخذه خمرا إن قصد به التجارة، فلا يحرم وإن قصد به لأجل التخمير حرم (الأشباه والنظائر-53)
যার সারমর্ম হলো আঙ্গুরের নিংড়ানো রস বিক্রয় করা ব্যবসার উদ্দেশ্যে জায়েজ আছে।
★★আর যদি হিন্দু বা মাজার পূজারিদের সহযোগিতার উদ্দেশ্য করে মোমবাতি আগরবাতি গোলাপজল ইত্যাদি পন্য উৎপাদন বাজারজাত ইত্যাদি করে,তাহলে নাজায়েজ হবে।
বিক্রেতার গোনাহ হবে।
,
কেননা আল্লাহ্ তাআলা বলেন:
تعاونوا على البر والتقوى ولا تعاونوا على الإثم والعدوان والتقوى الله ان الله شديد العقاب
“তোমরা নেকী ও তাকওয়ার ক্ষেত্রে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করা; পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কেউ কাউকে সহযোগিতা করবে না। আল্লাহ্কে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ্ কঠিন শাস্তিদাতা”।[সূরা মায়িদা, আয়াত:২]
★জন্মদিনে ব্যবহৃত মোমবাতির ব্যবসা করা সংক্রান্ত উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ রয়েছে।
এমন ব্যবসা যেখানে মতপার্থক্য চলে আসে সেরকম ব্যবসায় সাধারণত নিজেকে না জড়ানোই ভাল ও উত্তম। তবে যদি কোথাও শত চেষ্টা করার পরও এছাড়া অন্য কোনো ব্যবসার সুযোগ না হয়,তাই যেহেতু কিছুসংখ্যক উলামায়ে এরকম ব্যবসার অনুমোদনের পক্ষে রয়েছেন, সেহেতু এরকম ব্যবসার অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।সেক্ষেত্রে গোনাহ ঐ ব্যক্তির-ই হবে, যে গোনাহকে সরাসরি সংগঠিত করবে। বিক্রেতার কোনো প্রকার গোনাহ হবে না।
বিস্তারিত জানুনঃ
★বাচ্চাদের প্রশ্নে উল্লেখিত লটারীর বিধানঃ
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
★★এখানে যে টাকা নেয়া হচ্ছে,সেই টাকা থেকে সবাইকে যদিও দেয়া হবে,তথাপি কমবেশ করে দেয়া হবে।অর্থাৎ যদি ১০টাকার কুপন কেটে লটারী দেয়া হয়,তাহলে হয়তো একজনকে ১টা ল্যাপটপ দেয়া হবে।কিন্তু বাকী সবাইকে ১০টাকা মূল্যর জিনিষ দেয়া হবে না।বরং হয়তো কাউকে ৫টাকা এবং কাউকে ৭টাকা মূল্যর জিনিষ দেয়া হবে।
হ্যা যদি সবাইকে ঐ মূল্যই দেয়া হয়, যা তার কাছ থেকে নেয়া হয়েছিলো,তাহলে প্রশ্ন জাগবে,লটারী দাতার এক্ষেত্রে লাভ কি? যদি লটারী দাতা ঐ টাকাকে নিজের কাছে রেখে কোনো ফায়দা গ্রহণ করে,এবং গ্রাহকদেরকে লটারীর মাধ্যমে পুরুস্কার প্রদাণের প্রলোভন দেখায়,তাহলে এমতাবস্থায় ঋণের বিনিময়ে পুরুস্কারের ওয়াদা করা হচ্ছে,যা মূলত সুদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে হারাম হবে।
কানযুদ্দাক্বাইক্বের ব্যখ্যা গ্রন্থ তাবয়িনে হাক্বাইক্ব এ লিখিত হাশিয়া(টিকা) "হাশিয়ায়ে শিলবীেত"
বর্ণিত আছে.
(قَوْلُهُ: وَمَنْ وَضَعَ دِرْهَمًا عِنْدَ بَقَّالٍ إلَخْ
) قَالَ الْكَرْخِيُّ فِي مُخْتَصَرِهِ فِي كِتَابِ الصَّرْفِ وَكُلُّ قَرْضٍ جَرَّ مَنْفَعَةً لَا يَجُوزُ مِثْلَ أَنْ يُقْرِضَ دَرَاهِمَ غَلَّةٍ عَلَى أَنْ يُعْطِيَهُ صِحَاحًا أَوْ يُقْرِضَ قَرْضًا عَلَى أَنْ يَبِيعَ بِهِ بَيْعًا؛ لِأَنَّهُ رُوِيَ أَنَّ كُلَّ قَرْضٍ جَرَّ مَنْفَعَةً فَهُوَ رِبًا، وَتَأْوِيلُ هَذَا عِنْدَنَا أَنْ تَكُونَ الْمَنْفَعَةُ مُوجِبَةً بِعَقْدِ الْقَرْضِ مَشْرُوطَةً فِيهِ، وَإِنْ كَانَتْ غَيْرَ مَشْرُوطَةٍ فِيهِ فَاسْتَقْرَضَ غَلَّةً فَقَضَاهُ صِحَاحًا مِنْ غَيْرِ أَنْ يَشْتَرِطَ عَلَيْهِ جَازَ،
ইমাম কারকী রাহ.উনার "মুখতাছার" গ্রন্থের কিতাবুস সারফ বা সরফ অধ্যায়ে বর্ণনা করেনঃ
প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসে তা রিবা'র অন্তর্ভুক্ত হয়ে নাজায়েয।
যেমনঃ- এক ব্যক্তি কাউকে কিছু অপ্রচলিত টাকা ঋণ দিল ঐ শর্তে যে,সে তাকে কিছু প্রচলিত টাকা ঋণ দিবে।
অথবা কেউ কাউকে ঐ শর্তে ঋণ দিল যে,ঋণগ্রহিতা তার কাছে কিছু বিক্রি করবে।
(এ সমস্ত লেনদেন নাজায়েয হিসেবে বিবেচিত হবে)
কেননা নীতিসিদ্ধ মূলনীতি হল।
"প্রত্যেক ঐ ঋণ যা কোনো মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তা রি'বা হিসেবেই গণ্য হবে"।
আমাদের মাযহাব অনুসারে উক্ত মূলনীতির সুস্পষ্টও বিস্তারিত ব্যখ্যা হচ্ছে,
ঋন দেওয়ার সময়ে যদি অন্যকিছুর শর্ত থাকে তাহলে তা নাজায়েয।
কিন্তু যদি শর্ত না থাকে বরং এমনিতেই ঋণগ্রহিতা ঋণদাতাকে কোনো কিছু ঋণ দেয়,অথবা তার কাছে কোনো কিছু বিক্রি করে তাহলে তা বৈধ আছে।
★★সুতরাং কোনোক্রমেই লটারী উপরোক্ত পদ্ধতিতে লটারী জায়েয হবে না।