উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
.
হাদীসের আলোকে দোয়া কবুল হওয়ার কিছু মুহূর্ত রয়েছে,যেসব সময়ে দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়।
সেই মুহূর্তগুলো নিম্নরুপঃ
★জুমার দিন : শুক্রবার দোয়া কবুলের দিবস। জুমার দিন ইমাম খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বরে বসা থেকে নিয়ে নামাজ আদায় পর্যন্ত সময়ে দোয়া কবুল হয়। এভাবে আসরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় দোয়া কবুল হয়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘জুমার দিন এমন একটি মুহূর্ত আছে, যেই মুহূর্তে বান্দা যা প্রার্থনা করবে তিনি তাই দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪০০, মুসলিম, হাদিস : ১৪০৭)
ওলামায়ে কেরাম এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এই বিশেষ মুহূর্ত থেকে উপকৃত হতে মুমিন ব্যক্তির উচিত মাগরিবের আগে বেশি বেশি দোয়া ও ইস্তেগফার করা।
★হজের মৌসুমে : হজের মৌসুম তথা জিলহজের প্রথম দশকে ও আরাফার দিবসে দোয়া কবুল হয়। কারণ আরাফা ও জিলহজের প্রথম দশকের মাহাত্ম্য ও শ্রেষ্ঠত্ব অনেক বেশি। প্রিয়নবী (সা.) বলেন, ‘জিলহজের এ দশকে সম্পাদিত আমল থেকে আল্লাহর কাছে উত্তম কোনো আমল নেই। সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করেন, তাহলে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও কি নয়? তিনি বলেন, না, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে কোনো ব্যক্তি যদি জান-মাল নিয়ে আল্লাহর পথে বের হয় অতঃপর জিহাদের ময়দান থেকে কিছুই নিয়ে না ফিরে।’ (অর্থাৎ শহীদ হয়ে যায়, তাহলে সে ব্যক্তি ব্যতিক্রম) (মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস : ২০৯০)
★রমজান মাসে ইফতারের আগে: রমজান মাস অতি বরকতময়। রমজানে ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। এ ছাড়া আছে মহিমান্বিত কদর রজনী। এ রজনী হাজার রাত থেকে উত্তম। বরকতময় এ রজনীতে ফেরেশতারা বান্দার দোয়া আল্লাহর দরবারে নিয়ে যান।
★শেষ রাতে : শেষ রজনী দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্ত। কেননা এ সময় আল্লাহ দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, মহান আল্লাহ প্রতি রাতের শেষ প্রহরে (যখন রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকে) দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন। তিনি তখন বলেন, ‘আছ কি কোনো আহ্বানকারী? আমি তোমার ডাকে সাড়া দেব। কোনো প্রার্থনাকারী কি আছো, আমি তোমাকে যা চাও তা দেব? কেউ কি ক্ষমা প্রার্থনা করবে, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৫৮)
★আজান-ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে : এভাবে আজান-ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে দোয়া কবুল হয়। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। (তিরমিজি, হাদিস : ২১২)
★ফরজ নামাজের পর : হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! কোন সময়ের দোয়া দ্রুত কবুল হয়? তিনি উত্তর দিলেন, রাতের শেষ সময়ে এবং ফরজ নামাজের পর। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৯৮)
এ ছাড়া রোগাক্রান্ত অবস্থায়, বালামুসিবতের সময়, দূরবর্তী সফরের সময় ও মা-বাবার দোয়া কবুল হয় বলে হাদিসে এসেছে।
,
★★★উল্লেখ্য যে উপরে উল্লেখিত সময়ে দোয়া করার ক্ষেত্রেই দোয়া কবুল হওয়ার কথা হাদীস শরীফে এসেছে, দোয়া করার সময় হাঁচি আসলে দোয়া কবুল হয় মর্মে কোনো হাদীস নেই।
সুতরাং শরীয়তের আলোকে প্রশ্নে উল্লেখিত কথার কোনো ভিত্তি নেই।