بسم الله الرحمن الرحيم
জবাবঃ-
الَّذِينَ يَذْكُرُونَ اللّهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَىَ
جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُونَ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ رَبَّنَا مَا
خَلَقْتَ هَذا بَاطِلاً سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
যাঁরা দাঁড়িয়ে, বসে, ও
শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষযে,
(তারা বলে) পরওয়ারদেগার! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। সকল পবিত্রতা
তোমারই, আমাদিগকে তুমি দোযখের শাস্তি থেকে বাঁচাও।(সূরা আলে
ইমরান-১৯১)
কোরআন অন্য কোনো বইয়ের মতো নয়। কোরআন পাঠ করতে হয় যথাযথ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আদব সহকারে। নিম্নে
এর আদবগুলো উল্লেখ করা হলো—
প্রথম আদব : নিয়ত শুদ্ধ করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) কিয়ামতের দিন
তিন শ্রেণির মানুষের ওপর আগুনের শাস্তি কঠোর করা হবে বলে জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন
ওই কারি, যিনি ইখলাসের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত
করতেন না। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৮২; সহিহ
ইবন হিব্বান, হাদিস : ৪০৮)
দ্বিতীয় আদব : পবিত্র হয়ে অজু অবস্থায় কোরআন তিলাওয়াত করা। অজু
ছাড়াও কোরআন পড়া যাবে, তবে তা অজু অবস্থায় পড়ার সমান হতে
পারে না।
তৃতীয় আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আগে মিসওয়াক করা। আলী (রা.) থেকে
বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, ‘তোমাদের মুখগুলো কোরআনের পথ। তাই সেগুলোকে মিসওয়াক দ্বারা সুরভিত করো।’ (ইবনে
মাজাহ, হাদিস : ২৯১)
চতুর্থ আদব : তিলাওয়াতের শুরুতে আউজুবিল্লাহ পড়া। আল্লাহ তাআলা
ইরশাদ করেন, ‘সুতরাং
যখন তুমি কোরআন পড়বে, তখন আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয়
চাও।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৮)
পঞ্চম আদব : বিসমিল্লাহ পড়া। তিলাওয়াতকারীর উচিত সুরা তাওবা
ছাড়া সব সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে প্রমাণিত যে তিনি এক
সুরা শেষ করে বিসমিল্লাহ বলে আরেক সুরা শুরু করতেন। শুধু সুরা আনফাল শেষ করে সুরা তাওবা
শুরু করার সময় বিসমিল্লাহ পড়তেন না।
ষষ্ঠ আদব : তারতিলের সঙ্গে (ধীরস্থিরভাবে) কোরআন পড়া। কারণ আল্লাহ
তাআলা বলেন, ‘তোমরা
তারতিলের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করো।’ (সুরা : মুজ্জাম্মিল, আয়াত
: ৪)
সপ্তম আদব : সুন্দর করে মনের মাধুরী মিশিয়ে কোরআন পড়া। বারা
(রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এশার নামাজে সুরা
ত্বিন পড়তে শুনেছি। আমি তাঁর চেয়ে সুন্দর কণ্ঠে আর কাউকে তিলাওয়াত করতে শুনিনি।’ (বুখারি,
হাদিস : ৭৫৪৬; মুসলিম, হাদিস
: ১০৬৭)
অষ্টম আদব : সুরসহকারে কোরআন তিলাওয়াত করা। এটি সুন্দর করে কোরআন
তিলাওয়াতের অংশ। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সে আমার উম্মত নয়, যে সুরসহযোগে কোরআন পড়ে
না।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫২৭; আবু দাউদ,
হাদিস : ১৪৭১)
নবম আদব : রাতে ঘুম পেলে বা ঝিমুনি এলে তিলাওয়াত থেকে বিরত থাকা।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ রাতে নামাজ পড়ে,
ফলে তার জিহ্বায় কোরআন এমনভাবে জড়িয়ে আসে যে সে কী পড়ছে তা টের পায় না,
তাহলে সে যেন শুয়ে পড়ে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৮৭২;
মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৮২১৪)
অর্থাৎ তার উচিত এমতাবস্থায় নামাজ না পড়ে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে
পড়া, যাতে তার মুখে কোরআন ও অন্য কোনো
শব্দের মিশ্রণ না ঘটে এবং কোরআনের আয়াত এলোমেলো হয়ে না যায়।
দশম আদব : ফজিলতপূর্ণ সুরাগুলো ভালোভাবে শিক্ষা করা এবং সেগুলো
বেশি বেশি তিলাওয়াত করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ কি রাত্রিকালে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ
তিলাওয়াতে অক্ষম? তারা বলল, কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ
কিভাবে পড়া যাবে! তিনি বলেন, ‘সুরা ইখলাস কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের
সমতুল্য।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯২২; বুখারি,
হাদিস : ৫০১৫)
আরো বিস্তারিত জানতে
ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/171/?show=171#q171
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
প্রশ্নেলিখিত ছুরতে আপনার আরো সতর্ক থাকা উচিৎ ছিল। উক্ত কাজটি
কুরআনের আদবের পরিপন্থি হয়েছে বিধায় আপনাকে বেশী বেশী তওবা করতে হবে ও আল্লাহর কাছে
ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে এমন কাজ যেন না হয় সে ব্যপারে খুব সতর্ক থাকতে হবে।