বিবাহে অভিভাবকত্ব সম্পর্কে

Question

১. আসসালামু আলাইকুম। বিবাহে অভিভাবক হওয়ার জন্য যে শর্তগুলো দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে একটি শর্ত হচ্ছে অভিভাবককে মুসলিম হতে হবে। বিবাহের সাক্ষীদাতাদের ক্ষেত্রেও একই হুকুম।আমার প্রশ্ন হচ্ছে যদি বিবাহের অভিভাবক অথবা সাক্ষীদাতাদের মধ্যে কেউ এমন কোনো  বিশ্বাস জেনেশুনে পোষণ করে যার জন্য সে কাফির হয়ে যায়, এক্ষেত্রে কি বিবাহ সহিহ হবে? যেহেতু অভিভাবক অথবা সাক্ষীদাতা মুসলিম নয়।কিন্তু বাহ্যিকভাবে তাদের মুসলিম হিসেবেই জানি।

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল  আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দু’জন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। সুতরাং বিয়ের মজলিসে সাক্ষীর উপস্থিত ছাড়া বিয়ে সহীহ হবে না।

 

হাদিস শরিফে এসেছে,

 

عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ لا نِكَاحَ إِلا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ ، فَهُوَ بَاطِلٌ

 

আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্  ﷺ বলেছেন, অভিবাক ও দু’জন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত হবে তা বাতিল। (সহিহ ইবন হিব্বান ৪০৭৫)

 

ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

 

অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}

 

★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. বিবাহে যেহেতু স্বাক্ষীদ্বয় মুসলিম হওয়া শর্ত। তাই স্বাক্ষীদাতাদের মধ্যে যদি কেউ এমন কোনো  বিশ্বাস জেনেশুনে পোষণ করে যার জন্য সে কাফির হয়ে যায় তাহলে বিবাহ সহীহ হবে না।

 

২. বালেগ ছেলে-মেয়ে বিয়ে সহীহ হওয়ার জন্য অভিভাবক থাকা শর্ত নয়। সুতরাং যদি আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দু’জন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রি তা কবুল করে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনে তাহলেই বিয়ে সহীহ হয়ে যাবে। যদিও এই ক্ষেত্রে অভিভাবক এমন কোনো  বিশ্বাস জেনেশুনে পোষণ করে যার জন্য সে কাফির হয়ে যায়। এই ক্ষেত্রে অভিভাবক মুসলিম না কাফের তার কোনো ধর্তব্য নেই।

উল্লেখ্য যে, নাবালেগ ছেলে-মেয়ে বিয়ে সহীহ হওয়ার জন্য অভিভাবক থাকা শর্ত । সুতরাং এই ক্ষেত্রে অভিভাবক যদি এমন কোনো  বিশ্বাস জেনেশুনে পোষণ করে যার জন্য সে কাফির হয়ে যায়। তাহলে বিয়ে সহীহ হবে না।