আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+2 votes
267 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
আমরা একটা মেসে খাওয়া দাওয়া করি। সদস্য সংখ্যা ১৩-১৪ জন। রান্না করার জন্য বুয়া আছেন। মেসে কয়েকজন হিন্দু সদস্যও আছেন। বুয়া ডায়নিং টেবিলে সবার মাছ মাংসের বাটি আলাদা আলাদা করে রাখেন। ভাত এবং ডাল একখানেই থাকে, যার যেটুকু লাগে নিয়ে খায়। এখন অনেক সময় দেখা যায় কোন একজন সদস্য কোন বেলার মিল খায় নি। এক্ষেত্রে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়, আবার অনেক সময় অন্য কেউ খেয়ে ফেলে। আবার বিকাল পাঁচটায় রাতের রান্না শুরু হয়, সেক্ষেত্রে বুয়ার প্লেটের দরকার হয়।
তো এই সমস্যা সমাধানের জন্য মেস মিটিঙয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, বিকাল পাঁচটার পর দুপুরের খাবার এবং রাত এগারোটার পর কারও রাতের খাবার অবশিষ্ট থাকলে অন্য যে কেউ খেয়ে ফেলতে পারবে। এটা এজন্য করা হয়েছে যেন উল্লিখিত সময়ের আগে যেন একজনের খাবার আরেকজন খেয়ে ফেলতে না পারে এবং ওই সময়ের পরে খাবার যেন বাকি না থাকে, প্লেট ফাকা হয় , নষ্টও যেন না হয়। উল্লেখ্য, উক্ত সিদ্ধান্তে মেসের সকল সদস্যের সম্মতি রয়েছে।
এখন প্রশ্ন হল
১। উল্লিখিত সময়ের পরে একজনের খাবার খাবারের মালিককে না জানিয়ে খেয়ে ফেলা জায়েজ হবে কি? খাবারের মালিকের থেকে কি আলাদাভাবে অনুমতি নিতে হবে?
২। কেউ যদি উল্লিখিত সময়ের পরে খাবার পড়ে থাকতে দেখে এবং সে মালিককে না জানায়, নিজেও না খায় এক্ষেত্রে খাবার নষ্ট হলে কে দায়ী হবে?
৩। রাতের খাবারের জন্য প্লেট দরকার হলে বুয়া কি উক্ত দুপুরের খাবার খেয়ে ফেলতে পারবে অথবা ফেলে দিতে পারবে?
৪। খাবারের মালিক যদি মেসে উপস্থিত না থাকে এবং জানা থাকে যে সে আসতে পারবে না, সেক্ষেত্রে তাকে না জানিয়ে খাবার খেয়ে ফেলা জায়েজ হবে কি?
৫। খাবারের মালিক যদি মেসে উপস্থিত থাকেন, এবং কোন কাজের কারণে উক্ত সময়ের আগে আসতে না পারেন, তিনি কাউকে বলেও রাখেন নি, সেক্ষেত্রে তাকে না জানিয়ে কি খাবার খাওয়া বৈধ হবে?
৬। উক্ত আইন কি জায়েজ নাকি নাজায়েজ? নাজায়েজ হলে এক্ষেত্রে বিকল্প কি সমাধান হতে পারে ?
by (25 points)
 নির্দিষ্ট সময়ের পরে খাবার অন্য কেউ খেতে পারবে। উক্ত সিদ্ধান্তে মেসের সকল সদস্যের সম্মতি রয়েছে- তাহলে এত খুটিনাটি প্রশ্নের কী দরকার?  ১ ও ৩ - এ মূলত একই প্রশ্ন করা হয়েছে। ৪ ও ৫ নং প্রশ্নটিও এর গণ্ডিতে আসে। কারণ সময়ের মধ্যে যে খাওয়া যাবে না - এটা স্পষ্ট। এ ক্ষেত্রে ৬ নং প্রশ্নটিই যথেষ্ট ছিল। সাথে ১,৩,৪,৫ মিলিয়ে একটি প্রশ্ন হতে পারত। অর্থাৎ সময়ের পরে খাবার অন্য কোন সদস্য বা বুয়া খেয়ে ফেলতে/ ফেলে দিতে পারবে কিনা। আর সাথে ২ নং প্রশ্নটি থাকতে পারত।  অর্থাৎ বড়জোর ৩ টি প্রশ্ন হতে পারত৷ 

উপরের অনুচ্ছেদটি লেখার কারণ হল- আসলে একবারে অনেকগুলো প্রশ্ন করা সমীচীন নয়। বিশেষত যখন একাধিক প্রশ্ন সমার্থক হয়। 
অল্প কথায় কাজ হলে বেশি কথার প্রয়োজন কী?
  তাই প্রশ্ন করার আগে একটু ভেবে চিন্তে সামারাইজ করে লেখা ভাল। এতে মুফতি সাহেবের উত্তর দিতে সুবিধা হয়। পরে যারা পড়ছে, তারাও সহজে বুঝে নিতে পারে। আলোচ্য প্রশ্নে ৬ টি প্রশ্ন ও তার ৬ টি জবাব একজন পাঠকের পক্ষে এক দফায় বোঝা সম্ভব না। আর মোবাইলে পড়তে হলে ত কয়েক বার স্ক্রল করে ওঠানামা করতে হবে।

প্রশ্ন করার সময় বিষয়টি নজরে রাখলে ভাল হয়। জাযাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

+1 vote
by (565,920 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


(০১)
শরীয়তের বিধান হলো কাহারো সম্পদ তার সন্তুষ্টি চিত্তে দেওয়া ব্যাতিত তাহা ব্যবহার করা জায়েজ নেই।
,
মহান আল্লাহ  তায়ালা  ইরশাদ করেনঃ 
وَ لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ وَ تُدۡلُوۡا بِہَاۤ اِلَی الۡحُکَّامِ لِتَاۡکُلُوۡا فَرِیۡقًا مِّنۡ اَمۡوَالِ النَّاسِ بِالۡاِثۡمِ وَ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۸۸﴾

আর তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না, এবং মানুষের ধন-সম্পত্তির কিছু অংশ জেনে বুঝে অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে বিচারকদের কাছে পেশ করো না।
(সুরা বাকারা ১৮৮)

হাদীস শরীফে  এসেছেঃ 
عَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ».

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়। 
আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২,মিশকাত ২৯৪৬)

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু উক্ত মেসের সকলেই সন্তুষ্টি চিত্তে উক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে,তাই এক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের পর তাহা খাওয়া জায়েজ হবে।
মালিকের অনুমতি নিতে হবেনা।  
,
(০২)
খাবারের মালিক দায়ী থাকবে।
,
(০৩)
নির্ধারিত সময়ের পর তাহা খেতে পারবে।
,
(০৪)
নির্ধারিত সময়ের আগে খেতে চাইলে মালিকের অনুমতি নিতে হবে।

(০৫)
 নির্ধারিত সময়ের পর তাহা খাওয়া জায়েজ হবে।
তবে মালিক নিষেধ করলে অন্য কাহারো খাওয়া জায়েজ হবেনা।

(০৬)
সন্তুষ্টি চিত্তে  সকলের সম্মতি থাকলে উক্ত আইন জায়েজ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...