بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
হাদীসে এসেছে যে,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ: قَالَ رَجُلٌ:
يَا رَسُولَ اللهِ الرَّجُلُ مِنَّا يَلْقَى أَخَاهُ أَوْ صَدِيقَهُ أَيَنْحَنِي
لَهُ؟ قَالَ: لاَ، قَالَ: أَفَيَلْتَزِمُهُ وَيُقَبِّلُهُ؟ قَالَ: لاَ، قَالَ:
أَفَيَأْخُذُ بِيَدِهِ وَيُصَافِحُهُ؟ قَالَ: نَعَمْ.
হযরত আনাস বিন মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি
বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কারো যদি তার ভাই বা তার বন্ধুর
সাথে সাক্ষাৎ হয়, তবে কি সে তার অভিবাদন এর জন্য মাথা ঝুঁকাবে?
তিনি বললেন, না। লোকটি বলল, তাহলে কি তাকে লেপ্টে ধরবে এবং চুমু খাবে? তিনি বললেন,
না। তাহলে কি তার হাত ধরবে এবং তার সাথে মুসাফাহা করবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ।ইমাম তিরমিজী রহঃ বলেন, হাদীসটি হাসান। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৭২৮, বাংলা ২৭২৯, মুসনাদে
আহমাদ, হাদীস নং-১৩০৪৪}
এ হাদীসে রাসূল সাঃ মাথা নুয়াতে এবং চুমু খাওয়াতে নিষেধ করেছেন।এ মাসআলাটি নিয়ে
বিজ্ঞ ফুক্বাহায়ে কেরাম এবং মুহাদ্দিসীনে কেরামের মাঝে মতভেদ রয়েছে।একদল বলেছেন সম্মানার্থে
জায়েজ আছে পদচুম্বন করা। কিন্তু তারা সাথে সাথে এ শর্তারোপ করেছেন যে, যেন চুমু খেতে
গিয়ে রুকুর সূরত বা সেজদার সূরত না হয়ে যায়। যদি রুকু বা সেজদার সূরত হয়ে যায়,
তাহলে তা জায়েজ হবে না। {আলমুজতাবা-৪/২০৫,
আলমুহীতুল বুরহানী-৮/১১৮, ফাতাওয়া আলমগীরী-৫/৩৬৯}
হাদিস শরীফে ঘটনা বর্ণিত আছে; ক্বায়িস ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন,
আমি (কুফার) আল-হীরা শহরে এসে দেখি, সেখানকার লোকেরা
তাদের নেতাকে সিজদা করছে। আমি ভাবলাম, (তাহলে তো) রাসূলুল্লাহ
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই সিজদার অধিক হকদার। অতঃপর আমি নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর খেদমতে এসে বলি যে, আমি আল-হীরা শহরে
গিয়ে দেখে এসেছি, সেখানকার লোকেরা তাদের নেতাকে সিজদা করে। সুতরাং
হে আল্লাহ্র রাসূল! (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনিই তো এর অধিক হকদার যে,
আমরা আপনাকে সিজদা করি? তিনি বললেনঃ যদি (মৃত্যুর
পর) তুমি আমার ক্ববরের পাশ দিয়ে যাও তখন কি তুমি সেটাকে সিজদা করবে? আমি বললাম, না। তিনি বললেনঃ সাবধান! তোমরা এরূপ করবে
না। আমি যদি কোন মানুষকে সিজদা করার অনুমতি দিতাম, তবে স্ত্রীদেরকে
নির্দেশ দিতাম তাদের স্বামীদেরকে সিজদা করতে। কেননা আল্লাহ্ স্ত্রীদের উপর স্বামীদের
অধিকার দিয়েছেন।- আবু দাউদঃ ২১৪০ (সহিহ হাদিস)।
স্ত্রীর সাথে সহবাস করাও একটি ইবাদত । যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-হযরত আবু যর রাযি
থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَبِي، ذَرٍّ أَنَّ نَاسًا، مِنْ أَصْحَابِ
النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالُوا لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَا
رَسُولَ اللَّهِ ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثُورِ بِالأُجُورِ يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي
وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ وَيَتَصَدَّقُونَ بِفُضُولِ أَمْوَالِهِمْ . قَالَ
" أَوَلَيْسَ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لَكُمْ مَا تَصَّدَّقُونَ إِنَّ بِكُلِّ
تَسْبِيحَةٍ صَدَقَةً وَكُلِّ تَكْبِيرَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلِّ تَحْمِيدَةٍ صَدَقَةٌ
وَكُلِّ تَهْلِيلَةٍ صَدَقَةٌ وَأَمْرٌ بِالْمَعْرُوفِ صَدَقَةٌ وَنَهْىٌ عَنْ
مُنْكَرٍ صَدَقَةٌ وَفِي بُضْعِ أَحَدِكُمْ صَدَقَةٌ " . قَالُوا يَا رَسُولَ
اللَّهِ أَيَأْتِي أَحَدُنَا شَهْوَتَهُ وَيَكُونُ لَهُ فِيهَا أَجْرٌ قَالَ
" أَرَأَيْتُمْ لَوْ وَضَعَهَا فِي حَرَامٍ أَكَانَ عَلَيْهِ فِيهَا وِزْرٌ
فَكَذَلِكَ إِذَا وَضَعَهَا فِي الْحَلاَلِ كَانَ لَهُ أَجْرٌ " .
কিছু সাহাবা বললেন, হে আল্লাহর রসূল! ধনীরাই তো বেশী নেকীর অধিকারী হয়ে গেল। তারা
নামায পড়ছে যেমন আমরা নামায পড়ছি, তারা রোযা রাখছে যেমন আমরা
রাখছি এবং (আমাদের চেয়ে তারা অতিরিক্ত কাজ এই করছে যে,) নিজেদের
প্রয়োজন-অতিরিক্ত মাল থেকে তারা সাদকাহ করছে। তিনি বললেন, আল্লাহ
কি তোমাদের জন্য সাদকাহ করার মত জিনিস দান করেননি? নিঃসন্দেহে
প্রত্যেক তাসবীহ সাদকাহ, প্রত্যেক তাকবীর সাদকাহ, প্রত্যেক তাহলীল সাদকাহ, ভাল কাজের নির্দেশ দেওয়া সাদকাহ
ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা সাদকাহ এবং তোমাদের স্ত্রী-মিলন করাও সাদকাহ।
সাহাবাগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কেউ স্ত্রী-মিলন করে নিজের যৌনক্ষুধা
নিবারণ করে, তবে এতেও কি তার পুণ্য হবে? তিনি বললেন, কী রায় তোমাদের, যদি
কেউ অবৈধভাবে যৌন-মিলন করে, তাহলে কি তার পাপ হবে? (নিশ্চয় হবে।) অনুরূপ সে যদি বৈধভাবে (স্ত্রী-মিলন করে) নিজের কামক্ষুধা নিবারণ
করে, তাহলে তাতে তার পুণ্য হবে। (সহীহ মুসলিম ২৩৭৬)
نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ فَأْتُوا حَرْثَكُمْ
أَنَّىٰ شِئْتُمْ ۖ وَقَدِّمُوا لِأَنفُسِكُمْ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ وَاعْلَمُوا
أَنَّكُم مُّلَاقُوهُ ۗ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে
ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর
নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে
তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।(সূরা বাকারা-223)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
১.প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে উক্ত কাজটি শির্ক
হবে না বরং এটি জায়েয আছে। কেননা , আল্লাহ ব্যতিত অন্য কারো সামনে ইবাদত
বা সম্মানের উদ্দেশ্যে মাথা ঝুকানো শির্ক যা এখানে পাওয়া যায়নি।
২. হ্যাঁ, স্ত্রী স্বামীর উপর উঠেও রতিক্রিয়া করতে পারবে। শুধু তাই নয় স্বামী স্ত্রী
তাদের ইচ্ছানুযায়ী যে কোন আসনে যৌন মিলন করতে পারবে, তাতে ইসলামের
কোন বিধি নিষেধ নেই। নিষেধ শুধু একটি স্থানেই আছে। সেটা হলো পায়ু পথে যৌন মিলন করা।
মানে হলো স্ত্রীর মলদ্বার দিয়ে লিঙ্গ চালান করা। এটা ইসলামে কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। যারা
এটা করবে নবী করীম (সাঃ) বলেছেন তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। কেননা মহান আল্লাহ লুত সম্প্রদায়কে
ধ্বংস করেছেন শুধু মাত্র পায়ু পথে সেক্স করার জন্যই। তবে উত্তম পদ্ধতি হল স্ত্রী নিচে
থাকবে এবং স্বামী উপরে থাকবে। কেননা এতে স্ত্রী দেহ স্বামীর দেহের দ্বারা ঢেকে যায়।
তবে আপনার ইচ্ছা হলে আপনি আপনার স্বামী উপর উঠে নিজের সুবিধা অনুযায়ী রতিক্রিয়া করতে
পারেন। এতে না জায়েযের কিছু নেই।