আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
494 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম
১.দ্বীনের বুঝ আসার আগে থেকেই একটি স্বপ্ন প্রায় দেখি। কয়েক বছর হয়ে যাচ্ছে, স্বপ্নটা এমন যে আমি কোনো ছাদে বা উচু বিল্ডিং এ উঠি কিন্তু কখনোই নামতে পারি না।অথচ আমাকে নামতে হবে, একটা উৎকন্ঠা কাজ করে।  এতোবার দেখেছি যে জায়গাগুলো এখন চোখের সামনে ভাসে।  কিন্তু বাস্তব এরকম কোনো জায়গায় যায় নি। স্বপ্ন শেষ হয় প্রচন্ড আতংক নিয়ে।
২. মাঝে মাঝে টয়লেট এর ভিতরে আটকা পড়ে আছি আর বের হতে পারছি না এমন স্বপ্ন দেখি,খুব নোংরা চারদিক। অস্বস্তি লাগে স্বপ্নের ভিতরেই।

৩. আমি মারা গেছি, আমাকে খাটিয়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। আমাকে এখন প্রশ্ন করা হবে অথচ আমি তো আরবি পড়তে জানি না!  কি ভাল কাজ কি খারাপ কাজ করেছি সব মনে হচ্ছিল এক এর পর এক। এই স্বপ্ন দেখার পর থেকে দ্বীন নিয়ে চিন্তার খোরাক শুরু হয়। তারপর থেকে নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।
৪. একবার এমন একটা স্বপ্ন দেখলাম মামা মামীকে নিয়ে। একটা পজিটিভ ইংগিত বুঝেছিলাম। এর কিছুদিন পর  জানতে পারি মামী অন্তঃসত্ত্বা।
৫. দ্বীনের বুঝ আসার আগে একজনের সাথে পরিচয় হয়, শুধু কথা হতো। কোনো হারাম সম্পর্ক ছিল না।একদিন তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি, ছেলেটা আমাকে পছন্দ করে বা এরকম কিছু বুঝানো হয় স্বপ্নে। কিন্তু আমাদের মধ্যে এমন কোনো কথা হতো না। বা এরকম কিছু কখনো কল্পনা করিও নি৷ বেশ কিছুদিনের মাথায় সে জানায় আমাকে সে বিয়ে করতে চায়, কিন্তু তার আগে নিজের পড়াশুনা শেষ করে পরিবারের সম্মতি নিয়েই আগাবে। এরপর দ্বীনের বুঝ আসায় ব্লক করে দেই এবং যোগাযোগ একদম অফ হয়ে যায়। আবার বলি কোনো সম্পর্ক কখনোই ছিল না, শুধু তার ভাল লাগার বিষয় টা সে খোলামেলা বলে এবং আমিও তাকে জানাই ইসলামে বিয়ে হালাল এবং বাকি সব হারাম। এর পরের বছর আমার বাসায় তার মাকে পাঠায়। আমি জানতাম ও না কারন পড়াশোনার জন্য ঢাকায় ছিলাম।  আমার পরিবার আমার স্টাডি শেষ না করে বিয়ে দিবে না এটা জানায় দেয়। গতবছর তার মা আবার আসেন,এবারো আমি বাসায় না থাকায় দেখতে পারেন নি। এরপর তার বাবা আমার বাবার সাথে কথা বলে এবং ছেলের খোজখবর নিতে বলে,তারপর দেখতে আসবে আমাকে। ছেলের খোজ নিতে যেয়ে আমার বাবা কিছু নেগেটিভ কথা শুনে ছেলেকে নিয়ে। কিন্তু এই কথাগুলো ছেলেকে জানানো হয় নি, কোনো যাচাই করা হয় নি। সেই সময় আমি ইস্তেখারা করেছিলাম, কোনো স্বপ্ন দেখি নি, কিন্তু বুঝতে পারছিলাম খারাপ কিছু হবে। সেটা হয়েছে। ছেলে সম্পর্কে কিছু তথ্য- ছেলে হজ্জ করে এসেছে,বাব মা হজ্জ করেছেন, দ্বীনের বুঝ কতটা গভীর জানি না তবে তারা পর্দানশীল মেয়ে চায়। আমার মা ছেলের নেগেটিভ কথা শুনার পর আর আগাতে চান নি, তাই আমি না করে দিয়েছি৷ কিন্তু এরপর ইস্তেখারা ব্যতীত স্বপ্ন দেখেছি যে ছেলে টা আমাকে সবর করতে বলছে এবং আমার মা বলছেন তাদেরকে আসতে বলো।
এক বছর হয়ে গেছে এই ঘটনার।  কিছুদিন আগে স্বপ্ন দেখেছিলাম তার সাথেই আমার বিয়ে হচ্ছে কিন্তু তার মা বা অন্য কোনো মহিলা আমাদের বাসায় কেমন যেন মিষ্টি নিয়ে এসছেন।
আবার ইস্তেখারা করি,কোনো স্বপ্ন দেখি নি। কিন্তু মন শান্ত হয়ে যায়। কিন্তু এই শান্ত কিসের উপর তা জানি না।
কিন্তু আমি এখনো অন্য বিয়ের প্রস্তাবে হ্যা বলতে পারছি না। আমি জানি আল্লাহ যা করেছেন তা আবশ্যই আমার কল্যান এর জন্য। আমি কি আবেগে চলছি বা আমার করনীয় কি!

এই স্বপ্ন গুলো কি নিতান্তই আমার চিন্তা থেকে আসে?  আর আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমার হাজবেন্ড এর পরিপূর্ণ হক্ব আদায় করতে চাই সেক্ষেত্রে আমার করনীয় কি এই পরিস্থিতিতে।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছে 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন, যেখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এ জন্য আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর ক্ষতি থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না। ( বুুুখারী ৬৯৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫১৪)
,
উপরোক্ত হাদীসের আলোকে দুঃস্বপ্ন দেখলে আমাদের যা যা করতে হবেঃ
১) দুঃস্বপ্নের ক্ষতি ও অনিষ্ট থেকে আল্লাহ তাআলার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। এভাবে সকল প্রকার ক্ষতি থেকে আল্লাহ তাআলার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিত।
২) শয়তানের অনিষ্ট ও কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। এবং এর জন্য আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজীম পড়তে হবে। কারণ, খারাপ স্বপ্ন শয়তানের কুপ্রভাবে হয়ে থাকে।
৩) ঘুম ভাঙার পর বাঁ দিকে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করতে হবে। এটা করতে হবে শয়তানের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ ও তার চক্রান্তকে অপমান করার জন্য।
৪) যে দিক ফিরে দুঃস্বপ্ন দেখেছে তা পরিবর্তন করে অন্য দিক ফিরে ঘুমাতে হবে। অবস্থাকে বদলে দেয়ার ইঙ্গিত স্বরূপ এটা করতে বলা হয়েছে।
৫) খারাপ স্বপ্ন দেখলে কারো কাছে বলা যাবে না। আর নিজেও এর ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

আরো জানুনঃ 

★স্বপ্নে পায়খানা দেখা হারাম সম্পদ ভক্ষনের ঈঙ্গিত বহন করে।
কেহ কেহ বলেছেনঃ
স্বপ্নে পায়খানা করতে দেখিলে(নিজের) সৌভাগ্যের নিদর্শন। 

★স্বপ্নে মারা যাওয়া দেখা ঈমান কমতির আলামত।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
আপনি এহেন দুঃস্বপ্ন দেখলে উপরোক্ত আমল গুলো করবেন। 
পবিত্র বিছানায় অযু করে প্রতি রাতে ঘুমাবেন।
ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি পড়বেন, তিন কুল তিন তিন বার করে পড়ে পুরো শরীর ফুক দিবেন।
আপনার আমল বাড়িয়ে দিতে হবে,দ্বীনদার লোকদের সাথে উঠাবসা করতে হবে,পবিত্র হালতে থাকতে হবে,অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে। 
বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত, যিকির আযকার,ফরজ সহ নফল নামাজ পড়তে হবে। 
দান ছদকাহ করতে হবে।
,
স্বপ্নের কথা কাউকে বলা যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...