আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
311 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম। আমাকে আমার খালামনি কিছু টাকা হাদিয়া দিয়েছে। টাকাটা খালাতো বোনের বিয়ের গেট ধরা নাচ গান করার ইত্যাদি করে সবাই যা পেয়েছে সেখান থেকে দিয়েছে। এই টাকা কি আমার জন্য নেয়া ঠিক হবে?যেহেতু এই গুলো গান বাজনা আর গেট ধরে নেওয়া হয়েছে?আর আমি এই সবে অংশগ্রহণও করিনি?

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

 

জবাব,

বিয়েশাদিতে হলুদ অনুষ্ঠান, ডিজে পার্টি, আতশবাজি, মরিচা বাতিসহ যত ধরনের অপসংস্কৃতি আছে, সবই বর্জনীয়।তাই পবিত্র এই ইবাদতকে বিভিন্ন কুসংস্কার ও গুনাহের মাধ্যমে উদ্যাপন করা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সম্পূর্ণ ইসলামী পদ্ধতিতে বিয়ের আয়োজন করা আয়োজনকারীদের কর্তব্য। তারা যদি সেখানে শরিয়তবিরোধী কোনো কাজের আয়োজন করে, বেপর্দা পরিবেশ সৃষ্টি করে, সেখানে যত গুনাহ হবে, এর অংশ তাদেরও বহন করতে হবে।

তা ছাড়া বিয়েশাদিতে বেশি খরচ হয় অনৈসলামিক কর্মকাণ্ডগুলোতেই। অথচ বিয়েশাদির অনুষ্ঠান যত অনাড়ম্বর হবে, খরচ যত কম হবে ততই তা বরকতপূর্ণ হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সর্বাধিক বরকতপূর্ণ বিয়ে হচ্ছে, যার খরচ যত সহজ ও স্বাভাবিক হয়।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৪৫২৯)

কারণ অপব্যয় ও অপচয় নিন্দনীয় কাজ। পবিত্র কোরআনে অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমাদের অর্থ-সম্পদ অপ্রয়োজনীয় কাজে খরচ করবে না।

إِنَّ الْمُبَذِّرِينَ كَانُوا إِخْوَانَ الشَّيَاطِينِ

 নিশ্চয়  যারা অপব্যয় করে তারা শয়তানের ভাই।’ (বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৬-২৭)

বর্তমান বিয়েশাদির বেশির ভাগ কাজই হিন্দুয়ানী প্রথা,তাই এগুলো স্পষ্ট নাজায়েজ।   

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ عَبْدِ اللهِ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ قَالَ:: ” الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ

 

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, ব্যক্তি [কিয়ামতের দিন] তার সাতে থাকবে যাকে সে মোহাব্বত করে। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৩৭১৮, বুখারী, হাদীস নং-৬১৬৮, ৫৮১৬}

 

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ

 

হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি যার সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪০৩১}

 

বিয়ের সময় বরকে গেটে আটকে রেখে টাকা আদায় করা হয়। সেখানে উভয় পক্ষের যুবক-যুবতীরা বিভিন্ন ধরনের দুষ্টমিতে মেতে ওঠে। এখানে যেমন শরিয়তের মহান হুকুম পর্দা লঙ্ঘন হয়। তেমনি অনেক সময় চাপ সৃষ্টি করে বেশি টাকা আদায় করা হয়।

অথচ হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ».

 

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়।

(আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২,মিশকাতুল মাসাবিহ ২৯৪৬)

রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন :

কোনো মুসলমানের সম্পদ তার আন্তরিক সম্মতি ছাড়া হস্তগত করলে তা হালাল হবে না।’ (বায়হাকি, হাদিস : ১৬৭৫৬)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

নতুন জামাই কিংবা কনেকে হাত ধুইয়ে টাকা উসুল করা, বাসর ঘরে গেট ধরে জোরপূর্বক টাকা উসুল করা উচিত নয়। যদি বর বা কনে স্বেচ্ছায় তাদের আত্মীয়-স্বজনদের কিছু দেয়, তা নিতে কোনো অসুবিধা নেই। অথবা বর ও কনের আত্নীয় স্বজন স্বেচ্ছায় তাদেরকে কিছু দেয় তা নেওয়া জায়েয আছে। কিন্তু জেনে শুনে প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে উক্ত টাকা গ্রহন না করায় উচিৎ ।

 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (11 points)
আমি টাকা চাইনি এমনিতেই আমাকে দিসে আর বলছে যে তুমি তো এইসবে যাও না ই তবু্ও দিলাম এখন খালামুনিকে টাকাটা ফেরত দি লে বাসা থেকে  বকা দিতে পারে এম্নিতেই বিয়েতে এইসবে ছিলাম না তাতে তারা অসন্তোষস্ট। আমি কি টাকাটা আমাদের বাসায় যে মাঝেমাঝে ভিক্ষুক আসে তাদের আর আমাদের বাসায় যে আন্টি কাজ করে তাদের ভাগ করে দিতে পারব। এই নিয়তে যে এই টাকা যার তার হয়ে আমি এটা দান করে দিলাম?        

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...