আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
172 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
দেখুন কেউ যানে সমকামীতা এক জঘন্য পাপ।যদি সে পরিস্থিতির শিকার হয়ে,মা বাবা বিয়েতে রাজি না থাকায় কামনার তাড়নায় যদি অনিচ্ছায় শয়তানের ধোঁকায় পড়ে সমকামীতায় জড়িয়ে পড়ে,এবং স্থানটা তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।এবং সে পরবর্তীতে নিজের ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়।তবে তার কি করণীয় আল্লাহ কি তাকে পাকড়াও করবে??

উল্লেখ্য সে আগেও মাঝে মাঝে পরিস্থিতির শিকার হয়ে এসবে জড়িয়ে পড়ত সাথে সাথেই আবার ভুল বুঝতে পেরে তওবা করে নিত।সেও হস্তমৈথুনেও অভ্যস্ত।সে এসব ছাড়তে চায় কিন্তু পারছে না।পরিবারও বিয়ে করাচ্ছে না।সে দ্বীনে পেরার পর থেকে বারবার হস্তমৈথুন ছেড়েও বিয়ে না হওয়ায় আর পরিবেশের কারণে বারবার মৈথুনে ছড়িয়ে যাচ্ছে। সে অনুতপ্ত কিন্তু কিছুতেই এসব গুনাহ ছাড়তে পারছে না।এজন্য তার ভিতরটা জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে।
১)আল্লাহ এজন্য তাকে ক্ষমা করবেন??

২)তাকে কিভাবে তাওবা করতে হবে??

৩)সে কি নিজে নিজে বিয়ে করতে পারবে??

৪)আমরা জানি ব্যবসা পবিত্র জায়গা,এখন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এরূপ জঘন্য কাজ করায় তার ব্যবসার ক্ষতি হবে??
আমি এখন তাকে কি উপদেশ দিব??

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

عَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِذَا أَتَى الرَّجُلُ الرَّجُلَ فَهُمَا زَانِيَانِ، وَإِذَا أَتَتِ الْمَرْأَةُ الْمَرْأَةَ فَهُمَا زَانِيَانِ

হযরত আবূ মুসা আশআরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে পুরুষ পুরুষের সাথে নোংরা কাজে লিপ্ত হয়, উভয়ে জিনাকারী সাব্যস্ত হবে। তেমনি যে নারী আরেক নারীর সাথে কুকর্মে লিপ্ত হয় উভয়ে জিনাকারী সাব্যস্ত হবে। {শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৫০৭৫, সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১৭০৩৩}

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” اقْتُلُوا الْفَاعِلَ وَالْمَفْعُولَ بِهِ، فِي عَمَلِ قَوْمِ لُوطٍ،

হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, লুত আঃ এর কওমের মত কুকর্মে লিপ্ত উভয়কে হত্যা করে ফেল। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৭২৭, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২৫৬১, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪৪৬২, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৪৫৬, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩২৩৪}

সমকামিতা একটি নিকৃষ্ট পাপ। সেই সাথে বিকৃত রুচির পরিচায়ক। লুত আলাহিস সালামের গোনাহগার উম্মতীদের উপর একারণেই শাস্তি অবতীর্ণ হয়েছিল।

ভবিষ্যতে খুবই সতর্ক থাকতে হবে কখনোই যেন এমন জঘন্য কাজ আর না হয়।খালিস দিলে তওবা করুন। ভবিষ্যতে উক্ত পাপ আর কখনো না করার দৃঢ় সংকল্প করুন। একা কারো সাথে থাকা পরিহার করুন।

কোন আল্লাহওয়ালা শায়েখের হাতে বাইয়াত হতে পারেন বা দাওয়াত ও তাবলীগে সময় দিন।ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দিবেন।

বান্দা যতবারই পাপ করুক না কেন, খালেস দিলে তওবা করলে মহান রব তাকে ক্ষমা করে দেন। সেই হিসেবে ভবিষ্যতে উক্ত জঘন্য পাপ না করার দৃঢ় সংকল্প করে, উক্ত কাজের জন্য অনুতপ্ত হয়ে সাচ্চা দিলে তওবা করলে আল্লাহ তাআলা ইনশাআল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন।

إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ [٢:٢٢٢

নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। [বাকারা-২২২]

إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:١٧] وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا [٤:١٨

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}

وَإِنِّي لَغَفَّارٌ لِّمَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا ثُمَّ اهْتَدَىٰ [٢٠:٨٢]

আর যে তওবা করে,ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে অতঃপর সৎপথে অটল থাকে,আমি তার প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল। [সূরা ত্বহা-৮২]

وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

মুমিনগণ,তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর,যাতে তোমরা সফলকাম হও। [সূরা নূর-৩১]

হযরত উবাদা বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ

التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ

গোনাহ থেকে তওবাকারী এমন,যেন সে গোনাহ করেইনি। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪২৫০]

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,

فَإِنَّ العَبْدَ إِذَا اعْتَرَفَ ثُمَّ تَابَ، تَابَ اللَّهُ عَلَيْهِ

বান্দা গোনাহ স্বীকার করে মাফ চাইলে আল্লাহ পাক তা কবুল করেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৪১৪১]

عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا أَصَرَّ مَنِ اسْتَغْفَرَ، وَإِنْ عَادَ فِي الْيَوْمِ سَبْعِينَ مَرَّةٍ

হযরত আবু বকর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যদি কেউ ক্ষমা প্রার্থনা করে, তবে সে দৈনিক সত্তর বার গোনাহ করলেও সে যেন আসলে গোনাহই করেনি। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৫১৪]

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

,২. খালিস দিলে তওবা করতে হবে।ভবিষ্যতে খুবই সতর্ক থাকতে হবে কখনোই যেন এমন জঘন্য কাজ আর না হয়। ভবিষ্যতে উক্ত পাপ আর কখনো না করার দৃঢ় সংকল্প করতে হবে।নিজের গুনাহের উপর অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে মাফ চাইলে তিনি ক্ষমা করবেন ইনশাআল্লাহ।

৩.পরিবারকে বুঝানোর চেষ্টা করতে হবে যেন তাকে বিয়ে দেয়।যদি তারা এতে সম্মতি নাদেয় তাহলে গুনাহ থেকে বাচার জন্য একাই বিয়ে করে নেওয়ার অধিকার ইসলাম তাকে দিয়েছে।

৪.সমকামিতা জঘন্য গুনাহের কাজ । আর যখন কোন জায়গায় গুনাহ হয় সেখান থেকে আল্লাহর রহমত উঠে যায়। তবে খালেস দিলে তওবা করলে আল্লাহ মাফ করবেন বলে আশা করা যায়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...