আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,813 views
in সালাত(Prayer) by (49 points)
আসসালামু আলাইকুম শাইখ

দ্বিতীয় জামাত প্রসঙ্গে ৩ টি প্রশ্নঃঃ

১।মসজিদে গিয়ে যদি দেখি প্রথম জামাত শেষ তাহলে কয়েকজনকে ডেকে দ্বিতীয় জামাত করা যাবে কি না? এক্ষেত্রে একাকী নামাজ পড়া শ্রেয় নাকি মসজিদ বা অন্যত্র জামাত পড়া শ্রেয়?

২।অনেক সময় মসজিদে একাকী(জামাত না পেলে) নামাজ পড়লে এমন দেখা যায় যেন আমার পাশে বা পিছনে কেউ দাড়িয়ে ইক্তেদা করছে সেক্ষেত্রে বিধান কি?আমি কি তাদের তাদের ইমামতির নিয়ত করবো বা বিধান কি?আমি কি নামাজ আমার মত চালিয়ে যাবো?

৩।ছোটবেলায় স্কুল ছুটির পরে আমরা বন্ধুরা মিলে স্কুলের পার্শ্ববর্তী মসজিদে নিয়মিত জামাত করে নামাজ পড়তাম(আমাদের স্কুল ছুটি হতো জামাতের পরে)।সেখানে ছাত্রদের মধ্যেই কেউ ইমামতি করতো।অনেকেই হয়ত ইমামতির মাস-আলা জানতো না।তবে মুক্তাদীদের ইমাম হিসেবেই নামাজের নিয়ত করতো।এক্ষেত্রে সেই নামাজগুলো হয়েছে কি না?সেগুলো কি ক্বাযা করতে হবে কি না?

কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে জানাবেন।

জাযাকাল্লাহ খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১) মসজিদ সাধারণতঃ দুই ধরণের। যথা-
স্থানীয় মসজিদ।

চলাচলের রাস্তায়, যানবাহনের স্টপিজ ইত্যাদি স্থানের মসজিদ।
১ম প্রকার মসজিদের বিধান!

স্থানীয় মসজিদগুলোতে যদি তাতে নির্ধারিত ইমাম থাকে, তাহলে স্থানীয় লোকজনের জন্য নিয়মিত দ্বিতীয় তৃতীয় জামাত করে নামায পড়া মাকরূহ। এতে করে মসজিদে প্রথম জামাতের গুরুত্ব কমে যায়

কিন্তু কখনো কোন দৈব কারণে স্থানীয় কতিপয় নিয়মিত মুসল্লিদের প্রথম জামাত ছুটে যায়, তাহলে তারা প্রথম জামাত যেখানে আদায় হয়েছে, তার চেয়ে একটু সরে এসে দ্বিতীয় জামাত পড়তে পারে। কিন্তু এটাকে কিছুতেই নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করা যাবে না।
কিন্তু উক্ত মসজিদে যদি কোন মুসাফির দল আসেন, কিংবা অন্য এলাকার বেশ কিছু লোকজন আসেন, এসে দেখেন মসজিদের নিয়মিত জামাত হয়ে গেছে, তাহলে তাদের জন্য দ্বিতীয় জামাত করার অনুমতি রয়েছে।

২য় প্রকার মসজিদের হুকুম

এসব মসজিদে দ্বিতীয় জামাত করাতে কোন সমস্যা নেই।যদিও তাতে নির্ধারিত ইমাম থাকে। যেহেতু এখানে মুসাফির, কিংবা দ্রুত স্থানান্তর হতে হবে এমন যাত্রীগণ থাকেন, তা’ই এসব স্থানে দ্বিতীয় জামাত হওয়াতে কোন সমস্যা নেই।
তবে যদি নির্ধারিত ইমাম না থাকে, তাহলে সর্ব সূরতে দ্বিতীয় জামাত পড়াতে কোন সমস্যা নেই।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ   

وَيُكْرَهُ تَكْرَارُ الْجَمَاعَةِ بِأَذَانٍ وَإِقَامَةٍ فِي مَسْجِدِ مَحَلَّةٍ لَا فِي مَسْجِدِ طَرِيقٍ أَوْ مَسْجِدٍ لَا إمَامَ لَهُ وَلَا مُؤَذِّنَ (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب الامامة-2/288


أَنَّهُ – عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ – كَانَ خَرَجَ لِيُصْلِحَ بَيْنَ قَوْمٍ فَعَادَ إلَى الْمَسْجِدِ وَقَدْ صَلَّى أَهْلُ الْمَسْجِدِ فَرَجَعَ إلَى مَنْزِلِهِ فَجَمَعَ أَهْلَهُ وَصَلَّى» وَلَوْ جَازَ ذَلِكَ لَمَا اخْتَارَ الصَّلَاةَ فِي بَيْتِهِ عَلَى الْجَمَاعَةِ فِي الْمَسْجِدِ وَلِأَنَّ فِي الْإِطْلَاقِ هَكَذَا تَقْلِيلُ الْجَمَاعَةِ مَعْنًى، فَإِنَّهُمْ لَا يَجْتَمِعُونَ إذَا عَلِمُوا أَنَّهُمْ لَا تَفُوتُهُمْ.


وَأَمَّا مَسْجِدُ الشَّارِعِ فَالنَّاسُ فِيهِ سَوَاءٌ لَا اخْتِصَاصَ لَهُ بِفَرِيقٍ دُونَ فَرِيقٍ اهـ (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب الامامة-2/288
যার সারমর্ম হলো মহল্লার মসজিদে ২য় জামাত করা মাকরুহ।

সুতরাং আপনার জন্য উত্তম হলো  মসজিদে একাকি নামাজ পড়া।
মসজিদ বা অন্যত্রে জামাত করা মাকরুহ। 

আদ্দুররুল মুখতার (২/২৮৯) গ্রন্থে আছেঃঃ
ويكره تكرار الجماعة..... فى المسجد أو  غيره
  যার অর্থ হলো মসজিদ বা  অন্যত্রে ২য় জামাত মাকরুহ।  

(০২) 

মসজিদে জামাত হয়ে যাওয়ার পর একাকী নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে আপনার পাশে বা পিছনে কেউ যদি দাড়িয়ে ইক্তেদা করে, সেক্ষেত্রে আপনি তাদের ইমামতির নিয়ত করবেননা।
তবে আপনি যদি ইমামতির নিয়ত না করেন,তারপরেও পিছনের ব্যাক্তির নামাজ হয়ে যাবে।


শরহুল মুনিয়্যাহ তে আছেঃ
ولایحتاج الإمام في صحۃ الاقتداء بہٖ إلی نیۃ الإمامۃ حتی لو شرع علی نیۃ الانفراد فاقتدی بہٖ یجوز۔ (شرح المنیۃ ۲۵۱)
যার সারমর্ম  হলো  ইকতেদা ছহিহ হওয়ার জন্য ইমামতের নিয়ত জরুরী নয়। 

আল আশবাহ ওয়ান নাজায়ের গ্রন্থে আছেঃ  
وتصح الإمامۃ بدون نیتہا۔ (الإشباہ والنظائر جدید ۷۲)

ইমামত ছহিহ হয়ে যাবে ইমামতির নিয়ত ছাড়াই।


(০৩) ছোট বেলায় আপনারা স্কুলে যেই সমস্ত নামাজ জামাত আদায় করে পড়েছেন,সেখানে যাকে ইমাম বানিয়েছিলেন, সে যদি বালেগ হয়, তাহলে আপনাদের সমস্ত নামাজ হয়ে গিয়েছে।
কাজা করার দরকার নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 139 views
...