بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
বিয়েশাদিতে হলুদ অনুষ্ঠান, ডিজে পার্টি, আতশবাজি, মরিচা বাতিসহ যত ধরনের অপসংস্কৃতি আছে,
সবই বর্জনীয়।তাই পবিত্র এই ইবাদতকে বিভিন্ন কুসংস্কার ও গুনাহের মাধ্যমে
উদ্যাপন করা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সম্পূর্ণ ইসলামী পদ্ধতিতে বিয়ের আয়োজন করা
আয়োজনকারীদের কর্তব্য। তারা যদি সেখানে শরিয়তবিরোধী কোনো কাজের আয়োজন করে, বেপর্দা পরিবেশ সৃষ্টি করে, সেখানে যত গুনাহ হবে,
এর অংশ তাদেরও বহন করতে হবে।
তা ছাড়া বিয়েশাদিতে বেশি খরচ
হয় অনৈসলামিক কর্মকাণ্ডগুলোতেই। অথচ বিয়েশাদির অনুষ্ঠান যত অনাড়ম্বর হবে, খরচ যত কম হবে ততই তা বরকতপূর্ণ
হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সর্বাধিক বরকতপূর্ণ বিয়ে হচ্ছে,
যার খরচ যত সহজ ও স্বাভাবিক হয়।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৪৫২৯)
কারণ অপব্যয় ও অপচয় নিন্দনীয়
কাজ। পবিত্র কোরআনে অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমাদের অর্থ-সম্পদ অপ্রয়োজনীয়
কাজে খরচ করবে না।
إِنَّ
الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ
الشَّيَاطِينِ
নিশ্চয় যারা
অপব্যয় করে তারা শয়তানের ভাই।’ (বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৬-২৭)
★বর্তমান বিয়েশাদির বেশির ভাগ কাজই হিন্দুয়ানী প্রথা,তাই এগুলো স্পষ্ট নাজায়েজ।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ عَبْدِ اللهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ:: ” الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ
রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, ব্যক্তি [কিয়ামতের দিন] তার সাতে থাকবে যাকে
সে মোহাব্বত করে। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস
নং-৩৭১৮, বুখারী, হাদীস নং-৬১৬৮,
৫৮১৬}
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ
হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত।
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪০৩১}
বিয়ের সময় বরকে গেটে আটকে রেখে
টাকা আদায় করা হয়। সেখানে উভয় পক্ষের যুবক-যুবতীরা বিভিন্ন ধরনের দুষ্টমিতে মেতে ওঠে।
এখানে যেমন শরিয়তের মহান হুকুম পর্দা লঙ্ঘন হয়। তেমনি অনেক সময় চাপ সৃষ্টি করে বেশি
টাকা আদায় করা হয়।
অথচ হাদীস শরীফে এসেছেঃ
وَعَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ
رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ
إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ».
আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ)
তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো
জন্য হালাল নয়।
(আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২,মিশকাতুল মাসাবিহ ২৯৪৬)
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন
:
‘কোনো মুসলমানের সম্পদ তার আন্তরিক
সম্মতি ছাড়া হস্তগত করলে তা হালাল হবে না।’ (বায়হাকি, হাদিস
: ১৬৭৫৬)
★ সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
নতুন জামাই কিংবা কনেকে হাত
ধুইয়ে টাকা উসুল করা,
বাসর ঘরে গেট ধরে জোরপূর্বক টাকা উসুল করা উচিত নয়। যদি বর বা কনে স্বেচ্ছায়
তাদের আত্মীয়-স্বজনদের কিছু দেয়, তা নিতে কোনো অসুবিধা নেই। অথবা
বর ও কনের আত্নীয় স্বজন স্বেচ্ছায় তাদেরকে কিছু দেয় তা নেওয়া জায়েয আছে। কিন্তু জেনে
শুনে প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে উক্ত টাকা গ্রহন না করায় উচিৎ ।