জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
প্রশ্নে উল্লেখিত বইয়ের লিখিত বাক্য যদি এই পদ্ধতিতে বলা হয় যে এর দ্বারা রাসুল সাঃ বা আলী রাঃ কে হাযির নাযির মনে করা হচ্ছে,তাহলে শিরিক হবে।
,
এমনিতেই ইয়া নবী বলার কারনে বা ইয়া নবী বলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে সম্বোধন করে কিছু বললে শিরক হবেনা।
তবে আমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ সাঃ কে ইয়া নাবী বলে ডাকা,দরুদে বলে জায়েজ নেই।
কেননা এটি রাসুলুল্লাহ সাঃ এর শানের খেলাফ।
আর এজাতীয় বাক্য রাসূল সাঃ কে হাজির-নাজির বুঝায় অথবা বুঝাতে সাহায্য করে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই /বোন,
রাসূল সাঃ এর উপর দূরুদ পাঠ করা অনেক ফযিলতের বিষয়।
দূরূদ কিভাবে এবং কোন শব্দ দ্বারা প্রেরণ করতে হবে সেটা নিম্নোক্ত হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।
ﻋﻦ ﻋَﺒْﺪ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَﻦِ ﺑْﻦ ﺃَﺑِﻲ ﻟَﻴْﻠَﻰ، ﻗَﺎﻝَ : " ﻟَﻘِﻴَﻨِﻲ ﻛَﻌْﺐُ ﺑْﻦُ ﻋُﺠْﺮَﺓَ ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺃَﻻَ ﺃُﻫْﺪِﻱ ﻟَﻚَ ﻫَﺪِﻳَّﺔً ﺳَﻤِﻌْﺘُﻬَﺎ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ؟ ، ﻓَﻘُﻠْﺖُ : ﺑَﻠَﻰ ، ﻓَﺄَﻫْﺪِﻫَﺎ ﻟِﻲ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : ﺳَﺄَﻟْﻨَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﻘُﻠْﻨَﺎ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ، ﻛَﻴْﻒَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺃَﻫْﻞَ ﺍﻟﺒَﻴْﺖِ ، ﻓَﺈِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺪْ ﻋَﻠَّﻤَﻨَﺎ ﻛَﻴْﻒَ ﻧُﺴَﻠِّﻢُ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ؟ ﻗَﺎﻝَ : ( ﻗُﻮﻟُﻮﺍ : ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺻَﻞِّ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺁﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ، ﻛَﻤَﺎ ﺻَﻠَّﻴْﺖَ ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺁﻝِ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ، ﺇِﻧَّﻚَ ﺣَﻤِﻴﺪٌ ﻣَﺠِﻴﺪٌ، ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺑَﺎﺭِﻙْ ﻋَﻠَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺁﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ، ﻛَﻤَﺎ ﺑَﺎﺭَﻛْﺖَ ﻋَﻠَﻰ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ ، ﻭَﻋَﻠَﻰ ﺁﻝِ ﺇِﺑْﺮَﺍﻫِﻴﻢَ ﺇِﻧَّﻚَ ﺣَﻤِﻴﺪٌ ﻣَﺠِﻴﺪٌ ) (ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻯ، ﺭﻗﻢ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ 6265- )
আবদুর রহমান ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কা‘ব ইবনু ‘উজরাহ্ (রাঃ)-এর সাথে আমার দেখা হলে তিনি বললেন, হে ‘আবদুর রহমান! আমি কি তোমাকে একটি কথা উপহার দিব যা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে শুনেছি? উত্তরে আমি বললাম, হাঁ আমাকে তা উপহার দিন। তিনি বললেন, আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনার প্রতি আমরা ‘সালাম’ কিভাবে পাঠ করবো তা আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে শিক্ষা দিয়েছেন। আমরা আপানার ও আপনার পরিবারে প্রতি ‘সলাত’ কিভাবে পাঠ করবো? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা বলো,
‘‘আল্লা-হুম্মা সল্লি ‘আলা- মুহাম্মাদিও ওয়া ‘আলা- আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- সল্লায়তা ‘আলা- ইবরা-হীমা ওয়া ‘আল- আ-লি ইবরা-হীমা ইননাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক ‘আলা- মুহাম্মাদিওঁ ওয়া ‘আলা- আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- বা-রাকতা ‘আলা- ইবরা-হীমা ওয়া ‘আলা- আ-লি ইবরা-হীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ’’-
(অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মাদ ও মুহাম্মাদের পরিবার-পরিজনের প্রতি রহমাত বর্ষণ কর, যেভাবে তুমি রহমাত বর্ষণ করেছো ইবরাহীম ও ইবরাহীমের পরিবার-পরিজনের প্রতি। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! তুমি বারাকাত নাযিল কর মুহাম্মাদ ও মুহাম্মাদের পরিবার-পরিজনের প্রতি, যেভাবে তুমি বারাকাত নাযিল করেছো ইব্রাহীম ও ইব্রাহীমের পরিবার-পরিজনের প্রতি। তুমি বড় প্রশংসিত ও সম্মানিত।)।
(বুখারী ৩৩৭০, মুসলিম ৪০৬,মিশকাতুল মাসাবিহ ৯১৯)
★উক্ত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাঃ দূরূদে ইবরাহিমির শিক্ষা সাহাবাদিগকে দিচ্ছেন।
তাই আমাদের উচিৎ সতর্কতামূলক দূরূদে ইবরাহিমি পাঠ করা।
'ইয়া নবী সালামু আলাইকা' বা 'ইয়া রাসূল সালামু আলাইকা' পরিত্যাগ করাই শ্রেয়।
কেননা এজাতীয় বাক্য রাসূল সাঃ কে হাজির-নাজির বুঝায় অথবা বুঝাতে সাহায্য করে।
তবে এ'তেক্বাদ সহীহ রেখে বলতে কোনো অসুবিধে নেই।কিন্ত সাধারণ লোকজন এ কথার সহজ অর্থ অনুধাবন করে রাসূল সাঃ কে উপস্থিত বা উপস্থিতের মত মনে করবে।তাই এ জাতীয় বাক্য পরিত্যাগ করে হাদীসের শিক্ষাকৃত বাক্য উচ্চারণ করাই শ্রেয়।
ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-৩/১০৩