আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
701 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ্।

ক) আমার বিয়ের বয়স ২.৫ বছর। আমার পড়ালেখা কম্প্লিট না হওয়ায় এবং তাঁদেরও ব্যক্তিগত কারণে একসাথে সংসার করা হয়নি। আসা যাওয়া ছিল এবং বেশ ভালো রকম মানসিক অসামঞ্জস্যতা বা বোঝাপড়ার ঘাটতিজনিত অশান্তি লেগেই থাকতো। কাছে না থাকার কারণে যে এমনটা হত, ব্যাপারটা ঠিক তেমনও নয়। বরং কাছাকাছি থাকলে দেখা যেত আরো বড় রকমের অশান্তির সৃষ্টি হতো।

খ) অল্পকিছুদিন পূর্বে, এই বছরের মাঝামাঝি, এটা অনেক বড় আকার ধারণ করায় উভয়েই পৃথক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। বিয়ের একদম শুরুর দিকেই, ১ মাসের মাথায় এবং ১.৫ বছরের সময় তিনি তালাক দিয়ে দিবেন বলেন। এই বছরের শুরুতে এবং এই শেষবার (বছরের মাঝামাঝি) আমিই এই ইচ্ছা প্রকাশ করি এবং উনি সায় দেন। এ প্রসংগে কথা বলার সময়েই এক পর্যায়ে তিনি একাধিকবার  "তুমি কাগজ পাঠিয়ে দাও", " নিজের ভবিষ্যতের ব্যবস্থা কর", "তুমি স্বামী খোঁজ", " আবার বিয়ের ব্যবস্থা নাও", প্রভৃতি কথা মোবাইলে আমাকে বলেন। উনি কি তালাকের উদ্দেশ্য নিয়েই এই কথাগুলো বলেছেন সেটা উনাকে জিজ্ঞেস করা সম্ভব নয়।
পুনরায় উল্লেখ্য, সেই মূহুর্তে বা তার কিছুদিন পূর্বথেকে আমাদের মধ্যে তালাক সংক্রান্ত কথাই হচ্ছিল।

এখন আমার প্রশ্ন এই পরিস্থিতে কি কেনায়া-মতে আমাদের তালাক সম্পাদন হয়ে গিয়েছিল? এটা কি এক তালাকে বায়েন?
by
reshown by
মুহতারাম, আপনার বিস্তারিত উত্তরের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। একটা বিষয় সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার হয়নি। 


আমার স্বামী কি তালাকের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্নে উল্লেখিত কথাগুলো বলেছিলেন সেটা উনাকে জিজ্ঞেস করা সম্ভব নয়, এই মুহূর্তে যোগাযোগ বন্ধ আছে। 
পুনরায় উল্লেখ্য, উনি আমাকে কথাগুলো বলার মূহুর্তে বা তার কিছুদিন পূর্বথেকে আমাদের মধ্যে তালাক সংক্রান্ত কথাই হচ্ছিল। 

এ পরিস্থিতিতে এক তালাকে বায়েন সম্পাদিত হয়েছে কিনা দয়া করে জানাবেন।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


তালাক শব্দ। এটি খুবই জঘন্য একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

*****প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/ বোন!    

★তোমাকে আমি ছেড়ে  দিলাম।
★যা খুশি তাই করো।
★তুমি মুক্ত।
★তুমি স্বাধীন।

এগুলো সবই কেনায়া শব্দ,ইঙ্গিতসূচক শব্দ। 
কেনায়া তালাক বলা হয় স্পষ্ট তালাক শব্দ না বলে বরং তালাকের ইঙ্গিতসূচক শব্দ বলে তালাক দেওয়া। 

★★শরিয়তের পরিভাষায় প্রশ্নে উল্লেখিত জাতীয় শব্দে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

হেদায়া গ্রন্থে আছেঃ 

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.

احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ  
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে যে তোমাকে আমি ছেড়ে  দিলাম, যা খুশি তাই করো,তুমি মুক্ত, তুমি স্বাধীন, তুমি স্বামী খুজো,বা স্বামী তালাশ করো,তাহলে এটিও কেনায়া তালাক।
কেনায়া তালাক হলো ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা যেটা হয়।
কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয়

আরো জানুনঃ 
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এহেন বাক্য বলার সময় যদি তালাকের নিয়ত থাকে,তাহলে এতে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে।আর যদি তালাকের নিয়ত না থাকে তাহলে তালাক পতিত হবে না। 

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
মুহতারাম, আপনার বিস্তারিত উত্তরের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। একটা বিষয় সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার হয়নি। 


"আমার স্বামী কি তালাকের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্নে উল্লেখিত কথাগুলো বলেছিলেন সেটা উনাকে জিজ্ঞেস করা সম্ভব নয়, এই মুহূর্তে যোগাযোগ বন্ধ আছে। 
পুনরায় উল্লেখ্য, উনি আমাকে কথাগুলো বলার মূহুর্তে বা তার কিছুদিন পূর্বথেকে আমাদের মধ্যে তালাক সংক্রান্ত কথাই হচ্ছিল। 

এ পরিস্থিতিতে এক তালাকে বায়েন সম্পাদিত হয়েছে কিনা দয়া করে জানাবেন।"

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...