আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
222 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)
আগে ইউটিউবের প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিলো। তখন ওউনারের উপর নির্ভর করতো এ্যাড রান করাবে কি করাবে না যদি মনেটাইজেশন পেতো। কিন্তু বর্তমান নতুন আপডেটে অনিচ্ছা স্বত্বেও মনেটাইইজেশন ছাড়াও প্রত্যেক ইউজার অ্যাকাউন্টের চ্যানেলে এ্যাড চলে আসে। যার কারণে সবাই ভিডিও দেখতে গেলে এ্যাড চলে আসে। এক্ষেত্রে চ্যানেল ওউনার যদি মনেটাইজেশন করে টাকা ইনকাম করে সেক্ষেত্রে কি হালাল হবে নাকি হারাম হবে? যেহেতু ব্যাপারটা ইউটিউব কতৃপক্ষ নিজে এই ঝামেলা তৈরি করে দিয়েছে, এখানে ওউনার চাক বা না চাক মনেটাইজেশন থাক বা না থাক এ্যাড আসবেই। আর আমাদের সমাজ ব্যবস্হাই যেহেতু সোস্যাল মিডিয়া কেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছে। ইউটিউব, ফেসবুক ব্যবহার করা লাগেই দাওয়াতি কাজ পৌঁছানো অথবা শিক্ষণীয় কিছু শিখার ক্ষেত্রে।
ধন্যবাদ।

1 Answer

0 votes
by (63,280 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
মানব বা প্রাণীর ছবি ও পুতুল আর মূর্তি একই বিধান। এসবই হারাম।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা নগরীতে প্রবেশ করলেন তখন বাইতুল্লাহর আশে পাশে তিনশ ষাটটি মূর্তি বিদ্যমান ছিল। তিনি প্রত্যেক মূর্তির দিকে হাতের লাঠি দিয়ে আঘাত করছিলেন এবং বলছিলেন:

جاء الحق وزهق الباطل، إن الباطل كان زهوقا، جاء الحق وما يبدئ الباطل وما يعيد

সত্য এসেছে, মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। সত্য আগমন করেছে আর মিথ্যা না পারে কোনো কিছু সূচনা করতে, না পারে পুনরাবৃত্তি করতে। (সহীহ বুখারী হা. ২৪৭৮, ৪২৮৭, ৪৭২০; সহীহ মুসলিম হা. ১৭৮১)

আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইতুল্লাহ্য় প্রবেশ করে ইবরাহীম আ. ও মারইয়াম রা.-এর ছবি দেখলেন। তখন তিনি বললেন, এঁরা তো (যাদের চিত্র এই লোকেরা অঙ্কন করেছে) (আল্লাহর এই বিধান) শুনেছেন যে, ফেরেশতারা সে গৃহে প্রবেশ করেন না, যাতে কোনো চিত্র থাকে। (সহীহ বুখারী হা. ৩৩৫১;সহীহ ইবনে হিববান  হা. ৫৮৫৮)

হযরত আমর ইবনে আবাসা রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা আমাকে প্রেরণ করেছেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার, মূর্তিসমূহ ভেঙ্গে ফেলার এবং এক আল্লাহর ইবাদত করার ও তাঁর সঙ্গে অন্য কিছুকে শরীক না করার বিধান দিয়ে।’ (সহীহ মুসলিম হা. ৮৩২)

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إن الذين يصنعون هذه الصور يعذبون يوم القيامة يقال لهم : أحيوا ما خلفتم.

‘যারা এই সব প্রতিকৃতি প্রস্ত্তত করে তাদেরকে কিয়ামতের দিন আযাবে নিক্ষেপ করা হবে। তাদেরকে বলা হবে, যা তোমরা সৃষ্টি করেছিলে তাতে প্রাণ সঞ্চার কর।’ (সহীহ বুখারী হা. ৫৯৫১; সহীহ মুসলিম হা. ২১০৭)

আবু যুরআ রাহ বলেন-

دخلت مع أبي هريرة في دار مروان، فرأى فيها التصاوير، فقال : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : قال الله عز وجل : ومن أظلم ممن ذهب يخلق خلقا كخلقي فليخلقوا ذرة، وليخلقوا حبة، أو ليخلقوا شعيرة.

আমি আবু হুরায়রা রা.-এর সঙ্গে মারওয়ানের গৃহে প্রবেশ করলাম। সেখানে কিছু চিত্র তাঁর দৃষ্টিগোচর হল। তিনি তখন বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা বলেন-

ومن أظلم ممن ذهب يخلق خلقا كخلقي

ওই লোকের চেয়ে বড় জালেম আর কে যে আমার সৃষ্টির মতো কোনো কিছু সৃষ্টি করতে চায়। (তাদের যদি সামর্থ্য থাকে তবে) সৃষ্টি করুক একটি কণা, একটি শষ্য কিংবা একটি যব! (সহীহ মুসলিম হা. ২১১১; সহীহ বুখারী হা. ৫৯৫৩)

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর(রা.) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " إِنَّ الَّذِينَ يَصْنَعُونَ هَذِهِ الصُّوَرَ يُعَذَّبُونَ يَوْمَ القِيَامَةِ، يُقَالُ لَهُمْ: أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ "
রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন,যারা ফটো বানায়, কিয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দেয়া হবে এবং তাদের উদ্দেশ্যে বলা হবে,যা তোমরা বানিয়েছ তাতে জীবন দাও।[সহীহ বুখারী-৫৯৫১]

শরয়ী বিশেষ জরুরত ব্যতীত ছবি ভিডিও সম্পূর্ণই হারাম ও নাজায়েয৷

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১, ইউটিউব, ফেইসবুক দাওয়াতি কাজ ও জায়েজ কাজে ব্যবহার করা যাবে৷ এতে কোনো সমস্যা নেই৷ তবে নাজায়েজ ও হারাম কাজে ব্যবহার করা যাবে না৷

২, যেহেতু ইউটিউবের এ্যাডগুলো সাধারণত হারাম ও নাজায়েজ এ্যাড হয়ে থাকে৷ তাই চ্যানেল ওউনারের জন্য এই হারাম এ্যাডের উপর ভিত্তি রেখে মনেটাইজেশন করে টাকা ইনকাম করা জায়েজ হবে না৷ তবে যদি কখনো এমন ব্যবস্থা করা যায় যে, জায়েজ এ্যাড ছাড়া হারাম এ্যাড আসবে না, সেই ক্ষেত্রে মনেটাইজেশন করে টাকা ইনকাম করা জায়েজ হবে৷

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (4 points)
শায়েখ এখন আসল কথা হলো আমি মনেটাইজেশন করলেও এড আসবে না করলেও এড আসবে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...