আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
88 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (26 points)
আসসালামু আলাইকুম।

১. গায়েবের অন্তর্ভুক্ত বিষয় গুলো কী কী?
২.মানুষের মনের ভিতরের চিন্তা কী ফেরেশতারা জানতে পারে?
৩. অন্তরে যদি কোনো বাজে ধারণা বা গুনাহের ইচ্ছা করা হয়, তবে সেটা কি "আমলনামা লেখক  " ফেরেশতারা তা জানতে পারে?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم

১.  غَيْب
[গাইব] শব্দের অর্থঃ অনুপস্থিতি.অদৃশ্য.লুক্কায়িত।
غَيْب ج غُيُوب
[গাইব] শব্দের অর্থঃ 
গুপ্ত রহস্য,গোপন তত্ত্ব,গায়েব,নিচু ভূমি।
সুতরাং গায়েব দ্বারা এখানে উদ্দেশ্য হলো অদৃশ্যের জ্ঞ্যান।  
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
إِنَّ اللَّهَ عِندَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْأَرْحَامِ وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ مَّاذَا تَكْسِبُ غَدًا وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ
নিশ্চয় আল্লাহর কাছেই কেয়ামতের জ্ঞান রয়েছে। তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং গর্ভাশয়ে যা থাকে, তিনি তা জানেন। কেউ জানে না আগামীকল্য সে কি উপার্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।(সূরা লুকমান-৩৪)

অত্র আয়াতে পঞ্চ ইন্দ্রীয় ব্যতীত নিশ্চিতরূপে গাইবের সংবাদ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে,তা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ জানে না।

গাইব শুধুমাত্র আল্লাহ-ই জানেন। আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ গাইবের সংবাদ জানে না।

এই আয়াতের ব্যখ্যায় তাফসীরে আহসানুল বয়ানে উল্লেখ রয়েছেঃ

মানুষ আগামী কাল কি করবে? তা দ্বীনী বিষয় হোক বা পার্থিব বিষয়, কেউ আগামী কালের বিষয়ে জ্ঞান রাখে না যে, আগামী কাল পর্যন্ত তার জীবন থাকবে কি না? আর যদি থাকে, তাহলে সে তাতে কি আমল করবে?

মৃত্যু কোথায় হবে? ঘরে না বাইরে, স্বদেশে না বিদেশে, যুবক অবস্থায় না বৃদ্ধাবস্থায়, নিজের আশা ও চাহিদা পূর্ণ হওয়ার পর নাকি তার পূর্বে? এ সব কেউ জানে না।
আরো জানুনঃ
https://ifatwa.info/6652/
২. জ্বী না আল্লাহ তায়ালা ছাড়া কেউই মানুষের মনের কথা জানে না। এমনকি ফেরেশতারা পর্যন্ত মানুষের মনের কল্পনা সম্পর্কে কিছুই জানে না।
৩.
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فِيمَا يَرْوِي عَنْ رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ قَالَ: قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ الحَسَنَاتِ وَالسَّيِّئَاتِ ثُمَّ بَيَّنَ ذَلِكَ، فَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً، فَإِنْ هُوَ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ عِنْدَهُ عَشْرَ حَسَنَاتٍ إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ إِلَى أَضْعَافٍ كَثِيرَةٍ، وَمَنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً، فَإِنْ هُوَ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ سَيِّئَةً وَاحِدَةً»

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ আল্লাহ তাআলার শানে বলতেছিলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা পূণ্য ও পাপ লিপিবদ্ধ করেন। তারপর এর ব্যাখ্যা করেন, সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি ভাল পূণ্যময় কাজের ইচ্ছে সংকল্প করে, কিন্তু কাজটি করতে না পারে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার জন্য একটি পূর্ণ নেকী লিপিবদ্ধ করেন।আর যদি সংকল্প করা কাজটি সম্পাদন করে ফেলে, তাহলে তাকে দশ থেকে সাতশত পরিমাণ বা এর চেয়ে বেশি নেকী বৃদ্ধি করে লিপিবদ্ধ করেন। আর যে ব্যক্তি কোন পাপ কাজের সংকল্প করে, কিন্তু পাপ কাজটি না করে, তাহলেও আল্লাহ তাআলা তার জন্য একটি পূর্ণ নেকী দান করেন। আর যদি সংকল্প করা কাজটি সম্পাদিত করে ফেলে, তাহলে তার জন্য একটি গোনাহ লিখা হয়। [বুখারী, হাদীস নং-৬৪৯১]

শুধুমাত্র খারাপ চিন্তা মাথায় আসার দ্বারাই কোন পাপ লিখা হয় না। বাকি এরকম চিন্তা আসার সাথে সাথেই ইস্তিগফার পড়া উচিত। সেই সাথে মন থেকে উক্ত খারাপ কাজটি দূর করে ফেলতে হবে। কুফরীর চিন্তা করার দ্বারাই কুফরী হয়ে যায় না। যদি না তা কার্যে তথা কথায় ও ঘোষণায় তা প্রতিফলিত না করা হয়।

তাই এসব চিন্তা আসার সাথে সাথেই ইস্তিগফার করে নিবে। আর মন থেকে এসব বাজে চিন্তা দূর করে ফেলতে হবে। সম্ভব হলে কোন আল্লাহওয়ালা সুন্নতের পাবন্দ বুযুর্গের সাথে সপ্তাহে বা মাসে হলেও একদিন দেখা করা, নিজের হালাত শুনানোর দ্বারাও অনেক সময় এসব বাজে চিন্তা থেকে নিজেকে আত্মরক্ষা করা যায়। আল্লাহ তাআলা আমাদের দ্বীন ও আমলকে হিফাযত করুন। আমীন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...