আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
752 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (10 points)
(أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ أُوتُوا نَصِيباً مِنَ الْكِتَابِ يُؤْمِنُونَ بِالْجِبْتِ وَالطَّاغُوتِ وَيَقُولُونَ لِلَّذِينَ كَفَرُوا هَؤُلاءِ أَهْدَى مِنَ الَّذِينَ آمَنُوا سَبِيلاً) [النساء: 51]

(يُؤْمِنُونَ بِالْجِبْتِ وَالطَّاغُوتِ)

আসলে বাহ্যিকতার উপর ভিত্তি করেই তারা ঈমান নামকরণ করেছিল। সুতরাং বুঝা গেল কাফিররা যে রীতির উপর বহাল আছে তার অনুকূলে কথা বলাও কুফরী; যদিও আন্তরিকভাবে তা বিশ্বাস করা না হয়।

বর্তমানে কেউ বলে, (মুরজিয়া সম্প্রদায়), অন্তরে বিশ্বাস না করা পর্যন্ত কুফরী কথা বললে, জবরদস্তি ছাড়াই কুফরী কথা উচ্চারণ করলে, কুফরী কাজ করলে, আল্লাহ ও তার রসূলকে গালি দিলে এবং যে কোন প্রকার কুফরী করলেই মুরজিয়াদের নিকট তাকে কাফির বলা যাবে না যতক্ষণ না জানা যায় তার অন্তরে কি আছে। এটাই মুরজিয়া সম্প্রদায়ের বাড়াবাড়ি মূলক কথা। আমরা এ থেকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও নিরাপত্তা কামনা করছি।
১.উপরের আলোচনা কি সঠিক ?এটি কি মুরজিয়া সম্প্রদায়ের আকীদা ?

২. তাগুতের আনুগত্য না করা বলতে কি বুঝায় ?
যেমন কোন আইন করল প্রতিদিন ১০০ টাকা দিতে হবে উন্নয়নের জন্য । এ আইন  মানলে কি তাগুতের আনুগত্য করা হবে ? না মানলে কি গুনাহ হবে ? আর মানলে কি তাগুতের আনুগত্য করা হয়?

1 Answer

0 votes
by (574,470 points)
edited by
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


(০১)
মুরজিয়ারা বলে, ঈমানের সাথে আমলের কোনো সম্পর্ক নেই। ঈমান থেকে আমল বা কর্ম সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ও পৃথক। ঈমানের জন্য শুধু অন্তরের ভক্তি বা বিশ্বাসই যথেষ্ট। ইসলামের কোনো বিধিবিধান পালন না করেও একব্যক্তি ঈমানের পূর্ণতার শিখরে আরোহণ করতে পারে। আর এরূপ ঈমানদার ব্যক্তির কবীরা গোনাহ তার কোনো ক্ষতি করে না। যত গোনাহই করুক না কেন সে জান্নাতী। 
পাপ দ্বারা ঈমানের কোনো ক্ষতি হয়না।
নাজাতের জন্য ঈমানই যথেষ্ট, ইবাদতের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।
(আকিদাতুত তহাবী এর ভূমিকা,ইসলামী আকীদা ও ভ্রান্ত মতিবাদ ২৮২)

তাদের ব্যাপারে হাদীস পাওয়া যায়ঃ

صنفان من أمتي لا تنالهما شفاعتي، القدرية والمرجئة. قلت يا رسول الله: ما المرجئة؟ قال: قوم يزعمون أن الإيمان قول بلا عمل. قلت: ما القدرية؟ قال: الذين يقولون المشيئة إلينا

আমার উম্মাতের দুই ধরনের মানুষকে আমার শাফায়াত সম্পৃক্ত করবে না। তারা হলো কাদরিয়াহ এবং মুরজিয়াহ সম্প্রদায়। আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল মুরযিয়াহ কারা? তিনি বললেনঃ তারা এমন এক জাতি যারা মনে করে যে, আমলহীন কথাকে ঈমান বলা হয়। আমি বললামঃ কাদরিয়াহ কারা? তিনি বললেনঃ যারা বলে যে, আমাদের ইচ্ছাই হচ্ছে সব কিছু।

এটি আল-খাতীব "আল-মুতাশাবিহ ফির রাসমি" (১/১৪৪) গ্রন্থে আল-হাসান ইবনু সাঈদ সূত্রে আব্দান আল-আসকারী হতে তিনি আল-হাসান ইবনু আলী ইবনে আল-মুসেলী হতে ... বর্ণনা করেছেন।
(হাদীসটি সম্পর্কে অনেকেই অনেক মন্তব্য করেছেন।)

★মুরিজিয়াদের ব্যপারে প্রশ্নে উল্লেখিত মত খুজে পাইনি।
,
(০২)
আবূ হারূন আল-আবদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هَارُونَ الْعَبْدِيِّ، قَالَ كُنَّا إِذَا أَتَيْنَا أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ مَرْحَبًا بِوَصِيَّةِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ لَنَا " إِنَّ النَّاسَ لَكُمْ تَبَعٌ وَإِنَّهُمْ سَيَأْتُونَكُمْ مِنْ أَقْطَارِ الأَرْضِ يَتَفَقَّهُونَ فِي الدِّينِ فَإِذَا جَاءُوكُمْ فَاسْتَوْصُوا بِهِمْ خَيْرًا "

 তিনি বলেন, আমরা আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) -এর কাছে এলেই তিনি বলতেনঃ তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওসিয়ত অনুযায়ী স্বাগতম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলতেনঃ লোকেরা অবশ্যই তোমাদের অনুগামী। অচিরেই পৃথিবীর দিকদিগন্ত থেকে লোকেরা তোমাদের নিকট দ্বীনি ইলম অর্জনের জন্য আসবে। তারা যখন তোমাদের নিকট আসবে,তখন তোমরা তাদেরকে ভালো ও উত্তম উপদেশ দিবে।(সুনানু তিরমিযি-২৪৯,তিরমিযী ২৬৫০-৫১, মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৪৭।)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
অতীব জরুরী ও সাধারণ মাস'আলা মাসাঈল আয়ত্বে না থাকার কারণে দৈনন্দিন জীবনে দ্বীন-ইসলাম পালন করতে, যে সমস্ত দ্বীনি ভাই-বোন থমকে দাড়ান,এবং যাদের দ্বীনি ইলম অর্জনের কাছাকাছি কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নেই, মূলত তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস .....

মুহতারাম/মুহতারামাহ!
দ্বীনের পরিধি অনেক ব্যাপক, সকল বিষয়ে আলোচনা করা বা দিকনির্দেশনা দেওয়া স্বল্প পরিসরের এই ভার্চুয়ালি মাধ্যম দ্বারা আমাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। চেষ্টা করলেও প্রশ্নকারীর পিপাসা মিটানো সম্ভব হবে না। প্রত্যেক বিষয়ে আমরা শুধুমাত্র সামান্য আলোকপাত করে থাকি।

উপরোক্ত প্রশ্নটির ব্যাপারে উলামায় কেরামের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। মতবিরোধপূর্ন প্রশ্নগুলো উত্তর দেওয়ার জন্য স্থান, কাল, পাত্র অনেক কিছুই জানার প্রয়োজন হয়। যেটা অনলাইনে জানা সম্ভব হয় না। 
তাই এই প্রশ্নগুলোর উত্তরের জন্য আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট উলামায় কেরামের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা আপনার জন্য কল্যাণকর হবে বলেই আমাদের ধারণা।

তাছাড়া ইলম অর্জনের জন্য সফর করা অত্যান্ত  জরুরী। এবং কষ্ট করে ইলম অর্জন করাই আমাদের  আকাবির আসলাফদের রীতি ও নীতি। এদিকেই কুরআনের এই আয়াত ইঙ্গিত দিচ্ছে,
 ۚفَلَوْلَا نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَائِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ
তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্ব-জাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে।(সূরা তাওবাহ-১২২)

সুতরাং আপনাকে বলবো, আপনি বিস্তারিত জানতে স্ব-শরীরে কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করবেন।
প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।আল্লাহ তা'আলা আপনার ইলম অর্জনের স্পৃহাকে আরোও বাড়িয়ে দিক, আমীন!!

প্রত্যেকটা বিষয়ের সাথে নিম্নের হাদীসকে লক্ষ্য রাখবেন।
হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।
ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ 
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো।(সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...