আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
121 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
As-salamu alaykum হুজুর, ইসলামে যুবক বয়সের সীমা কত?  কত বছর বয়স পর্যন্ত ইসলাম একজনকে যুবক হিসেবে বিবেচনা করে তার বিস্তারিত জানালে উপকার হত। যেহেতু যুবকদের ইবাদাত সবচেয়ে বেশি প্রিয় আল্লাহ তায়ালার নিকট তাই জানালে ভালো হত। মহিলা ও পুরুষ উভয়ের বেপারে জানানো যাবে কি?

1 Answer

0 votes
by (59,040 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

যৌবনকাল বলতে উদ্দেশ্য কি? সময়সীমা কী? কয়েকটি আয়াত ও হাদীসের দিকে দৃষ্টি দিলে এ ব্যাপারে কিছু ধারণা পাওয়া যাবে-

وَمَا بِكُمْ مِنْ نِعْمَةٍ فَمِنَ اللَّهِ ثُمَّ إِذَا مَسَّكُمُ الضُّرُّ فَإِلَيْهِ تَجْأَرُونَ (53

তোমরা যেসব নে‘মত ভোগ কর তা তো আল্লাহর নিকট হতে; আবার যখন দুঃখ-দৈন্য তোমাদেরকে স্পর্শ করে তখন তোমরা তাঁকেই ব্যাকুলভাবে আহবান কর’। {সূরা নাহল-৫৩}

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِرَجُلٍ وَهُوَ يَعِظُهُ: ” اغْتَنِمْ خَمْسًا قَبْلَ خَمْسٍ , شَبَابَكَ قَبْلَ هَرَمِكَ , وَصِحَّتَكَ قَبْلَ سَقَمِكَ , وَغِنَاكَ قَبْلَ فَقْرِكَ , وَفَرَاغَكَ قَبْلَ شُغُلُكَ , وَحَيَاتَكَ قَبْلَ مَوْتِكَ

আমর ইবনু মায়মূন আল-আওদী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে উপদেশ স্বরূপ বলেন, পাঁচটি বস্তুর পূর্বে পাঁচটি বস্ত্তকে গণীমত মনে করো। যথা (১) তোমার বার্ধক্য আসার পূর্বে যৌবনকে (২) পীড়িত হওয়ার পূর্বে সুস্বাস্থ্যকে (৩) দারিদ্র্যতার পূর্বে সচ্ছলতাকে (৪) ব্যস্ততার পূর্বে অবসরকে (৫) মৃত্যুর পূর্বে জীবনকে’। {শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৯৭৬৭, মুস্তাদরাক, হাদীস নং-৭৮৪৬}

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللَّهُ فِي ظِلِّهِ، يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلَّا ظِلُّهُ: الإِمَامُ العَادِلُ، وَشَابٌّ نَشَأَ فِي عِبَادَةِ رَبِّهِ، وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِي المَسَاجِدِ، وَرَجُلاَنِ تَحَابَّا فِي اللَّهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ، وَرَجُلٌ طَلَبَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ، فَقَالَ: إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ، وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ، أَخْفَى حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ

আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেছেন, সাত শ্রেণির লোকদের আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাঁর আরশের ছায়ার নিচে স্থান দিবেন। সেদিন তাঁর ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া থাকবে না। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক ২. ঐ যুবক যে তার প্রভুর আনুগত্যে যৌবনকে অতিবাহিত করেছে ৩. সেই ব্যক্তি যার অন্তর মসজিদের সাথে লটকানো থাকে ৪. সেই দুই ব্যক্তি যারা পরস্পরকে আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ভালবাসে এবং তারা সেকারণে পরস্পরে মিলিত হয় এবং পরস্পর পৃথকও হয় ৫. সেই ব্যক্তি যাকে কোন সম্ভ্রান্ত বংশের সুন্দরী নারী আহবান করে আর সে বলে আমি আল্লাহকে ভয় করি ৬. সেই ব্যক্তি যে গোপনে এমনভাবে দান করে যে, তার ডান হাত কি দান করে তা বাম হাত জানে না ৭. সেই ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার দুই চক্ষু অশ্রু বিসর্জন দেয়। {বুখারী, হাদীস নং-৬৬০, ৬২৯}

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” نِعْمَتَانِ مَغْبُونٌ فِيهِمَا كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ: الصِّحَّةُ وَالفَرَاغُ

ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (ছাঃ) এরশাদ করেছেন, দু’টি নে‘মতের ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষ ধোঁকার মধ্যে রয়েছে। তাহ’ল সুস্থতা ও সুস্বাস্থ্য’। {বুখারী, হাদীস নং-৬৪১২, ৬০৪৯}

উল্লেখিত আয়াত এবং হাদীস একথার দিকেই ইংগিত করছে যে, যৌবন বলতে বুঝানো হচ্ছে শারিরীক শক্তিমত্বা ও সক্ষমতা। যখন শরীরে শক্তি থাকে, সাস্থ্য ভাল থাকে, ভাল-মন্দ সব কাজ করারই ক্ষমতা আছে। সেই সময় গুনাহের কাজ না করে সওয়াবের কাজ করা। পাপের কাজ না করে পূণ্যের কাজ করা উত্তম ও শ্রেষ্ঠ দুর্বল হয়ে গেলে, শারিরীকভাবে অসুস্থ্য হয়ে গেলে, অক্ষম হয়ে গেলে পূণ্যের কাজ করার তুলনায়। কারণ যখন পাপ করার ক্ষমতা ছিল তখন নিজেকে বিরত রাখার দ্বারা আল্লাহর প্রতি মোহাব্বত ও ভয় প্রকাশ পায়। আর অসহায় হয়ে গেলে বাধ্য হয়ে করার বিষয়টি চলে আসে। যেহেতু গোনাহ করার ক্ষমতা নেই তাই সওয়াবের কাজ করছে বলে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। যা যৌবনকাল তথা সুস্থ্য ও সবল থাকাকালে করলে হয় না।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 যৌবনকালকে শুধু বয়য় না বুঝে শক্তিমত্বা, সবলতা, সক্ষমতা ও সুসাস্থ্যের অধিকারী হিসেবে নেয়াই যুক্তিযুক্ত। সুতরাং যে ব্যক্তি সবল, শক্তিশালী, বয়সের ভাড়ে নুব্জ নয় সেই যুবক। আর যে বয়সের ভাড়ে নুব্জ, অসুস্থ্য, দুর্বল সেই অক্ষম ও বৃদ্ধের মত।

যৌবনকে বয়সের সাথে খাস না করে শারিরীক সক্ষমতাই যৌবন এদিকে নির্দেশ করে প্রখ্যাত হাদীস ব্যাখ্যাকার মোল্লা আলী কারী হানাফী রহঃ বলেন- (” شَبَابَكَ “) أَيْ: زَمَانَ قُوَّتِكَ عَلَى الْعِبَادَةِ তোমার যৌবন তথা ইবাদত করার শক্তি থাকার সময়। {মিরকাতুল মাফাতীহ, কিতাবুর রিকাক}

 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 140 views
...