বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
যে শিরক বান্দাকে
মুসলিম মিল্লাতের গন্ডী থেকে বের করে দেয় না তাকে শিরকে আসগার বলে। তবে
একত্ববাদের আক্বীদায় ত্রুটি ও কমতির সৃষ্টি করে। এটি শিরকে আকবারে লিপ্ত হওয়ার
অসীলা ও কারণ। এ ধরনের শিরক দু'প্রকার:
প্রথম প্রকারের
উদাহরণ:
আল্লাহর ব্যতীত অন্য
কিছুর কসম ও শপথ করা। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
مَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللهِ فَقَدْ كَفَرَ أوْ أشْرَكَ.
'যে ব্যক্তি গায়রুল্লার কসম করল, সে কুফুরী কিংবা
শিরক করল। (আল বাদরুল মুনীর, ৯/৪৫৮)
অনুরূপভাবে এমন
কথা বলা যে, ''আল্লাহ এবং তুমি যেমন চেয়েছ''ماشاء الله وشئت
কোন এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লামকে ''আল্লাহ এবং আপনি যেমন চেয়েছেন'' কথাটি বললে তিনি
বললেন, ''তুমি কি আমাকে আল্লাহর সাথে সমকক্ষ স্থির করলে? বরং বল, আল্লাহ এককভাবে
যা চেয়েছেন।''
আল্লাহ তাআলা
বলেন:
وَمَا تَشَاءُونَ إِلَّا أَنْ يَشَاءَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ .
'তোমরা বিশ্বজগতের প্রভু আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কোন কিছুরই
ইচ্ছা করতে পারনা। ( সূরা তাকবীর, আয়াত ২৯ )
দ্বিতীয় প্রকারের উদাহরণ:
এ প্রকার শিরকের স্থান হলো ইচ্ছা, সংকল্প ও নিয়্যাতের মধ্যে। যেমন লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ও প্রসিদ্ধি অর্জনের জন্য কোন আমল করা। অর্থাৎ আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায় এমন কোন কাজ করে তা দ্বারা মানুষের প্রশংসা লাভের ইচ্ছা করা। যেমন সুন্দর ভাবে নামায আদায় করা, কিংবা সদকা করা এ উদ্দেশ্যে যে, মানুষ তার প্রশংসা করবে, অথবা সশব্দে যিকির- আযকার পড়া ও সুকণ্ঠে তেলাওয়াত করা যাতে তা শুনে লোকজন তার গুণগান করে। যদি কোন আমলে রিয়া তথা লোক দেখানোর উদ্দেশ্য সংমিশ্রিত থাকে, তাহলে আল্লাহ তা বাতিল করে দেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ. الَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ. الَّذِينَ هُمْ
يُرَاءُونَ.
‘অতএব দুর্ভোগ সেসব মুসল্লির, যারা তাদের নামাজের ব্যাপারে উদাসীন। যারা তা লোক দেখানোর জন্য করে। ’ (সুরা : মাউন, আয়াত : ৪-৬)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
أخوف ما أخاف عليكم الشرك الأصغر، قالوا يارسول الله وما الشرك الأصغر
قال: الرياء
'তোমাদের উপর আমি যে জিনিসের ভয় সবচেয়ে বিশী করছি তা হল শিরকে আসগার। সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ! শিরকে আসগার কি? তিনি বললেন: রিয়া (লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে আমল করা) (বুলুগুল মুরাম ৪৪০)
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. আমরা সবাই
কম-বেশী শিরকে আসগারে লিপ্ত রয়েছি। আর শিরকে আসগার মুসলিম মিল্লাতের গন্ডী থেকে বের
করে দেয় না । শিরকে আসগারে লিপ্ত হলে সে কাফের হয়ে যায় না। ফলে শিরকে আসগরে লিপ্ত ব্যক্তির জানমাল অন্য
মুসলমানদের জন্য হালাল না।
২. অজু ওয়াজিব হওয়া মানে এমন নয় যে, যখন অজু নষ্ট হবে তখনই আবার অজু করা
ওয়াজিব। বরং অজু ওয়াজিব হওয়ার মানে হলো যেসব কাজ করা অজু ছাড়া করা জায়েজ নেই যেমন, নামাজ পড়া, কুরআন স্পর্শ করা ইত্যাদি সেসব কাজ করতে অজু লাগবে।