وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
.
প্রশ্নে উল্লেখিত সঞ্চয়পত্রের টাকা কি উক্ত ব্যাক্তি রেখেছে?
নাকি এটি সরাসরি পেনশনের টাকা?
যদি এটি সে নিজেই সঞ্চয় হিসেবে রেখে থাকে,তাহলে তো মুনাফা স্পষ্ট হারাম।
এই অতিরিক্ত টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।
কেননা এটি সূদ।
আর শরীয়তের বিধান মতে গ্রহন করা হারাম।
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٢٧٨]
হে ঈমানদারগণ,তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে,তা পরিত্যাগ কর,যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা বাকারা-২৭৮]
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا الرِّبَا أَضْعَافًا مُّضَاعَفَةً ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٣:١٣٠]
হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো। [সুরা আলে ইমরান-১৩০]
হাদিস শরিফে এসেছে-
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.
আল্লাহর রাসূল ﷺ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)
★তবে এটি যদি পেনশনের টাকা হয়,সেক্ষেত্রে পেনশনের মাসয়ালা জানতে হবেঃ
চাকুরী পরবর্তি বোনাস সাধারণত দু ধরণের হয়ে থাকে।যথা-
(১)প্রভিডেন্ট ফান্ড
(২)পেনশন ফান্ড
প্রভিডেন্ট ফান্ডের বিস্তারিত বিধি-বিধান।
প্রভিডেন্ট ফান্ডের উৎস দু ধরণের হয়ে থাকে। যথা-
(ক)বাধ্যতামূলক ইনকাম ট্যাক্স
অর্থাৎ ইনকাম ট্যাক্স কেটে রাখা যদি বাধ্যতামূলক সরকারী নীতিমার আওতাধীন হয়,যা পরবর্তীতে প্রভিডেন্ট ফান্ড রূপে উক্ত চাকুরজীবিকে দেয়া হবে।তাহলে উক্ত প্রভিডেন্ট ফান্ড সুদের অন্তর্ভূক্ত হবে না।কেননা বেতনের কর্তনকৃত ঐ অংশ ইচ্ছা করলেও উক্ত চাকুরজীবি এখন উসূল করতে পারবে।আর কবজা বা হস্তগ্রত করার পূর্বে কেউ কোনো বেতন ভাতার মালিক হতে পারে না।যখন সে উক্ত টাকার মালিকই হয়নি,তখন সে কিভাবে এ টাকাকে সুদে লাগাবে।তাই কর্তনকৃত টাকার চেয়ে অতিরিক্ত টাকার প্রভিডেন্ট ফান্ডকে সুদ বলা যাবে না।বরং এক্ষেত্রে এটাই অনুমান করা হবে যে,বেতন-ভাতার অপরিশোধিত সেই টাকাগুলাই এখন তার হস্তগ্রত হচ্ছে। এখানে সবগুলাকেই তার বেতন রূপে গণ্য করা হবে।
(খ)পেনশন হিসেবে কেটে রাখা যদি যদি অপশনাল নীতিমালার আওতাধীন থাকে। যা ইচ্ছা করলে এড়িয়ে চলা যায়।তাহলে যতটুকু টাকা ইনকাম ট্যাক্স রূপে কেটে রাখা হয়েছে,পরবর্তীতে প্রভিডেন্ট ফান্ডের ততটুকু টাকাই তার জন্য গ্রহণ করা জায়েয হবে।অতিরিক্ত টাকাকে এক্ষেত্রে সুদ হিসেবে গণ্য করা হবে।কেননা সে ইচ্ছা করলে কর্তনকৃত ঐ টাকাগুলোকে পূর্বেই নিজ হাতে নিয়ে আসতে পারত। যখন সে ইচ্ছা করে আনেনি।তাই বুঝা গেল যে,সে ইচ্ছা করে সুদে লাগিয়েছে।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত পেনশনের জমানো টাকা যদি বাধ্যতামূলক হয়,এখানে যদি নিজের থেকে বাড়িয়ে কিছু না রাখা হয়,তাহলে লভ্যাংশ সূদ নয়।
সেটির ব্যবহার জায়েজ আছে।
আর যদি পেনশন খাতে জমানো টাকা যদি ঐচ্ছিক হয়,তাহলে মুনাফা গ্রহন জায়েজ নেই।
সেটি সূদ হবে।
তাই গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।
উক্ত পরিবার এই টাকা দিয়ে চলতে পারবেনা।
অন্য কোনো বৈধ উপার্জন ক্ষেত্রে টাকা লাগাতে হবে।
বিস্তারিত জানুনঃ